”আজ বাংলা ভাষায় (Bengali Language) কথা বললে জেলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশি বলা হচ্ছে।” বুধবার ঝাড়গ্রামে ভাষা আন্দোলনের মঞ্চ থেকে গর্জে উঠলেন তৃণমূল সুপ্রিমো তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। বাংলাভাষায় কথা বললেই বাংলাদেশি, রোহিঙ্গা বলে দেগে দেওয়া হচ্ছে। রবীন্দ্র-নজরুল-বিদ্যাসাগরের ভাষাকে অসম্মান করা হচ্ছে। কিছুতেই বাংলা ভাষার অপমান, বাংলার অসম্মান বরদাস্ত করব না। সাফ জানিয়ে দিলেন, এনাফ ইজ এনাফ। আর সহ্য করব না বাংলার অসম্মান। এবার প্রতিবাদ-প্রতিরোধের পালা। বিজেপি নেতারা রাজ্যে এলেই ধিক্কার মিছিল হবে। সাধারণ মানুষের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা, কেউ ফোন করলেই জয় বাংলা বলবেন।
এদিন, ঝাড়গ্রামের (Jhargram) একলব্য মোড় থেকে তিন কিলোমিটার ভাষা-মিছিলের পর পাঁচ মাথার মোড়ের সভা থেকে গর্জে ওঠেন মমতা। বলেন, বাংলা ভাষায় (Bengali Language) কথা বললে ধরে নিয়ে যাচ্ছে, মারধর করছে বাংলার শ্রমিকদের। আমি জিজ্ঞেস করতে চাই রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগররা কোন ভাষায় কথা বলতেন। মনে রাখবেন বাংলা ছাড়া ভারতবর্ষ হয় না। বাংলা ছাড়া সারা বিশ্ব হয় না।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমি আবার বলছি, যাঁরা বাইরে আছেন, তাঁরা ফিরে আসুন। আপনাদের ফেরানোর দায়িত্ব আমাদের। আমরা আধখানা রুটি পেলে আপনারাও আধখানা পাবেন। ডবল ইঞ্জিন সরকারের কাছে মাথা নত করবেন না। আজকে যেভাবে অত্যাচার চলছে, স্বামী বিবেকানন্দ বেঁচে থাকলে বলতেন এই দেশ আমি চাইনি। এরপর মুখ্যমন্ত্রীর হুঙ্কার মানুষের মধ্যে ভেদাভেদ তৈরি করে অধিকার কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করল আমাদের বডি পেরিয়ে আপনাদের যেতে হবে। এই দেশটা আমাদের, তোমাদের একার নয়।
বিজপিকে একহাত নিয়ে তৃণমূল (TMC) সুপ্রিমো বলেন, স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় তোমরা কোথায় ছিলে? তখন তো তোমাদের জন্মই হয়নি। তুমি আজকে ক্ষমতায় আছো, কালকে থাকবে না। তখন কোথায় পালাবে। আমি গুজরাটিদের সম্মান করি, কিন্তু অপদার্থদের সম্মান করি না। যারা গুজরাটে বসে বাংলার মানুষের ভাত মারে তাদের সম্মান করি না। মনে রাখবেন চালাকির দ্বারা মহৎ কাজ হয় না। আগে নিজেরা মানুষ তৈরি হন তারপরে মানুষের কথা বলবেন।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, গুজরাতের লোকেদের কোমরের শেকল বেঁধে ট্রাম্প নিয়ে আসে, লজ্জা করে না তখন। বাংলা কি ভারতের বাইরে। আজ আমাদের বাংলায় যে দেড় কোটি শ্রমিক বাইরের কাজ করে। এখানে তাদের তো আমরা বাইরের লোক বলে ভাবি না। তাহলে বিজেপি-রাজ্যগুলি বাংলাকে বাংলার শ্রমিকদের বাইরের লোক বলে মনে করছেন। কেন বাংলার প্রতি আপনাদের এত বিদ্বেষ? আমরা এই দেশটাকে চিনি না, যে দেশটাকে চিনি সেটা হল, ঐক্যবদ্ধ ভারত। আমরা যে বাংলাকে চিনি, যে বাংলার মাটি-জল এক হওয়ার বার্তা দেয়। মনে রাখবেন, রোটি-কাপড়া-মাকান, এটাই আমাদের হিন্দুস্থান।
বিজেপিকে আক্রমণ করে মমতা বলেন, “আজকে জাগার পালা। প্রতিবাদ, প্রতিরোধ করার পালা। আমরা বলব না, আমাদেরই ভোট দিন। কিন্তু, আমরা প্রতিবাদ না করলে অসমের মতো ডিটেনশন ক্যাম্প তৈরি করবে।” এরপরই হুঙ্কার দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমি যেদিন নিজে মনে করব, সেদিন হঠাতে পারবেন। আমি যেদিন নিজে মনে করব না, সেদিন আপনার লোকেরাও আমাকে ভোট দেবেন। কারণ, তাঁদেরও আশ্রয় চাই। তাঁদেরও ঠিকানা চাই। এটা মাথায় রাখবেন।”
আরও খবর: অমিত শাহর দালালি করছে নির্বাচন কমিশন: তীব্র আক্রমণ মমতার, বেঁধে দিলেন স্লোগান
–
–
–
–
–
–
–
–