গুজরাট। হরিয়ানা। দেশের মানুষের নিরাপত্তার পরিস্থিতি ঠিক কেমন, তা ফের প্রমাণিত হল। বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে বসেই নিরাপদে ভারতে গণহত্যার ষড়যন্ত্র চালাচ্ছিল জঙ্গিরা। বিস্ফোরণে উড়িয়ে দেওয়াই শুধু নয়। ভিড় বাজারে খাবারের মধ্যে বিষ প্রয়োগ করে গণহত্যার ষড়যন্ত্রও করা হচ্ছিল খোদ প্রধানমন্ত্রীর রাজ্যে বসে। বাদ যায়নি বিজেপি শাসিত হরিয়ানাও। চিকিৎসকের পরিচয়ের আড়ালে দিল্লিতে বসে অস্ত্র ও বিস্ফোরক সরবরাহ করার অভিযোগে গ্রেফতার দুই জম্মু ও কাশ্মীরের জঙ্গি।

গুজরাট এটিএস তদন্ত চালিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য পেশ করেছে। একটি নয়। দুটি পদ্ধতিতে ভারতে নাশকতার ছক কষেছিল জঙ্গিরা। তাদের মদত দিচ্ছিল ভারতের বাসিন্দা, জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যুক্তরাই। তার মধ্যে রয়েছেন চিকিৎসকও। হায়দ্রাবাদের বাসিন্দা সৈয়দ আহমেদ মহিউদ্দিনকে গ্রেফতার করা হয় রবিবার। তিনি দিল্লি, আহমেদাবাদ, লক্ষ্ণৌয়ের বাজার এলাকায় রেকি করেছিলেন। তৈরি করছিলেন ক্যাস্টর গাছের প্রোটিন থেকে তৈরি রাইজিন, যা মানুষের শরীরে বিষের কাজ করে। মহিউদ্দিনের ডাক্তারি ডিগ্রিটি চিনের।

অন্যদিকে গ্রেফতার করা হয়েছে উত্তরপ্রদেশের দুই বাসিন্দাকে। মহম্মদ সুহেল ও আজাদ নামে দুই জঙ্গি আদতে উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা। তাদের থেকে সেমি অটোমেটিক পিস্তল বাজেয়াপ্ত করা হয়। এই দুজন আল কায়দার সঙ্গে যুক্ত বলে সন্দেহ প্রকাশ করে গুজরাট এটিএস।

আশ্চর্যজনকভাবে তিন জঙ্গির কাজের ধরন দুরকমে। জঙ্গিরা দুটি মডিউলে কাজ করছিল বলে দাবি গুজরাট পুলিশের। তবে কাজ চালানোর জন্য নিরাপদ জায়গা হিসাবে তারা গুজরাটকেই বেছে নিয়েছিল। প্রায় ছয়মাস ধরে গুজরাটে বসেই তারা নিজেদের কাজে লিপ্ত ছিল। তা সত্ত্বেও নজর এড়িয়ে গিয়েছিল প্রধানমন্ত্রীর রাজ্যের পুলিশের।

অন্যদিকে, জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ লাগাতার তল্লাশি ও তদন্ত চালাচ্ছে নিজেদের রাজ্যে। সেই সূত্রেই এবার তল্লাশি চালানো হয় হরিয়ানার ফরিদাবাদে। সেখানে তল্লাশিতে চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশিত হয়। দুই চিকিৎসককে গ্রেফতার করে জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ। আদিল আহমদ রাথের নামের ওই চিকিৎসক বিভিন্ন এলাকায় অস্ত্র সরবরাহের কাজ করতেন বলে দাবি পুলিশের। চিকিৎসক হিসাবে তিনি ফরিদাবাদে কাজও করতেন।

আরও পড়ুন: কাশ্মীরে সরকারি হাসপাতালে জঙ্গি যোগ! চিকিৎসকের লকার থেকে উদ্ধার আগ্নেয়াস্ত্র

তাঁর সূত্রেই জানা যায় আরও এক চিকিৎসকের কথা – মুজাম্মিল সাকিল। তার ডেরা থেকে ৩৫০ কেজি অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট উদ্ধার হয়েছে। সাকিলকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশের অনুমান, রাজধানীর খুব কাছে ফরিদাবাদে (Faridabad) বসে রাজধানীতেই নাশকতার ছক কষছিল এই চিকিৎসক ও তাঁর সহকারী সংগঠন। সম্প্রতিই কোনও নাশকতার আশঙ্কা করছে জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ (Jammu and Kashmir Police)। কারণ এই ডেরা থেকে ওয়াকিটকি, পিস্তল, ২০টি টাইমারও পাওয়া গিয়েছে।

–

–

–


