আজব-কাণ্ড। প্রমাণিত এই এসআইআর-লজ্জা! এ এমনই এসআইআর যে, নাম নেই দেশের সংবিধান-প্রণেতা কমিটির সদস্যের উত্তরাধিকারীদেরই। এমনকী তাঁর বাড়িটিকেই হাপিশ করে দেওয়া হয়েছে। যিনি কাজ করেছেন সংবিধান প্রণেতা বাবাসাহেব অম্বেদকরের সঙ্গে, সেই সারদাচরণ চন্দের পরিবারের সদস্যদেরই প্রমাণ দিতে হবে তাঁরা দেশের নাগরিক কি না? হায় রে এসআইআর? এই পরিস্থিতিতে গর্জে উঠছেন সারদাচরণের উত্তরাধিকারীরা। তাঁদের সোজাসাপটা বক্তব্য, আগে প্রমাণ করুন আমরা ভারতীয় নাগরিক নই, তারপর আমরা দেশের নাগরিকত্বের প্রমাণ দেব!

রায়সাহেব সারদাচরণ চন্দ। সংবিধানপ্রণেতা-কমিটির সদস্য। বাড়ি রাসবিহারী বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত কালীঘাটের ৮ নম্বর ধর্মদাস রোডে। এখানেই এসআইআর পড়ল বড় রকম লজ্জার সামনে। নির্বাচন কমিশনের আপলোড করা ২০০২-এর ভোটার তালিকায় নাম নেই সারদাচরণ চন্দের পরিবারের কারও! পুরো বাড়িকেই বাদের খাতায় ফেলে দিল নির্বাচন কমিশন! গোটা বাড়িটারই কোনও অস্তিত্ব নেই। ১৯৩৭ সালের বাড়ি। তারপর থেকেই পরিবারের সদস্যরা এখানে আছেন। স্বাধীনতার পর থেকে ২০২৪ লোকসভা নির্বাচন পর্যন্ত প্রতিটি সাধারণ নির্বাচনে পরিবারের সমস্ত সদস্য ভোট দিয়েছেন। শুধু কি ভারতীয় সংবিধান রচয়িতা কোর কমিটি টিমের মেম্বারের বাড়ি এটা, সারদাচরণের পুত্র অধ্যাপক মণীন্দ্রচন্দ্র চন্দ প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়, প্রাক্তন কেন্দ্রীয়মন্ত্রী প্রিয়রঞ্জন দাসমুন্সি, প্রাক্তন সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্যদের শিক্ষক। আইনের বিখ্যাত অধ্যাপক এই বাড়িতেই পড়াতেন তাঁদের। অথচ, ২০০২-এর তালিকায় নাম খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না তাঁর।

সম্প্রতি প্রতিবেশীদের বাড়িতে বিএলও এসেছিলেন। কিন্তু চন্দ বাড়িতে আসছে না দেখে বিএলও-র সঙ্গে যোগাযোগ করেন তাঁরা। তারপরই জানতে পারেন, এই বাড়ির কারওর নামই নেই তালিকায়! স্বাধীনতার ৭৮ বছর পরে দেশের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতির মাস্টার মশাইয়ের পরিবারকে নতুন করে প্রমাণ করতে হবে, তাঁরা ভারতীয়? পরিবারের বর্তমান সদস্য কৌশিক চন্দের দিদিমা সুধরানি দত্ত বাঁকুড়ার ওন্দা বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক ছিলেন। দাদু ডক্টর সন্মথ দত্ত মোহনবাগান ফুটবল দলের অধিনায়ক হিসেবে প্রথমবার দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে গিয়েছিলেন। স্বভাবতই লজ্জার এই এসআইআর নিয়ে অভিমানী চন্দ পরিবার।

আরও পড়ুন- ভোটার তালিকার স্বচ্ছতা যাচাইয়ে আগামী সপ্তাহে রাজ্যে কমিশনের প্রতিনিধি দল

_

_

_

_

_

_
_


