বিজেপির বিরোধিতা করলেই তারা দেশদ্রোহী। বারবার দেশের একাধিক রাজনীতিককে জেলে ভরে তারপরে তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সাজিয়ে তা প্রমাণ করার স্বৈরাচারী মোদি সরকারের চেষ্টা আজ নতুন নয়। তবে এবার মুখ বন্ধ করতে সেই দমননীতি প্রয়োগ করা হল লাদাখের (Ladakh) পরিবেশকর্মী সোনম ওয়াংচুর (Sonam Wangchuk) বিরুদ্ধেও! গ্রেফতার করার ২৪ ঘণ্টা পরে পুলিশ জানালো পাকিস্তানে তার খবর সম্প্রচারিত হয়েছে। পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে সোনম ওয়াংচুর যোগ রয়েছে। সেখানেই না কি প্রমাণ মিলছে সোনম ওয়াংচু দেশদ্রোহী (anti-national)।

অথচ যে চারটি নিরীহ প্রাণ লেহ (Leh) শহরে চলে গিয়েছে, তার কোনও বিচার আজও দিতে পারেনি কেন্দ্রের মোদি সরকার। এবার তা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন লাদাখের প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ। লাদাখ কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসাবে ঘোষিত হওয়ার পরে যে সেরিং নামগিয়েলকে বিজেপি, বিশেষত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি অত্যন্ত বেছে সাংসদ করেছিলেন, সেই নামগিয়েলই এবার প্রশ্ন তুললে লাদাখের নিরীহ, নিরস্ত্র বিক্ষোভকারীদের উপর গুলি চালানোর ঘটনায়।

লাদাখের লেফটেন্যান্ট গভর্নর কবিন্দর গুপ্তাকে একটি চিঠি লেখেন প্রাক্তন সাংসদ নামগিয়েল। তিনি দাবি করেন, আইন ভেঙে বিক্ষোভ দেখানো যদি অন্যায় হয়, তবে নিরস্ত্র মানুষের উপর গুলি চালালে প্রশাসনের উপর থেকে বিশ্বাস সরে যায় সাধারণ মানুষের। সেই সঙ্গে মৃত্যু ও আহত হওয়ার ঘটনায় পূর্ণাঙ্গ তদন্ত দাবি করেন প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ। প্রশাসনের কাছে গুলিতে মৃতদের পরিবার ও আহতদের আর্থিক সাহায্যের দাবি করেন তিনি।

এরপরেও নিজেদের হাতে লাগা রক্তের দায় এবার সোনম ওয়াংচুর ঘাড়েই চাপাতে তৎপর লাদাখ পুলিশ তথা কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। গ্রেফতারির ২৪ ঘণ্টারও বেশি পরে মুখ খুলেছেন লাদাখের ডিজিপি। তিনি দাবি করেন, সম্প্রতি পুলিশ একজন পাকিস্তানের আধিকারিককে গ্রেফতার করেছে। সেই আধিকারিক সোনম ওয়াংচুর (Sonam Wangchuk) আন্দোলনের ভিডিও পাকিস্তানে পাঠিয়েছিলেন, এমন প্রমাণ আমরা পেয়েছি। তিনি পাকিস্তানের পত্রিকা ‘ডন’ আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন। ঠিক সেরকমই বাংলাদেশেও গিয়েছিলেন তিনি।

আরও পড়ুন: ভারতে ধর্মীয় নিপীড়নে রাষ্ট্রসঙ্ঘে সরব শাহবাজ: পাল্টা পাক সন্ত্রাসবাদ হাতিয়ার মোদির

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক ইতিমধ্যেই জাতীয় নিরাপত্তা আইনে গ্রেফতার করে রাজস্থানে পাঠিয়ে দিয়েছে সোনম ওয়াংচুকে। পাছে গ্রেফতারির জালিয়াতি প্রকাশ্যে এসে পড়ে, তার জন্যই রাতারাতি লাদাখ থেকে সোনমের রাজস্থান পাড়ি, আশঙ্কা রাজনীতিকদের। এরপর লাদাখ পুলিশ প্রকাশ করল, কীভাবে গ্রেফতারির পরে অভিযোগ সাজানোর রাজনীতি চালিয়ে এসেছে স্বৈরাচারী মোদি সরকার।

–

–

–

–