রাজ্যপালরা অনন্তকাল ধরে বিল আটকে রাখতে পারেন না। সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) প্রধান বিচারপতি বি আর গাভাই, বিক্রম নাথ ও পিএস নরসিমা পৃথকভাবে জানিয়েছেন, রাজ্যপালরা অনির্দিষ্টকালের জন্য বিল আটকে রাখতে পারবেন না। অযথা বিলম্বিত করে সংবিধানের কার্যকারিতা ব্যাহত করতে পারবেন না। মঙ্গলবার পাঁচ বিচারকের মধ্যে তিনজন পশ্চিমবঙ্গ ও তামিলনাড়ুর বিল (Bill) সংক্রান্ত অভিযোগ পর্যবেক্ষণ করে একথা জানিয়েছেন।

এদিন তামিলনাড়ুর পক্ষে আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি এবং পি উইলসন বলেন, প্রজাতন্ত্রে রাজ্যপালরা (Governor) নিজেদের রাজপরিবারের সদস্য হিসেবে ধরে নিতে পারেন না। পশ্চিমবঙ্গের পক্ষে আইনজীবী কপিল সিবালের যুক্তি, সংবিধান অনুযায়ী রাজ্যপালদের উচিত রাজ্যের সঙ্গে সহযোগিতা করা। যখন সংবিধান স্পষ্ট করে বলে দিয়েছে যে, একজন রাজ্যপালের তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত, তখন তিনি কেন বিলগুলি আটকে রাখবেন? আইন প্রণয়ন একটি সার্বভৌম সিদ্ধান্ত। তার জন্য অনন্তকাল অপেক্ষা চলতে পারে না।

কেন্দ্রের যুক্তি ছিল ২০০ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাজ্যপালদের বিল আটকে রাখার পূর্ণ ক্ষমতা রয়েছে। তার পাল্টা কপিল সিবাল বলেন, রাজ্যপালের বিলম্ব সাংবিধানিক পরিকল্পনাকে ব্যর্থ করে দেয়। রাজ্যপালকে এই ধরনের অযৌক্তিক ক্ষমতা দিলে ভারতের ভবিষ্যৎ ঝুঁকির মুখে পড়বে। উল্লেখ্য, রাজ্যপাল এবং রাষ্ট্রপতির কাছে বিল আটকে থাকার নির্ধারিত সময়সীমা নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় মে মাসের একটি মামলার শুনানি করছে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। গত ৮ এপ্রিল তামিলনাড়ুর রাজ্যপালের মামলায় সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) দুই বিচারপতির বেঞ্চ এই রায় দিয়েছিল। ২০২০ সাল থেকে ১০টি রাজ্য বিলের সম্মতিতে বিলম্বিত হওয়ার ফল ভুগছে।

রায়ে বলা হয়েছিল, যদি বিলগুলি তিন মাসের বেশি আটকে রাখা হয়, তবে সেগুলি সম্মতি পেয়ে যাবে এবং আইনে পরিণত হয়েছে বলে বিবেচিত হবে। বিচারপতি নাথ এই মর্মে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, নির্ধারিত তিন মাসের সময়সীমা সংক্রান্ত রায় যদি রাষ্ট্রপতি বা রাজ্যপালরা অনুসরণ না করেন তবে কী হবে? তবে কি সংবিধান সংশোধন করতে হবে? বিচারপতি নরসিংহ বলেন, প্রতিটি মামলার বিশেষ তথ্য এবং পরিস্থিতি বিবেচনা করে পৃথক মামলায় সময়সীমা নির্ধারণ করা যেতে পারে। প্রধান বিচারপতি গাভাই বলেন, বিভিন্ন বিল কার্যকর করার সময় বিভিন্ন জরুরি অবস্থা বিবেচনা করে সময় নির্ধারণ করা উচিত। তা বলে অনন্তকাল আটকে রাখা যেতে পারে না।
