Saturday, August 23, 2025

ভোট চুরি হয়নি প্রমাণের মরিয়া চেষ্টা মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমারের। গোটা দেশে বিরোধীরা প্রমাণ করে দিয়েছে বিজেপি ও নির্বাচন কমিশনের ষড়যন্ত্রে কীভাবে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচন থেকে বিভিন্ন রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে ভুয়ো ভোটার ব্যবহার করা হয়েছিল। ২০ বছর পরে নিবিড় ভোটার তালিকা সংশোধনীর মধ্যে দিয়ে সেই ভুল সংশোধন করছে এখন নির্বাচন কমিশন। সেই সঙ্গে কোনও ভাবেই দ্রুততায় এই নিবিড় সংশোধনী (SIR) সম্ভব নয়, মেনে নিলেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার (Chief Election Commissioner)।

বিহার ভোটার তালিকা নিবিড় সংশোধনীর বিরোধিতায় মামলা সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court) পর্যন্ত গড়িয়েছে। ব্যাপক হারে ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া হলে কড়া হাতে ব্যবস্থা নেওয়ারও ইঙ্গিত দিয়েছে শীর্ষ আদালত। বিহারে ইতিমধ্যেই ৬৫ লক্ষ ভোটারের নাম বিভিন্ন কারণে বাদ দিয়েছে কমিশন। যেখানে ২০২৪ সালে লোকসভা নির্বাচন হয়েছে, তার এক বছরের মধ্যে ২২ লক্ষ ভোটার মৃত বলে ঘোষণা করা হয়েছে। সেই সঙ্গে পরিযায়ী (migrant) হওয়ার কারণে যে ৩৫ লক্ষ নাম এখন বাদ যাচ্ছে, সেই সব ভোটারকে তালিকাতেই (voter list) রেখে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচন করিয়েছিল বিজেপি, স্পষ্ট মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের কথায়।

লোকসভা নির্বাচনের পরে মহারাষ্ট্র, দিল্লি, হরিয়ানা, ঝাড়খণ্ডে যে বিধানসভা নির্বাচন হয়েছে তাতে ভোটার তালিকায় কারচুপির অভিযোগে প্রথম তথ্য তুলে ধরে সরব হয় বিরোধীরা। এরপরই নিবিড় সংশোধনীর সিদ্ধান্ত বলে দাবি মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমারের (Gyanesh Kumar)। সেখানেই প্রশ্ন তোলা হয়, তবে ২০২৫ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত যে সংশোধন হয়েছিল, তাতে কেন এত ভোটার বাদ পড়েনি। জ্ঞানেশ কুমারের দাবি, ২০ বছর পরে নিবিড় সংশোধনীতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার যাচাই করার পর এত নাম বাদ গিয়েছে বিহারে। এতদিন সাধারণ সংশোধন বা এসএসআর হওয়ায় এত ভুয়ো ভোটার রয়ে গিয়েছিল এতদিন তালিকায়।

এর আগে বিরোধীরা সুপ্রিম কোর্টেও দাবি করেছে, যে সময়ের মধ্যে এসআইআর সম্পূর্ণ করার দাবি করেছে নির্বাচন কমিশন, তা আদৌ কতটা সম্ভব তা নিয়ে। বিহার এসআইআর (Bihar SIR) নিয়ে সাংবাদিক বৈঠকে জ্ঞানেশ কুমার নিজের প্রশ্নের উত্তরেই দাবি করলেন, তাড়াহুড়ো করলে ভুল মানুষের নাম তালিকা থেকে বাদ চলে যাবে। একই এপিক নম্বর একাধিক ব্যক্তির থাকার যে সমস্যা তা সম্পূর্ণ সমাধান করা সম্ভব বলেই জানান নির্বাচন কমিশনার। তবে একই ব্যক্তির দুই জায়গায় ভোটার তালিকায় (voter list) নাম থাকলে কী সমাধান, তা নিয়ে নিরুত্তর কমিশন। দেশের মানুষ নিজেরাই আইন না ভেঙে দুই জায়াগায় ভোট দেবেন না – এমনই আজব তত্ত্ব শোনা যায় নির্বাচন কমিশনারের মুখে। সেখানেই বিরোধীদের প্রশ্ন, সেই ভুয়ো ভোটার তালিকায় নির্বাচন হওয়া ভোট চুরি নয় কেন?

আরও পড়ুন: বিবেক অগ্নিহোত্রীর সিনেমা বাংলার মানুষ প্রত্যাখ্যান করেছে 

এরপরেও যদিও ভোট চুরি তত্ত্ব একরকম গায়ের জোরে মানতে নারাজ নির্বাচন কমিশনার। উল্টে রাজনৈতিক দলগুলিকেই তিনি হুঁশিয়ারি দেন, বিহারের ভোটার তালিকা নিয়ে যাবতীয় অভিযোগ আগামী ১৫ দিনের মধ্যে দাখিল করার নির্দেশ দেন জ্ঞানেশ। অথচ বিহারের ভোটার তালিকায় নেপাল, বাংলাদেশ ও মায়ানমারের নাগরিকদের নাম থাকার অভিযোগ থাকায় বিপুল সংখ্যক নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। সেই সংখ্য়াও কত তা জানাতে ব্যর্থ নির্বাচন কমিশনার। যদিও সুপ্রিম কোর্টে ঘাড় ধাক্কা খাওয়ার পরে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার প্রকাশ্যে স্পষ্ট করে দেন, কোনও ভোটারের নাম তথ্য় পেশ করার অধিকার ছিনিয়ে নিয়ে বাদ দেওয়া হবে না।

Related articles

সঠিক পরিকল্পনাই ডায়মন্ডহারবারের সাফল্যের চাবিকাঠি, মনে করছেন আকাশ বন্দ্যোপাধ্যায়

মাত্র তিন বছরের ক্লাব। কিন্তু কী অসাধারণ সাফল্য। কলকাতা লিগ, আইলিগ থ্রি থেকে আইলিগ টু জিতে এবার আইলিগের...

অসংগঠিত শ্রমিক-ক্ষেত্রে পথ দেখাচ্ছে বাংলা: সাহায্য পেলেন ৭২০ শ্রমিক

একের পর এক নতুন প্রকল্প, অসংগঠিত শ্রমিকদের দাবিদাওয়া নিয়ে লাগাতার আলোচনা, তাঁদের পরিবারের প্রতি নজর রাখার ব্যাপারে তৎপর...

প্রাপ্য চায় বাংলা, উপহার না: মোদিকে জবাব তৃণমূলের

বাংলার মানুষ উপহার চায় না, প্রাপ্য চায়। উপহার দিয়ে বাংলার মানুষকে অপমান করবেন না। বাংলায় বরাদ্দ নিয়ে শুক্রবার...

অনুপ্রবেশ ঠেকাতে ব্যর্থ শাহ, শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা মোদির: কটাক্ষ তৃণমূলের

অনুপ্রবেশ ইস্যুকে বার বার জাগিয়ে তুলে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার আদতে নিজেদের ভুল নিজেরাই চোখ আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়।...
Exit mobile version