বাংলার দুর্গাপুজো কত বড় শিল্পের সৃষ্টি করে, তার নিদর্শন গত কয়েক বছরে, বিশেষত করোনা পরিবর্তী সময়ে আরও ভালোভাবে টের পেয়েছে বাংলার প্রত্যন্ত এলাকা থেকে শহর কলকাতার মানুষ। শিল্পের অন্তত দশটি ক্ষেত্রে বিপুল কর্মসংস্থানের পাশাপাশি অর্থনীতির সংবহন সম্ভব হয়। শুধুমাত্র পুজোর মাস নয়। আগের ও পরের কয়েকমাস জুড়ে তা বজায় থাকে। বাংলার সেই সম্ভাবনার কথা বুঝেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) বাংলায় দুর্গাপুজোকে উৎসাহ দিতে বারোয়ারি পুজো কমিটিগুলিকে সরকারি সাহায্যের ঘোষণা করেছেন। এবং বারবার বিরোধীদের কুৎসা সত্ত্বেও সেই অনুদান সচল রেখেছেন। তার জেরেই এবারের দুর্গাপুজোয় (Durgapuja 2025) বাংলায় ১ লক্ষ কোটি টাকার ব্যবসা হওয়ার সম্ভাবনা প্রকাশ্যে এসেছে বিভিন্ন সংগঠন সূত্রে।
দুর্গাপুজোর উৎসবে সবথেকে বড় যে ব্যবসার ক্ষেত্র তা দুর্গাপুজোগুলিকে কেন্দ্র করে। কয়েক মাস আগে থেকে শহর কলকাতায় জেলা ও প্রত্যন্ত এলাকা থেকে শিল্পীরা এসে মণ্ডপ সজ্জা ও থিমের কাজে যুক্ত হন। তবে এখন জেলা শহরগুলিও পিছিয়ে নেই। সেখানেও কলকাতা থেকে শিল্পীরা প্রায় এক মাস আগে থেকে মণ্ডপ সজ্জার কাজ করেন। একদিকে প্রতিমা তৈরিতে অন্তত তিন মাস আগে জেগে ওঠে কুমোরটুলি। জেলা শহর ও গ্রামাঞ্চলের মৃৎশিল্পীরাও অন্তত দুর্গাপুজোর সময়টা বড় রোজগারের আশায় থাকেন। এবছর সেই পুজোর সংখ্যা ৪৩ হাজার থেকে বেড়ে ৪৫ হাজার আনুমানিক। ফলে সেই পুজোর মণ্ডপ ও প্রতিমাকে কেন্দ্র করে উপার্যন কতটা বাড়বে শিল্পীদের, তা বলাই বাহুল্য।
এর পাশাপাশি একটা বড় অংশ রয়েছে পুজোর খাওয়া দাওয়া এবং পোশাক। গত দুর্গাপুজোয় পোষাক শিল্পে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকার বাণিজ্য হয়েছিল। এবার পোশাক ও বার এবং রেস্তোরাঁগুলিতে সেই ব্যবসা ১ হাজার ১০০ কোটির সম্ভাবনার ইঙ্গিত বণিক মহলের।
এ বছর বণিক মহলের হিসাব অনুযায়ী দুর্গাপুজোয় বাংলার অর্থনীতিতে যুক্ত হবে ১ লক্ষ কোটির। গত বছর যে হিসাবটা ছিল প্রায় ৮০ হাজার কোটির। এর মধ্যে পুজো মন্ডপ, পোশাক, খাবারের ব্যবসার পাশাপাশি ঢাকি থেকে বিভিন্ন বাদ্যকর, চর্ম ও জুতো শিল্পী, পরিবহন এবং রূপটান শিল্পীরাও রয়েছেন।
আরও পড়ুন: মেঘ ভাঙা বৃষ্টির পরে ফুঁসছে টনস নদী: ভেসে গেল শ্রমিকরা, ড্রোনের সাহায্যে উদ্ধার অসহায়কে
পারিপার্শ্বিক বাণিজ্য ছাড়া শুধুমাত্র বাংলা প্রত্যন্ত এলাকার বারোয়ারি পুজো মণ্ডপ, প্রতিমা মিলিয়ে বাণিজ্যটা প্রায় ৭৮ হাজার কোটি হবে, অনুমান ফোরাম ফোর দুর্গোৎসব-এর। আর এর পিছনে একটা বড় অবদান রয়েছে রাজ্য সরকারের পুজোর অনুদান বৃদ্ধি, জানাচ্ছে ফোরামের সদস্যরা। যার ফলে শুধুমাত্র কলকাতাতে পুজো কেন্দ্রিক ব্যবসা ২৫ হাজার কোটি হওয়ার সম্ভাবনার কথা জানাচ্ছেন তাঁরা।
–
–
–
–
