রাজ্যের স্বীকৃতির দাবি লাদাখ জানিয়েছে ২০১৯ সাল থেকে। রাজ্যের স্বীকৃতি তো দূরের কথা, পাহাড়ের দুর্গম লাদাখকে ষষ্ঠ তফশিলের অন্তর্গত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েও রাখেননি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। নিজেদের দাবির সপক্ষে লাদাখের (Ladakh) বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষ লাগাতার প্রায় ছয় মাস অনশন, পায়ে হেঁটে দিল্লি যাত্রার পরও প্রতিশ্রুতি পূরণে একধাপও এগোয়নি কেন্দ্রের বিজেপি। প্রবল বিক্ষোভে বুধবার লাদাখের লেহ (Leh) শহরে বিজেপির সদর দফতরে (BJP party office) আগুন লাগিয়ে দিল লাদাখের বিক্ষুব্ধ যুব সমাজ। এই ঘটনার পরই ১৫ দিন ধরে অনশন করতে থাকা সোনম ওয়াংচু (Sonam Wangchuk) যুব সমাজকে বিক্ষোভের পথ থেকে সরে আসার অনুরোধ জানান।

২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে লাদাখ থেকে পদযাত্রা করে রাজধানী দিল্লিতে গিয়েছিলেন লাদাখের বাসিন্দারা। দীর্ঘ আন্দোলনের পরে দিল্লিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের আধিকারিকরা দেখা করেন তাঁদের সঙ্গে। তখনই প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়, লাদাখের সমস্যা নিয়ে দ্রুত আলোচনায় বসবেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের (MHA) আধিকারিকরা। জানুয়ারি মাসে সেই প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পর পেরিয়েছে দীর্ঘ নয় মাস। লেহ অ্যাপেক্স বডির (LAB) সঙ্গে কোনও যোগাযোগ তো দূরের কথা, আন্দোলনের সামনে থাকা পরিবেশ কর্মী সোনম ওয়াংচু-র বিশ্ববিদ্য়ালয়ের বিরুদ্ধে এজেন্সি প্রয়োগ শুরু করে কেন্দ্রের স্বৈরাচারী মোদি সরকার।

দিল্লি পদযাত্রার বর্ষপূর্তিতে ফের রাজ্যের স্বীকৃতির দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন লাদাখের মানুষ। ১৫ লাদাখবাসীকে নিয়ে অনশন শুরু করেন সোনম ওয়াংচু। রবিবার অনশকারী দুই লাদাখি অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়। প্রতিবাদে মঙ্গলবার অনশনের ১৫তম দিনে লেহ শহরে আন্দোলনের ডাক দিয়েছিল লেহ অ্যাপেক্স বডি। লাদাখের সব রাজনৈতিক ও ধর্মীয় সংগঠন একসঙ্গে বনধ ডেকে আন্দোলন শুরু করে। সেই আন্দোলন প্রতিবাদ থেকেই অশান্তি ছড়ায় লেহ শহরের বিজেপি সদর দফতরের বাইরে।

যদিও পুলিশ বা আন্দোলনকারীদের তরফ থেকে স্পষ্ট করা হয়নি কীভাবে আন্দোলন থেকে আগুন লাগানোর পরিস্থিতি তৈরি হল। আগুন লাগানো হয় একটি পুলিশের গাড়িতেও। তবে আন্দোলন যাতে কোনওভাবেই হিংসাত্মক না হয়, তার জন্য অনুরোধ জানান সোনম ওয়াংচু (Sonam Wangchuk)। এমনকি তিনি দাবি করেন, যদি আন্দোলন এভাবে হিংসাত্মক পথ নেয় তবে তিনি অনশন তুলে নেবেন। সেই সঙ্গে প্রশাসনকেও সহানুভূতির সঙ্গে আন্দোলনকারীদের দাবি শোনার অনুরোধ জানান।

আরও পড়ুন: ভেঙে পড়ল বিরাট জলের দেওয়াল! টাইফুনে লণ্ডভণ্ড হংকং

সোনম ও তাঁর অনুগামীসহ লাদাখের মানুষ অনশন শুরু করার পর পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যেতে পারে আশঙ্কা করেছিলেন অমিত শাহ। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের হাই পাওয়ার কমিটি ২০ সেপ্টেম্বর লেহ অ্যাপেক্স বডির সঙ্গে আলোচনায় বসার প্রস্তাব পেশ করেন। কিন্তু এক বছর অপেক্ষা করার পরে ফের একবার আলোচনা করে লাদাখের রাজ্যের স্বীকৃতি নিয়ে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের উদ্দেশ্য প্রণোদিত সময় নষ্টের দাবিতে সাড়া দেননি সোনম ও তাঁর অনুগামীরা। তাঁরা বৈঠকের প্রস্তাব নাকচ করেন। তাঁদের স্পষ্ট দাবি ছিল আলোচনা ছাড়াই এবার রাজ্যের স্বীকৃতি দিতে হবে লাদাখকে। এরই মধ্যে দুই অনশনকারী অসুস্থ হয়ে পড়ায় মঙ্গলবার বিক্ষোভ আগুন লাগানোর পরিস্থিতিতে যায়।

–

–

–

–