কোথাও নেই বিদ্যুৎ সরবরাহ। বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে যোগাযোগ। জলের তলায় বিস্তীর্ণ এলাকা। জামাইকার প্রশাসন গোটা দেশকে বিপর্যস্ত ঘোষণা করেছে। প্রবল শক্তিশালী হারিকেন মেলিসা (Hurricane Melissa) ল্যান্ডফল (landfall) করার প্রায় ৮-৯ ঘণ্টা পেরিয়ে যাওয়ার পরও ক্ষতক্ষতির পরিমাপই শুরু করা সম্ভব হয়নি। অন্তত সাতজনের মৃত্যুর (death) খবর পাওয়া গিয়েছে। প্রবল বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়ায় উদ্ধারকাজ শুরু করতেও বাধা পেতে হচ্ছে দেশের প্রশাসনকে।

বুধবার ভারতীয় সময়ের মধ্যরাতে জামাইকায় (Jamaica) ল্যান্ডফল করে হারিকেন মেলিসা। ল্যান্ডফলের সময় গতি ছিল ঘণ্টা প্রতি ২৯৫ কিমি। মার্কিন হারিকেন পরিমাপক সংস্থার হিসাব অনুসারে তাই এই হারিকেনকে চতুর্থ ক্যাটাগরির হারিকেনের (Hurricane-4) তালিকায় ফেলা হয়েছে। জামাইকার ১৭৪ বছরের ইতিহাসে একে সবথেকে বেশি শক্তিশালী বলে উল্লেখ করা হয়েছে আবহাওয়া দফতরের তরফ থেকে।

শুধুমাত্র ঝড়ের দাপট নয়, মেলিসার দরুণ সমুদ্রে প্রবল জলোচ্ছ্বাস (tidal wave) দেখা গিয়েছে। অন্তত ১৩ ফুট উঁচু জলোচ্ছ্বাস দেখা যায়। মেলিসা ভূখণ্ডে প্রবেশের সময়ই মৃত্যু হয়েছে অন্তত তিন জনের। গাছ কাটতে গিয়ে গাছে চাপা পড়ে ও বিদ্যুস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে তাঁদের। জামাইকা স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, হাইতি (Haiti) ও ডমিনিকা রিপাব্লিকে (Dominica Republic) আরও অন্তত চারজনের মৃত্যু হয়েছে। তবে ঝড় সম্পূর্ণ না থামলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাপ করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী অ্যান্ড্রু হলনেস (Andrew Holness)।

ঝড়ের পূর্বাভাসেই প্রায় ৫ লক্ষ মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। ঝড়ে সাধারণ মানুষের বসতি থেকে যোগাযোগ ব্যবস্থা, হাসপাতাল সবই বিপর্যস্ত দ্বীপরাষ্ট্রে। পাহাড় ঘেরা দেশে প্রবল বৃষ্টি ও জলোচ্ছ্বাসে বহু জায়গায় ব্যাপক ধস (landslide) নেমেছে।

আরও পড়ুন: শক্তি খুইয়ে মন্থা এখন গভীর নিম্নচাপ, ৩ মৃত্যুর পরও জারি প্রবল বৃষ্টি

হারিকেন মেলিসা জামাইকার প্রবীণ বাসিন্দাদের মনে ফিরিয়ে এনেছে হারিকেন গিলবার্টের (Hurricane Gilbert) স্মৃতি। ১৯৮৮ সালের এই হারিকেনে মৃত্যু হয়েছিল ৩১৮ জনের। ঝড়, জলোচ্ছ্বাসের পাশাপাশি দেশের নদীগুলি যেভাবে ফুলেফেঁপে উঠেছে তাতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়ার আশঙ্কা। ইতিমধ্যেই দেশের অন্যতম শষ্য উৎপাদক অঞ্চল সেন্ট এলিজাবেথে ফসলের ক্ষতির দাবি করেছেন স্থানীয়রা।

–

–

–
–


