SIR একটি রাজনৈতিক গণহত্যা। কেন্দ্রীয় সরকার এর মাধ্যমে অধিকাংশ মানুষকে বঞ্চিত করছে তাঁদের মৌলিক রাজনৈতিক অধিকার থেকে। শনিবার এসআইআরের বিরুদ্ধে সুর চড়ালেন অর্থনীতিবিদ পরাকল প্রভাকর (Parakala Prabhakar)। তাঁর আরেকটি পরিচয় তিনি কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমনের স্বামী। তাঁর মতে, এসআইআর এমন একটি ব্যবস্থা যার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। সাধারণ মানুষ কোনও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নিতে পারবে না— এটাই SIR-এর মূল উদ্দেশ্য। তাঁর কথায়, যেখানে সাধারণ মানুষ সরকারকে নির্বাচিত করে, এসআইআরের ক্ষেত্রে হচ্ছে উল্টো। সরকার মানুষকে নির্বাচন করছে। এটা দেশের সাংবিধানিক গুরুত্বকে নষ্ট করছে। SIR নিয়ে শনিবার সাংবাদিক বৈঠক করে ‘দেশ বাঁচাও গণমঞ্চ’। পরাকল প্রভাকর ছাড়াও ছিলেন সমাজকর্মী যোগেন্দ্র যাদব, রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু, অধ্যাপক ওমপ্রকাশ মিশ্র, অধ্যাপক সৈয়দ তানবীর নাসরিন, সাংবাদিক রন্তিদেব সেনগুপ্ত-সহ বিশিষ্টরা। 

এর আগেও কেন্দ্রের মোদি সরকারের বিভিন্ন কাজের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছিলেন নির্মলার স্বামী প্রভাকর। এদিন তিনি সাফ জানান, কেউ যদি মারা গিয়ে থাকে, কিংবা কারও যদি নথিতে গরমিল থাকে, কেউ অসত্য তথ্য দিয়ে থাকে তাহলে তালিকা থেকে বের করে দেওয়া হোক। কিন্তু যাঁরা বৈধ ভোটার তাঁদের অহেতুক নাজেহাল করার মানে দেশের গণতান্ত্রিক ভারসাম্য নষ্ট করা।

পূর্ণেন্দু বসু (Purnandu Basu) বলেন, সাংবিধানিকভাবে বড়লোক গরিব- সকলেরই ভোটাধিকার রয়েছে। ভোটারের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন থাকলে তা আগে কমিশনকে প্রমাণ করতে হত। এখন সেটা সাধারণ মানুষের ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কমিশনকে হাতিয়ার করে বিজেপি বাংলা দখলের চেষ্টা করছে। 

প্রাক্তন মন্ত্রী প্রশ্ন তোলেন, বিরোধী দলনেতা বলছে, দু কোটি মুসলমান এখানে আছে। তিনি কোথা থেকে সে-তথ্য পেলেন তা আমাদের বলতে হবে। তাহলে কি এখানে এসআইআরের নামে বকলমে এনআরসি চলছে?

গণমঞ্চের বক্তব্য, ভোটার তালিকা সংশোধনের নামে ভিনরাজ্য থেকে যেসব ব্যক্তিকে ডুপ্লিকেট এপিক কার্ড বা ভোটার কার্ড বানিয়ে ভোটে কারচুপি করার কুমতলবে বিহার ও পশ্চিমবঙ্গের ভোটার তালিকায় ঢোকানো হচ্ছে তাদের ভোটার তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে।

কিছুতেই পশ্চিমবঙ্গে ভোটার তালিকা সংশোধনের নামে রোহিঙ্গা, অনুপ্রবেশকারী, বাংলাদেশি সন্দেহে বৈধ ভোটার বাতিল করা যাবে না। গুজরাত, উত্তরপ্রদেশের মানুষদের নামে ভুয়ো এপিক কার্ড বানিয়ে পশ্চিমবঙ্গের ভোটার তালিকায় যোগ করা যাবে না।

তাঁদের সাফ কথা, যদি শুধুমাত্র ভোটে কারচুপি করে ভোট জেতানোর জন্য বিজেপির প্ররোচনায় নির্বাচন কমিশন এসআইআর প্রকল্পের মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গের মানুষের নাগরিকত্ব কেড়ে নিতে চায়, তাহলে বাংলার মানুষ প্রতিবাদে বারবার রাস্তায় নামবে।

–

–

–


