বাস্তবে তারা থাক বা না থাক, কিন্তু সুকুমার সাহিত্যে তাদের অবাধ বিচরণ। ‘ট্যাঁশ গরু’ কিংবা ‘কুমড়োপটাশ’দের চেনে না এমন বাঙালি শুধু নয়, বাংলার সাহিত্য অনুরাগী কাউকেই খুঁজে পাওয়া যাবে না। কিন্তু এতদিন এদের দিকে নজর পড়েনি কেন্দ্র সরকারের। হুঁকোমুখো হ্যাংলা থেকে শুরু করে হাঁসজারু ও তার সঙ্গীরা তাই কোনদিনই কেন্দ্রীয় প্রচারের স্পটলাইট পায়নি। সামনে বঙ্গে ভোট, তাই বাঙালি আবেগে সুড়সুড়ি দিতে মেকি বাঙালিয়ানার পিরিত দেখানো শুরু বাংলা বিরোধী বিজেপি সরকারের। সম্ভবত এই প্রথম সুকুমার রায়ের সৃষ্ট চরিত্রগুলো নিয়ে একটি পিকচার পোস্টকার্ডের সেট প্রকাশ করল কেন্দ্র। একই সঙ্গে তাঁকে নিয়ে প্রকাশিত হয়েছে একটি ক্যানসেলেশন স্ট্যাম্পও।

১০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে সুকুমারের ‘আবোল তাবোল’ জগতের নেশায় বুঁদ বাঙালি। বয়স যতই বেড়ে যাক না কেন ‘হট্টমুলা’ গাছে ঝুলতে থাকা বেঢপ চেহারার জন্তুর খোঁজ মাঝেমধ্যেই ‘ননসেন্স ওয়ার্ল্ডে’-র প্রতি আমাদের ভালবাসাটা বাড়িয়ে দিয়েছে। বাংলা ভাষার পাঠকদের কাছে পালোয়ান ষষ্ঠীচরণ, বুড়ির বাড়ি কিংবা খুড়োর কল বড্ড প্রিয়। এবার ফিলাটেলি এগজিবিশনের মধ্যে দিয়ে কেন্দ্রের প্রচারে এল তারা। অতীতে বাঙালি মনীষীদের মধ্যে বেশ কয়েকজনকে নিয়ে পিকচার পোস্টকার্ড প্রকাশিত হলেও, সুকুমার রায় বরাবরই কেন্দ্রের কাছে উপেক্ষিত থেকেছেন। বিরল বিস্ময়কর প্রতিভার অধিকারী হ–য–ব–র–ল–এর স্রষ্টার দিকে অবশেষে নজর পড়ল ভারত সরকারের। আবোল-তাবোল লেখকের মৃত্যুর ১০২ বছর পরে কেন্দ্রীয় সরকারের বিলম্বিত বোধোদয়কে স্বাগত জানিয়েছে বিশপ লেফ্রয় রোডের রায় পরিবার। এই প্রথম সুকুমারকে কোনও একটা ফরম্যাটে স্মরণ করল কেন্দ্র। এই স্বীকৃতি শুধু বাংলার জন্যই নয়, ভারতীয় শিশুসাহিত্য ও শিল্পের ক্ষেত্রেও বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন সাহিত্য সমাজের অনেকেই।

–

–

–

–

–

–

–

–

