জাতীয় সঙ্গীত নিয়ে রচয়িতা রবীন্দ্রনাথকে পরিকল্পিত অপমানের বিরুদ্ধে গর্জে উঠল বাংলার শাসকদল তৃণমূল। শুক্রবার, তৃণমূল ভবন থেকে সাংবাদিক বৈঠক করে কর্নাটকের বিজেপি (BJP) সাংসদ বিশ্বেশ্বর কাগেরির পদত্যাগ দাবি করেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী তথা তৃণমূল (TMC) নেতা-নেত্রী ব্রাত্য বসু (Bratya Basu) ও শশী পাঁজা (Shashi Panja)। ঐতিহাসিক তথ্য দিয়ে ব্রাত্য বুঝিয়ে দেন, কোনও প্রেক্ষিতে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (Rabindranath Tagore) “জন-গণ-মন” রচনা করেছিলেন এবং কোন সময় সেটি প্রথম গাওয়া হয়। কর্নাটকের সাংসদের এই ন্যাক্কারজনক মন্তব্য ইতিহাস না জানা বিজেপির রবীন্দ্রনাথকে অপমান করার পরিকল্পিত চক্রান্ত বলে অভিযোগ ব্রাত্যর। এই মন্তব্যের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা ও বিশ্বেশ্বর কাগেরির পদত্যাগ দাবি করেন শশী পাঁজা।

হন্নাভরে ‘বন্দে মাতরম’-এর ১৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে কর্নাটকের (Karnataka) বিজেপি সাংসদ বিশ্বেশ্বর কাগেরি (BJP MP Vishveshwara Kageri) বলেন, ‘জন গণ মন’ নাকি লেখা হয়েছিল ব্রিটিশদের তোষণের জন্য! বিজেপি সাংসদের কথায়, “‘জন গণ মন’ তখন রচিত হয়েছিল ব্রিটিশ অফিসারকে স্বাগত জানানোর জন্য।” তাঁর আরও দাবি, জন-গণ-মন সঙ্গীতের পরিবর্তে বন্দেমাতরমকে (Vande Mataram) ভারতের জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে বেছে নেওয়া উচিত ছিল। এই ভুয়ো তথ্যের বিরুদ্দে গর্জে উঠল তৃণমূল।

এদিন, ব্রাত্য বসু জানান, “পঞ্চম জর্জের আসার সঙ্গে এই গানের কোনও সম্পর্ক নেই। বিজেপি মিথ্যাকে আমাদের খাইয়ে দিতে চাইছে!” তথ্য তুলে ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, “পুজোর সময় তো মুখ্যমন্ত্রীর লেখা অনেক গান প্রকাশিত হয়। সেই সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পুজো উদ্বোধনে কলকাতায় আসেন। তার মানে কি ওনাকে স্বাগত জানাতে গান লিখেছেন মুখ্যমন্ত্রী?”

শশী পাঁজা বিজেপিকে কটাক্ষ করে বলেন, রবীন্দ্রনাথকে (Rabindranath Tagore) অপমান মানে বাংলা ও বাঙালিকে এই অপমান। এর জন্য বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব ক্ষমা চাইবেন কি? কর্নাটকের (Karnataka) বিজেপির পদত্যাগ দাবি করেন শশী।
আরও খবর: “জন-গণ-মন” নিয়ে রবি ঠাকুরকে অপমান বিজেপি সাংসদের! ক্ষমা চাওয়ার দাবি কুণালদের

তীব্র নিন্দা করে ব্রাত্য বলেন, “বঙ্গিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ও রবীন্দ্রনাথের মধ্যে বিভেদ তৈরির চেষ্টা চলছে এটা বিজেপির কৌশল। রবীন্দ্রনাথকে ছোট প্রমাণ করার চেষ্টা হচ্ছে। বাঙালি এটা মানবে না। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই।” ব্রাত্যর কথায়, দুই কালজয়ী বাঙালি বঙ্কিম ও রবীন্দ্রনাথ একে অপরের প্রতি অত্যন্ত শ্রদ্ধাশীল ছিলেন। বন্দে মাতরম স্বয়ং গেয়েছিল রবি ঠাকুর। শশী-ব্রাত্য দুজনেই জানান, বন্দে মাতরমের ১৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ইতিমধ্যেই উদ্যোগ নিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। গড়া হয়েছে কমিটি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগেই বঙ্কিমচন্দ্রের বাড়ি সংস্কার করে বঙ্কিম ভবন তৈরি হয়েছে।

–

–

–

–

–


