Saturday, November 15, 2025

চন্দননগর নয়! কোথা থেকে সূচনা বাংলায় জগদ্ধাত্রী পুজোর? জানুন ইতিহাস 

Date:

জগদ্ধাত্রী পুজোর নাম উঠলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে গঙ্গাপাড়ের শহর চন্দননগরের ছবি—চোখধাঁধানো আলোকসজ্জা, সুবিশাল প্রতিমা আর অসংখ্য দর্শনার্থীর ঢল। কিন্তু ইতিহাসের পাতা উল্টালে দেখা যায়, এই পুজোর গোড়াপত্তন আসলে হয়েছিল নদিয়ার কৃষ্ণনগরে, রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের হাত ধরে। জগদ্ধাত্রী পুজোর বিস্তারিত ইতিহাস তুলে ধরলেন কৃষ্ণনগর বউবাজার বারোয়ারী কমিটির সম্পাদক অনুপম পাল। সঙ্গে তুলে ধরলেন মা মহেশ্বরী জগদ্ধাত্রী পুজোর ইতিহাসও।

ইংরেজ শাসনের সময়ে নবাব মিরকাশিম যখন বিদ্রোহ দমন করতে গিয়ে ব্রিটিশপন্থী রাজাদের বন্দি করেছিলেন, সেই তালিকায় ছিলেন কৃষ্ণনগরের রাজা কৃষ্ণচন্দ্র ও তাঁর পুত্রও। বন্দিদশা থেকে মুক্তি পেয়ে কৃষ্ণচন্দ্র জানতে পারেন, দুর্গাপুজো ইতিমধ্যেই শেষ। মন খারাপ হয়ে যায় তাঁর। সেই সময়ই কথিত আছে, দেবী স্বপ্নে দেখা দিয়ে তাঁকে জগদ্ধাত্রী রূপে পুজোর নির্দেশ দেন। দেবীর আদেশ অনুযায়ী রাজা শুরু করেন এই নতুন পুজো, যা পরবর্তীকালে কৃষ্ণনগর রাজবাড়ির চার দেওয়াল পেরিয়ে শহরজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। ইতিহাসবিদদের মতে, ১৭৬৩-৬৪ সালের দিকেই জলঙ্গী পাড়ে প্রথম জগদ্ধাত্রী পুজো শুরু হয়।

অন্যদিকে চন্দননগরে জগদ্ধাত্রী পুজো শুরু হয় কিছু বছর পর। ঐতিহাসিক সূত্রে জানা যায়, কৃষ্ণচন্দ্রের ঘনিষ্ঠ ফরাসি দেওয়ান ইন্দ্রনারায়ণ রায় তাঁর নিজের বাড়িতে দেবীর পুজো শুরু করেন। আরেকটি মত অনুযায়ী, কৃষ্ণচন্দ্রের দেওয়ান দাতারামের বিধবা কন্যা ভদ্রেশ্বরের তেঁতুলতলায় রাজার অনুমতি নিয়ে প্রথম পুজোর সূচনা করেন। সেই পারিবারিক পুজোই পরে সর্বজনীন হয়ে ওঠে। আজ সেই চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পুজোই রাজ্যজোড়া খ্যাতি পেয়েছে। কারণ শুধু দেবী আরাধনা নয়, এখানে পুজো মানে আলোর উৎসব। আলোকসজ্জার জগৎখ্যাত নৈপুণ্য, রঙিন ঝলক আর শিল্পসম্মত প্রতিমা—সব মিলিয়ে চন্দননগরের পুজো এখন আন্তর্জাতিক আকর্ষণের কেন্দ্র। তবুও ইতিহাস বলছে, জগদ্ধাত্রী পুজোর প্রথম আলোর শিখা জ্বেলেছিল কৃষ্ণনগরের রাজবাড়িতেই। সেই ঐতিহ্যের উত্তরসূরি আজও গর্বের সঙ্গে বলে—জগদ্ধাত্রী পুজো জন্মেছিল নদিয়ার মাটিতেই।

অন্যদিকে কৃষ্ণনগর বউবাজার এলাকার মা মহেশ্বরী জগদ্ধাত্রী পুজোর ইতিহাস প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে তিনি বলেন যেহেতু মা জগদ্ধাত্রী মহাদেবের অর্ধাঙ্গিনী সেইখান থেকেই নাম এসেছে মা মহেশ্বরী। রাজবাড়ীর প্রথা আজও অপরিবর্তিত রেখেই পুজো হয়। রথের দিন হয় কাঠামোপুজো। জলঙ্গী নদীর মাটি এনে শুরু হয় প্রতিমা নির্মাণের কাজ। প্রথামতই পুজো এখানে একদিনই। অঞ্জলি দেওয়া থেকে বিনামূল্যে প্রসাদ বিতরণ চলে সেদিন। দশমীতে বেয়ারাদের কাঁধে চেপে মায়ের বিসর্জন হয়।

আরও পড়ুন – নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে সহজ জয়, কোন অঙ্কে বিশ্বকাপের সেমিতে ভারত?

_

 

_

 

_

 

_

 

_

 

_

Related articles

আদিবাসী নেতা বিরসা মুন্ডার জন্মের সার্ধশতবর্ষপূর্তিতে সোশ্যাল মিডিয়ায় শ্রদ্ধা মুখ্যমন্ত্রীর

ইতিহাসের পাতায় মাতৃভূমির বীর পুত্র এবং কন্যাদের জন্ম প্রতিনিয়ত ভারতের চেতনার প্রকাশ ঘটিয়েছে। ভগবান বিরসা মুন্ডা নক্ষত্রমণ্ডলের অন্যতম...

দক্ষিণেশ্বর স্টেশনের কাছে সিগন্যালিংয়ের কাজ, ব্লু লাইনে মেট্রো চলছে বরাহনগর পর্যন্ত

সকাল সকাল ব্যাহত মেট্রো পরিষেবা (Metro Service Interrupted)। মেট্রো চলছে শহিদ ক্ষুদিরাম থেকে বরাহনগর পর্যন্ত। ব্লু লাইনে দক্ষিণেশ্বর...

শীতের অনুভূতিতে বাধা, কার্তিকের শেষ লগ্নে চড়বে পারদ জানালো হাওয়া অফিস

ভোররাত থেকে সকাল পর্যন্ত রাজ্যজুড়ে চলতে থাকার শীতের আমেজে এবার সাময়িক বিরাম। আলিপুর হাওয়া অফিস (Alipore Weather Department)...

লালকেল্লার কাছে বিস্ফোরণ কাণ্ডে উত্তর দিনাজপুর থেকে গ্রেফতার মেডিক্যাল ছাত্র!

দিল্লির লালকেল্লার কাছে গাড়ি বিস্ফোরণের (Delhi Blast near Red fort) ঘটনায় এবার উত্তর দিনাজপুরের (North Dinajpur) সূর্যাপুর বাজার...
Exit mobile version