অভিজিৎ ঘোষ
অনির্বাণ ভট্টাচার্যর গানটা বড্ড আঁতে লেগেছে সিপিএমের শতরূপ ঘোষের (shatarup ghosh)। আঁতে লেগেছে বললে ভুল হবে ‘ প্রাণের ভিতর দিয়ে মরমে পশিল গো/ আকুল করিল মোর প্রাণ’… ভিতরটা জ্বলিয়ে দিয়েছে। তাই নিজে না নেমে চামচাদের নামিয়ে দিয়েছেন কমব্যাট করার জন্য। কিন্তু পাল্টাটা এতটাই নিম্নমানের এবং রুচিসম্মতহীন যে পরিস্কার বোঝা গিয়েছে সিপিএম দলটা কোথায় দাঁড়িয়ে রয়েছে। কেন তারা শূন্য তা আর ব্যাখ্যা করার প্রয়োজন নেই।

২২ লাখি গাড়ির শতরূপকে (shatarup ghosh) নিয়ে দুকলি গান গেয়েছেন অনির্বাণ। শুধু তো শতরূপ নয়, কুণাল ঘোষ, দিলীপ ঘোষকে নিয়েও দু’-চার লাইন গেয়েছেন। দিলীপ টুঁ শব্দটি করেননি। কুণাল ভিডিও পোস্ট করে স্বাগত জানিয়েছেন এই শ্লেষের। কিন্তু শতরূপের সইল না। যদিও প্রথমে প্রকাশ্যে বলেছিলেন, তাঁর নাম গানে উঠে আসায় তিনি যারপরনাই খুশি। কিন্তু সেটা যে কথার কথা, ভিতরে যে ব্যাপক জ্বলুনি চলছিল, সেটা দলের এক চামচাকে দিয়ে পালটা একটা গান পোস্ট করে বুঝিয়ে দিলেন।

কী রয়েছে সেই গানে? পঙ্কজ কুমার ভাদুড়ি নামে একজনের পোস্টে দেখা যাচ্ছে গিটার বাজিয়ে গান গাইছেন শতরূপ আর তার এক সঙ্গী। ওদের দুজনের গান গাওয়ার দৃশ্য দেখানো হয়েছে, কিন্তু ব্যাক গ্রাউন্ডে গাইছেন অন্য কেউ। কী সেই গান? শতরূপ আর তার দলবল যে কথাগুলি বলছিলেন, সেই কথাই গানের কলিতে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, চাকরি, আরজি করের ছাত্রী মৃত্যু সহ তাদের মনমতো ইস্যুগুলো কেন নেই সেই প্রশ্ন তোলা হয়েছে। গানের মাঝে আবার অনির্বাণকে নকল করে ‘ভাই ভাই’ও বলা হয়েছে। কালীঘাটকে সমঝে চলছে বলেও বক্রোক্তি করা হয়েছে।

প্রশ্ন এক, ভাই শতরূপ, প্রতিবাদ করলে প্রকাশ্যে করতে পারতেন। অন্য লোককে নামাতে হল কেন? নাচতে নেমে ঘোমটা কেন? এটুকু সৎসাহস আশা করা কি অন্যায়?

আরও পড়ুন- আগামী সপ্তাহেই সব রাজ্যের CEO-দের নিয়ে রাজধানীতে বৈঠক নির্বাচন কমিশনের!

দুই, গানটি অতীব জঘন্য। অন্যকে নকল করে যেটি পরিবেশন করা হয়েছে, সেটা একটা চতুর্থ শ্রেণির গান। অর্ধেক কথা বোঝা যায় না, ধরে নিতে হয়। এই অখাদ্য বিষয়টি পরিবেশন করে নিজেদের হাস্যস্পদ করা কি একান্তই প্রয়োজন ছিল?

তিন, একজন গায়ক কোনও একটি বিষয় নিয়ে গান লিখবেন এবং গাইবেন, সেটা একান্তই তার বিষয়। শতরূপ বলে দেবেন আর সেই ভাষায় গাইবেন, এটা আবার কোন দেশের ফরমান। আসলে এটা শতরূপের দোষ নয়, দোষ ওর দলের। ৩৪ বছর ক্ষমতায় থাকার সময় এভাবেই ওরা শিল্পীদের নিয়ন্ত্রণ করতে চেয়েছে। এইভাবেই বাম জমানায় ঊষা উত্থুপ, আঁধারের গান, মহীনে ঘোড়াগুলির গানগুলির কণ্ঠরোধ করার চেষ্টা করেছে। এখন খোলা হাওয়া, তাই বড্ড গায়ে লাগছে। অভ্যাস নেই তো!
ভাই শতরূপ, আপনারা আসলে টিভির বিপ্লবী। চ্যানেল আর পোর্টালগুলো না থাকলে আপনাদের কে চিনত? কিন্তু অনির্বাণকে কমব্যাট করতে গিয়ে যে ফসলটি ফলিয়েছেন, সেটা আসলে অক্ষমের বাতিল অস্ত্র। কারওর পিছনে লাগতে গেলেও একটা স্ট্যান্ডার্ড বা মানের প্রয়োজন হয়। চামচা নামিয়ে নিজেদের এতো বিলো স্ট্যান্ডার্ড বানানোর কি একান্তই প্রয়োজন ছিল?
ভাই শতরূপ!!!

পুনশ্চ: প্রতিবেদন প্রকাশ করার সঙ্গে সঙ্গে ভিডিও ডিলিট করা হয়েছে। দেওয়া হল স্ক্রিনশট।