পাঁচ দফা দাবিকে সামনে রেখে শনিবার শিলিগুড়িতে অনুষ্ঠিত হল বাংলা পক্ষের মহামিছিল। বাঙালি জাতীয়তাবাদী এই সংগঠনের ডাকে হাজার হাজার মানুষ—বাঙালি ও বিভিন্ন ভূমিপুত্র জনজাতির প্রতিনিধিরা যোগ দেন মিছিলে। বিকেল সাড়ে চারটের সময় উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের সামনে থেকে মিছিল শুরু হয়ে শেষ হয় বিধান মার্কেট সংলগ্ন অটোস্ট্যান্ডে।

এই মিছিলের মূল দাবি পাঁচটি—
১. শিলিগুড়িকে কেন্দ্র করে লোকাল ট্রেন পরিষেবা
২. জলপাইগুড়ির দোমোহিনীতে দ্বিতীয় AIIMS
৩. নেপাল সীমান্ত সিল করা
৪. উত্তরবঙ্গে উন্নতমানের সরকারি হাসপাতাল স্থাপন
৫. সাম্প্রতিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত জেলার জন্য কেন্দ্রের আর্থিক ক্ষতিপূরণ

মিছিলে নেতৃত্ব দেন বাংলা পক্ষের সাধারণ সম্পাদক গর্গ চট্টোপাধ্যায়। উদ্যোগে ছিলেন শিলিগুড়ির জেলা সম্পাদক গিরিধারী রায়। উপস্থিত ছিলেন সাংগঠনিক সম্পাদক কৌশিক মাইতি, শীর্ষ পরিষদের সদস্য রজত ভট্টাচার্য ও মহ সাহীন, উত্তর–দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলা সম্পাদক এবং সংগঠনের শীর্ষ নেতৃত্ব। উত্তরের রাজবংশী, রাভা-সহ একাধিক ভূমিজ জাতির প্রতিনিধিদের উপস্থিতি রাজনৈতিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। বাংলা পক্ষের দাবি, উত্তরবঙ্গের বঞ্চনার প্রশ্নে বাঙালি ও স্থানীয় জনজাতির ঐক্যই তাদের আন্দোলনের মূল শক্তি।

মিছিল শেষে বক্তব্য রাখতে গিয়ে গর্গ চট্টোপাধ্যায় বলেন, উত্তরবঙ্গের উন্নয়ন ইস্যু যখন রাজনৈতিকভাবে চর্চিত, তখন এলাকার সাংসদ ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের ভূমিকা প্রশ্নের মুখে। তাঁর বক্তব্য, বিহার ও উত্তরপ্রদেশে দুটি করে AIIMS থাকলে পশ্চিমবঙ্গে দ্বিতীয় AIIMS কেন হবে না—এই প্রশ্নই তাঁরা তুলছেন। নেপাল সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশ রুখতে কেন্দ্রীয় সরকারের নিষ্ক্রিয়তারও তিনি সমালোচনা করেন। সাংগঠনিক সম্পাদক কৌশিক মাইতি বলেন, দিল্লির বঞ্চনা যেমন তুলে ধরা হবে, তেমনি রাজ্যের কাছেও দাবি থাকবে শিলিগুড়ি বা জলপাইগুড়িতে পিজি হাসপাতালের সমমানের পরিকাঠামো গড়ার। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে থাকলেও কেন্দ্রীয় সাহায্যের অভাবকে তিনি কঠোর ভাষায় সমালোচনা করেন।

শীর্ষ পরিষদের সদস্য রজত ভট্টাচার্য বলেন, বাঙালি এবং উত্তরবঙ্গের ভূমিজ জাতির মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি করেই রাজনৈতিক সুবিধা নিতে চাইছে একাধিক দল। বাংলা পক্ষ সেই বিভাজনকে ভেঙে দিয়ে এক পতাকার নীচে মানুষকে একত্রিত করছে বলে তাঁর দাবি। জেলা সম্পাদক গিরিধারী রায়ের কথায়, শিলিগুড়ি–জলপাইগুড়ির উন্নয়নের দাবি দীর্ঘদিনের। এতদিন নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির বাইরে এই দাবিগুলো রয়ে গেছে। বাংলা পক্ষের আন্দোলনে শিলিগুড়ির ভবিষ্যৎকে কেন্দ্র করে নতুন জোয়ার দেখা যাচ্ছে। SIR–এর আবহে মিছিলে একাধিক স্লোগান ওঠে, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য—“দুই রাজ্যে ভোট যাদের, বাংলা থেকে তাড়াও তাদের।” সংগঠনের দাবি, রাজ্যে দু’জায়গায় ভোটার কার্ড থাকা ব্যক্তিদের ভোটাধিকার বাতিলের দাবি তুলে তারা জনমত তৈরি করছে।


_

_

_

_
_


