ক্রিকেট কার্ণিভালের শহরে ফুটবলের কিংবদন্তি। কলকাতায় ঝটিকা কলকাতা সফরে জার্মানির বিশ্বকাপজয়ী ফুটবল অধিনায়ক লোথার ম্যাথাউজ(Lothar Matthaus)। দিনভর ঠাসা কর্মসূচি। বিশ্বকাপজয়ী দেশথেকে এসেছেন, কিন্ত ভারতীয় ফুটবল সম্পর্কে খোঁজ খবর একটু হলেও রাখেন ম্যাথাউজ। কীভাবে ভারতীয় ফুটবলের উন্নতি হবে, সেটা নিয়েও নিজের মূল্যবান মতামত দিলেন জার্মান কিংবদন্তি।

তাঁর বক্তব্য, ধাপে ধাপে পরিকল্পনামাফিক এগোতে হবে ভারতকে ১৩৬য়ের বর্তমান র্যাঙ্কিং ছেড়ে ওপরে উঠতে। রাতারাতি বিশ্বকাপে খেলবে ভারত, এটা ভাবা ভুল। আগামী ৪ বছরে খেলবে এটা ভাবা অলীক কল্পনা, তবে মনে করি সঠিক পথে এগোলে ৮ থেকে ১২ বছর বাদে ভারত বিশ্বকাপে খেলতে পারে। তার জন্য ভারতের ঘরোয়া ফুটবলকে আরও শক্তিশালী ও প্রতিযোগিতামূলক করতে হবে। একইসঙ্গে আন্তর্জাতিক স্তরে নিজেদের অভিজ্ঞতা অর্জন।একইসঙ্গে সরকারকেও এগিয়ে আসতে হবে। সরকারের সাহায্য ছাড়া ফুটবল বা কোনও খেলাধুলার উন্নতি সম্ভব নয়।

আগামী মাসে শুরু হচ্ছে বেঙ্গল সুপার লিগ। এই লিগ প্রসঙ্গে জার্মানির বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক বলেন, তৃণমূল স্তরে সব সময়ই জোর দিতে হবে। কোথাও একটা শুরু করতে হবে। এখান থেকেই নতুন ফুটবলার উঠে আসতে পারে। আমি এই লিগের দিকে নজর রাখব। আমি আবার জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসে আসব।

মেসি না মারাদোনা? কে সেরা? এই প্রশ্নের উত্তরে বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক কিছুটা ভারসাম্য বজায় রাখলেন। ম্যাথুউজ বললেন, আমাদের সময়ে অবশ্যই মারাদোনা সেরা। আর এখন ২০ বছর ধরে বিশ্ব ফুটবলে দাপট দেখাচ্ছেন মেসি। ‘আমার সময়ে ফুটবল আর এখন সময়ের ফুটবলের মধ্যে তফাৎ। আমার আর মারাদোনার মধ্যে মাঠে শত্রুতা থাকলেও, মাঠের বাইরে আমরা ভাল বন্ধু ছিলাম। আমার সময়ে মারাদোনা সেরা ছিল। এখন বিগত কুড়ি বছর ধরে মেসি বিশ্ব ফুটবলকে শাসন করছে। আমি মেসির ফ্যান। মেসিই সেরা।’

আইএসএলে প্রোমোশন-রেলিগেশন নেই। ভারতীয় ফুটবলের উন্নতি কি তাতে সম্ভব? লোথারের উত্তর, ‘আমেরিকাতেও প্রোমোশন-রেলিগেশন নেই। পুরোটাই দেশের ফুটবল ফেডারেশনের উপর নির্ভর করে তারআ কিভাবে চালাতে চায়। তবে আমার মনে হয় ভাল প্রতিযোগিতার জন্য প্রমোশন, রেলিগেশন পদ্ধতি দরকার।’

সেরা হওয়ার জন্য বিশ্বকাপ মাপকাঠি নয় সেরা ফুটবলারের জন্য এই বিষয়ে রোনাল্ডোর সঙ্গে একমত ম্যাথুউজ। তাঁর কথায়, একা কেউ বিশ্বকাপ জেতাতে পারে না। ভালো দল দরকার।

বেঙ্গল সুপার লিগের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর। সাউথ সিটি ইন্টারন্যাশানাল স্কুলের ফুটবল ক্লিনিক ও সাংবাদিক সম্মেলনে ম্যাথাউসের সঙ্গে হাজির ছিলেন জার্মানির কনসাল জেনারেল বারবারা ভস, সাউথ সিটি ইন্টারন্যাশানাল স্কুলের ডিরেক্টার রবি টোডি, শ্রাচি স্পোর্টসের চেয়ারম্যান তমাল ঘোষাল। রবিবারের সকালে খুদে ফুটবলারদের সঙ্গে ঘণ্টাখানেক সময় কাটালেন। শেখালেন ফুটবলের পাঠ। লোথার ম্যাথাউজের মাস্টারক্লাসে হাজির ১৫০ থেকে ২০০ শিক্ষার্থী। অটোগ্রাফ দিয়ে আবদারও মেটালেন ৬৪ বছরের বিশ্বকাপজয়ী প্রাক্তন তারকা।

–

–

–


