বাংলায় সিএএ হতে দেবেন না। সদর্পে ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কারণ সিএএ-র হাত ধরেই আসবে এনআরসি (NRC), ভারতীয় নাগরিকদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার বিজেপির খেলা। সেই পরিস্থিতিতে বাংলার মানুষের নাগরিকত্ব কেড়ে নিতে দেননি বাংলার মুখ্য়মন্ত্রী। কিন্তু নির্বাচন কমিশন এসআইআর (SIR) শুরু করতেই সেই সিএএ-র খেলায় মেতেছে রাজ্য বিজেপির নেতারা। সিএএ ক্যাম্প করে মানুষকে ভাঁওতা দিয়ে নাগরিকত্ব (citizenship) কেড়ে নেওয়ার খেলার দিকে ঠেলে দিচ্ছে তারা। আর এবার সামনে এলো সিএএ ক্যাম্প (CAA camp) করে বিজেপির নেতাদের টাকার খেলা। তথ্য তুলে ধরে রাজ্যের সাধারণ নাগরিক থেকে মতুয়াদের এই খেলায় পা দেওয়া থেকে সাবধান করছে বাংলার শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস।

সম্প্রতি রাজ্যের বিজেপি নেতাদের মধ্যে হিড়িক পড়ে গিয়েছে সিএএ ক্যাম্প করার। আদতে যে তাঁরা বাংলার নাগরিকদের নাগরিকত্ব দিতে এই ক্যাম্প পরিচালনা করছেন না তা স্পষ্ট হয়ে গেল উত্তর চব্বিশ পরগণায় সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের (Santanu Thakur) সিএএ ক্যাম্প থেকে। যেখানে টাকা দিয়ে নাগরিকত্বের নিশ্চয়তা দিচ্ছেন খোদ কেন্দ্রের মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর। সাধারণ মতুয়া নাগরিকদের থেকে ফর্ম ফিলাপে সহযোগিতার জন্য আদায় করা হচ্ছে ২০ টাকা। তবে তার থেকেও আশ্চর্যজনক, সম্পূর্ণ সিএএ ফর্ম (CAA form) ফিলাপ ও জমার প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতে নেওয়া হচ্ছে ৮০০ টাকা। আর এই ৮০০ টাকাটি দিলে নাগরিকত্ব (citizenship) নিশ্চিত। যেন কোনও আইন, প্রমাণ বা নথির প্রয়োজনই হবে না, শান্তনু ঠাকুর (Santanu Thakur) নিজের জমিদারি থেকে নাগরিকত্ব দিয়ে দেবেন মতুয়াদের।

গত দুই মাস ধরে, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে ঠাকুরনগরে মতুয়া মহাসংঘের অফিস কার্যকলাপের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। মূলত মতুয়া সম্প্রদায়কে লক্ষ্য করে – দলিত হিন্দুদের একটি বিশাল গোষ্ঠী যারা কয়েক দশক আগে বাংলাদেশ থেকে চলে এসেছিল এবং দীর্ঘদিন ধরে নাগরিকত্ব এবং পরিচয় সংক্রান্ত সমস্যায় ভুগছিল – বিজেপি সম্ভাব্য সিএএ সুবিধাভোগীদের একত্রিত করার প্রচেষ্টা জোরদার করছে। এ মাসের শুরুতে, দলটি রাজ্য জুড়ে ৭০০ টিরও বেশি সিএএ সহায়তা শিবির স্থাপনের পরিকল্পনা করেছে। এর মধ্যে অনেকগুলি ঠাকুরনগর, গাইঘাটা, হাবড়া এবং পালপাড়ায় রয়েছে। এই অঞ্চলগুলিতে মতুয়া সম্প্রদায়ের ভোটের প্রভাব রয়েছে ব্যাপক।

বিজেপির জমিদারদের এই চক্রান্ত ফাঁস করে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সহ-সভাপতি সুদীপ রাহা দাবি করেন, মতুয়াদের নিয়ে রাজনীতির বিজেপি বরাবর করেছে। এবার তো মতুয়াদের নিয়ে রীতিমত ব্যবসা করছে। এই ক্যাম্পগুলির মাথায় কোথাও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর, রয়েছেন তাঁর ভাই বিধায়ক সুব্রত ঠাকুর (Subrata Thakur), বিধায়ক অসীম সরকার (Ashim Sarkar)। প্রত্যেকটা ক্যাম্পে বিজেপির জমিদাররা নেতৃত্ব দিচ্ছেন। বলছেন তোমরা যদি ক্যাম্পে টাকা দাও তাহলে খুব সহজেই নাগরিকত্ব পেয়ে যাবে।

আরও পড়ুন: বাদ যাবে এক কোটি মতুয়ার নাম! অনশনের হুঁশিয়ারি সাংসদ মমতাবালা ঠাকুরের

সেই সঙ্গে মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষকে সাবধান করে সুদীপের বক্তব্য, মতুয়াদের ভুল বোঝানো। তাদের বিপদের দিনে তাদের ভয় দেখিয়ে, নাগরিকত্ব পাইয়ে দেওয়ার লোভ দেখিয়ে নিজেদের পকেট ভরো। বাংলা বিরোধী বিজেপি শুধু বাংলাকে শোষণ করে খান্ত থাকছে না। এবার মতুয়াদের ব্যবহার করছে নিজেদের পকেট ভরাতে। এর থেকে প্রমাণ হয় সিএএ (CAA) আইন নিয়ে ছেলেখেলা করছে বিজেপি। বিজেপি নেতারা দিকে দিকে নিজেদের পকেট ভরানোর খেলায় নেমেছে। প্ররোচনায় পা দেবেন না। বিজেপি আপনাদের নিয়ে যে ঘৃণ্য রাজনীতি, ব্যবসা করছে বিজেপির জমিদাররা, সেই বিজেপির জমিদারদের মুখোশ খুলে দিই।

–

–

–

–

