জিডিপি-র অঙ্কে ভারত ক্রমশ উন্নতি করছে। জিডিপি বৃদ্ধির হারে রেকর্ড করে গত তিন মাসে প্রভূত উন্নতি হয়েছে দেশের, এমনই পরিসংখ্যান পেশ করা হয়েছে সম্প্রতি। এরপরই বাংলার মুখ্যমন্ত্রী (Chief Minister) জনসভা থেকে প্রশ্ন তুলেছিলেন, দেশের এত উন্নতিতে আদতে সাধারণ মানুষ কতটা সুখের মুখ দেখেছে? মানুষের পকেটে কী কোনও উন্নতি হয়েছে? একইভাবে এবার তৃণমূল সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) সংসদে তোলা প্রশ্নের উত্তরে একইরকম হিসাব পেশ করলে কেন্দ্রের সরকার, যেখানে সব ক্ষেত্রেই ভারতে বেকারত্বের (unemployment) পরিমাণ কমেছে বলে দাবি করা হল।
ক্রমশ সরকারি ক্ষেত্রের বেসরকারিকরণ ও বেসরকারি ক্ষেত্রে কাজের অনিশ্চয়তায় ডুবে যাক না কেন ভারত, দেশে বেকরত্বের হার কমছে, প্রমাণ করার মরিয়া চেষ্টা কেন্দ্রীয় শ্রম ও নিয়োগ রাষ্ট্র দফতরের। পরিসংখ্যান দফতরের পরিসংখ্যানে জানানো হয় –
১৫ বছর পর্যন্ত ভারতীয়ের ক্ষেত্রে
২০১৯-২০ : ৪.৮ %
২০২০-২১ : ৪.২%
২০২১-২২ : ৪.১%
২০২২-২৩ : ৩.২%
২০২৩-২৪ : ৩.২%
কার্যত স্পষ্ট শেষ অর্থবর্ষে বেকারত্বের হারই কমেনি। অর্থাৎ কর্মসংস্থানের পথ খোলেনি।

পরিসংখ্যানে ১৫ বছর থেকে ২৯ বছর পর্যন্ত বেকারত্বের হিসাব
২০১৯-২০ : ১৫ %
২০২০-২১ : ১২.৯%
২০২১-২২ : ১২.৪%
২০২২-২৩ : ১০.০%
২০২৩-২৪ : ১০.২%
এখানেও স্পষ্ট দেশের গুরুত্বপূর্ণ এই বয়সীদের মধ্যে যত সময় কাছে এসেছে তত বেকারত্বের হার বেড়েছে।

অভিষেকের প্রশ্নের উত্তরে গ্রামীণ ও শহরের বেকারত্বের আলাদা আলাদা হিসাবও পেশ করে কেন্দ্রের সরকার। গ্রামীণ বেকারত্বের পরিসংখ্যান
২০১৯-২০ : ৪.৫% (পুরুষ), ২.৬%(নারী)
২০২০-২১ : ৩.৮% (পুরুষ), ২.১% (নারী)
২০২১-২২ : ৩.৮% (পুরুষ), ২.১% (নারী)
২০২২-২৩ : ২.৭% (পুরুষ), ১.৮% (নারী)
২০২৩-২৪ : ২.৭% (পুরুষ), ২.১% (নারী)

১৫ বছরের ঊর্ধ্বে ভারতীয়দের ক্ষেত্রে শহর এলাকায় বেকারত্বের হার
২০১৯-২০ : ৬.৪% (পুরুষ), ৮.৯% (নারী)
২০২০-২১ : ৬.১% (পুরুষ), ৮.৬% (নারী)
২০২১-২২ : ৫.৮% (পুরুষ), ৭.৯% (নারী)
২০২২-২৩ : ৪.৭% (পুরুষ), ৭.৫% (নারী)
২০২৩-২৪ : ৪.৪% (পুরুষ), ৭.১% (নারী)

আরও পড়ুন : লক্ষ্য চাকরি দেওয়া, চাকরিরতরা চাকরি ফিরে পাওয়ায় আমি খুশি: প্রাথমিকের রায়ে নিয়ে মন্তব্য মুখ্যমন্ত্রীর

তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশ্নের উত্তরে কেন্দ্রের সরকার দাবি করে দেশের যাবতীয় বেকারত্বের পরিমাণ কমার ঘটনা কেন্দ্রের সরকারের কর্মসংস্থান বাড়ানোর প্রকল্পের জন্যই হয়েছে। সেই সঙ্গে কেন্দ্র সরকারি স্কলারশিপ ও প্রশিক্ষণের সুযোগের কারণেও কর্মসংস্থান বাড়ার দাবি করা হয়েছে। যদিও কোন সরকারি ক্ষেত্রে কত নিয়োগ বেড়েছে তার কোনও তথ্য তুলে ধরতে পারেনি কেন্দ্রের সরকার। অভিষেক যেখানে নির্দিষ্টভাবে প্রশ্ন করেছিলেন কেন্দ্রের সরকারের কোন বেকারত্ব নির্মূলের প্রকল্পে কত বেকারত্ব নির্মূল হয়েছে, সেখানে একগাদা প্রকল্পের নামই তুলে ধরা হয়েছে। আখেরে আদৌ সেই সব প্রকল্পে ভারতের নাগরিকদের কর্মসংস্থান (employment) হয়েছে কিনা উত্তর দিতে পারেনি কেন্দ্রের সরকার (Central Government)। কেন্দ্রের সরকারের পাশাপাশি প্রতিটি রাজ্যের সরকার নিজেদের মতো করে কর্মসংস্থানের পথ তৈরির নিরন্তর চেষ্টা চালিয়ে যায়। সেই সব রাজ্যগুলিরও কোনও উল্লেখ কেন্দ্রের দেওয়া উত্তরে নেই।

–

–

–


