বিনোদন জগত (Entertainment industry) সত্যি বড় তাড়াতাড়ি রং বদলায়। ‘আজ যে রাজা, কাল সে ফকির’ কথাটা বোধহয় লাইট-ক্যামেরা-অ্যাকশনের জগতের সবথেকে বড় সত্যি। কেউ দামি গাড়ি আর বিলাসবহুল বাড়িতে রাজার হালে রয়েছেন, আবার কেউ নামী সুপারস্টারদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এক ফ্রেমে অভিনয় করেও আজ সামান্য ওষুধ খরচার জন্য অন্যের সাহায্যপ্রার্থী। কথা হচ্ছে অভিনেতা তুহিন বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Veteran actor Tuhin Banerjee )। ঝুলিতে ১৩০টি ছবি। ধারাবাহিকের সংখ্যাও কম নয়। তরুণ মজুমদারের পাঁচটি ছবির অভিনেতা তিনি। দেবশ্রী রায়ের (Debashree Roy) বিপরীতে নায়কের ভূমিকায় হিন্দি ধারাবাহিকি কাজ করার পরও আজ এগারো বছর ধরে তিনি কর্মহীন। তাঁর একটাই আর্তি, “দয়া করে কাজের দুনিয়া ফিরিয়ে দিন”।

১৯৮৬ সালে ‘পথভোলা’ সিনেমায় প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় (Prosenjit Chatterjee), তাপস পাল, অভিষেক চট্টোপাধ্যায়, শক্তি ঠাকুর আর তুহিন বন্দ্যোপাধ্যায় অভিনয় করেছিলেন। ৬৫ বছরের বর্ষীয়ান অভিনেতার কথায়, “তাপস, অভিষেক, শক্তিদা চিরবিদায় নিয়েছেন। বুম্বা ১০০ বছর বাঁচবে। এ বার হয়তো আমার পালা।” কিছুদিন আগে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের জন্য হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল তরুণ মজুমদারের প্রিয় এই অভিনেতাকে। রক্ত চলাচল ব্যাহত হওয়ায় তাঁর দুই পায়ে গ্যাংগ্রিন। কোনমতে অপারেশন করে দুটো পা বাঁচানো গেছে। উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হৃদরোগের সমস্যা তো রয়েইছে। হাতে কাজ নেই প্রায় একযুগ হতে চলল অথচ মাসে ওষুধের খরচ প্রায় কুড়ি হাজার টাকার কাছাকাছি। স্ত্রী পুত্রকে নিয়ে বর্ধমানে থাকে তিনি। একমাত্র সন্তান ছোটখাটো ব্যবসা করায় কোনমতে সংসার চলে একসময়ে দাপিয়ে কাজ করা বাংলা সিনেমার অভিনেতার।তুহিনবাবুর আক্ষেপ, “প্রত্যেক মাসে ওষুধের খরচ ২০ হাজার টাকা। আমার কোনও আয় নেই। গত দু’বছর ধরে তাই ওষুধ খেতে পারছি না। চিকিৎসকেরা বকাবকি করছেন। কিন্তু কী করব!” ভাস্বর চট্টোপাধ্যায় সম্প্রতি সমাজমাধ্যমে তুহিনবাবুর হয়ে সহযোগিতা প্রার্থনা করেছেন। তাতে সামান্য কিছু সাড়া মিলেছে বটে, কিন্তু তাতে চিকিৎসার খরচ উঠবে না। তাই কাজের জগতে ফিরতে চান বর্ষীয়ান অভিনেতা। আবেগঘন কণ্ঠে বারবার সেই অনুরোধ করছেন। কিন্তু গ্ল্যামারস টলিউড কি তাঁর কথা শুনতে পাচ্ছে? উত্তরের আশায় তীর্থের কাকের মতো অপেক্ষা করে চলেছেন অভিনেতা তুহিন বন্দ্যোপাধ্যায়।

–

–

–

–

–

–

–

–
–