Monday, December 15, 2025

পাকিস্তানের জেলের অন্দরের হাল কী? বন্দির কলমে দুর্বিষহ বর্ণনা

Date:

কেমন হাল পাকিস্তানের (Pakistan) জেলের অন্দরের? চরবৃত্তির অভিযোগে ধৃত বন্দিদের দশা কী হয় সেখানে? তার কথা এতদিন জানা যেত না। একেবারে ব্য়ক্তিগত অভিজ্ঞতা লিপিবদ্ধ করলেন পঞ্জাবের ভূমিপুত্র মোহনলাল ভাস্কর (Mohanlal Bhaskar)। বইয়ের নাম ‘ম্যায় পাকিস্তান মে ভারত কা জাসুস থা‘। জয় রতন সেটি ‘অ্যান ইন্ডিয়ান স্পাই ইন পাকিস্তান‘ শিরোনামে ইংরেজিতে অনুবাদ করেন।

১৯৪২ সালে পঞ্জাবের আবোহরে জন্মগ্রহণ করেন মোহনলাল ভাস্কর। তিনি এমএ-বিএড করে পর শিক্ষকতা শুরু করেন। পরবর্তীতে সিকিম সরকারের শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের ভাইস প্রিন্সিপাল হন। সেই সঙ্গেই ভারতের (India) রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা সংস্থার সঙ্গে যুক্ত হন। বইটিতে মোহনলাল লেখেন, ১৯৬৭ সালে তিনি গুপ্তচর হিসেবে পাকিস্তানে ঢোকার জন্য মহম্মদ আসলাম পরিচয় গ্রহণ করেছিলেন তিনি। এমনকী একজন মুসলিম পুরুষের পরিচয় সম্পূর্ণরূপে গ্রহণ করার জন্য তিনি খৎনাও করান। তাঁর দাবি, চাকরির প্রথম ১৫ মাসে ১৬ বার পাকিস্তানে যান। কিন্তু ১৯৬৮ সালে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। তবে, তাঁর কাছে কোনও অস্ত্র, কোনও দলিল, কোনও ‘প্রমাণ‘ ছিল না— তবুও তাঁকে ‘ভারতীয় এজেন্ট‘ ঘোষণা করে অন্ধকারে নিয়ে যাওয়া হয়।

সেনাবাহিনী ও পুলিশের জেরার সময় কল্পনাতীত ভয়াবহ নির্যাতন করা হয় মোহনলাল ভাস্করকে (Mohanlal Bhaskar)। লাহোর, রাওয়ালপিন্ডি, কোট লখপত-সহ পাকিস্তানের বিভিন্ন শহরে নিয়ে গিয়ে তাঁকে জেরা করা হয়েছিল। সঙ্গে ছিল বীভৎস নির্যাতন। অত্যাচারের যে বর্ণনা তিনি লিখেছেন, তা পড়লে মেরুদণ্ড দিয়ে ঠাণ্ডা স্রোত বয়ে যায়। শিকলে হাত পা বাঁধা অবস্থায় উপরে ফেলা হয়েছিল তাঁর চুল, দাড়ি ও ভুরু। তাঁর অনেক সহকর্মী পাগল হয়ে গিয়েছিলেন অথবা নিজেদের জীবন শেষ করে দিয়েছিলেন। পাকিস্তানের একটি আদালত মোহনলালকে মৃত্যুদণ্ড দেয়, কিন্তু উচ্চ আদালত পরে তার সাজা কমিয়ে ১৪ বছর করে। ১৯৭১ সালে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধের সময় হওয়া সিমলা চুক্তি ভাস্করের মতো বন্দিদের প্রত্যাপর্ণ সহজতর করে। অবশেষে ১৯৭৪ সালের ৯ ডিসেম্বর তিনি ভারতে ফিরে আসেন। ১৯৭৭ সালে তাঁকে ২৮০০০ টাকা পারিশ্রমিক দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।

তবে, অভিযোগ, ফিরে এসে কাজ পেতে বেজায় বেগ পেতে হয়েছিল মোহনলালকে। তিনি তাঁর জেলজীবনের ভয়াবহ অভিজ্ঞতা নিয়ে লেখেন, ‘ম্যায় পাকিস্তান মে ভারত কা জাসুস থা‘। পরে সেটি জয় রতন ‘অ্যান ইন্ডিয়ান স্পাই ইন পাকিস্তান‘ নামে ইংরেজিতে অনুবাদ করেন। যা একটি প্রামাণ্য দলিল।

Related articles

১৮ তারিখ থেকেই বড়দিনের উৎসবের সূচনা মুখ্যমন্ত্রীর, রয়েছে বিশেষ আলোকসজ্জা

১৮ ডিসেম্বর পার্ক স্ট্রিটের অ্যালেন পার্কে বড়দিনের উৎসবের সূচনা করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। ওই দিন থেকেই...

মন্দিরে ঢুকতে হলে বাবা-মাকে নিয়ে এসো! উত্তরপ্রদেশ পুলিশের আজব নিদান

যোগীরাজ্য উত্তরপ্রদেশে নারীর নিরাপত্তা যে কোন তলানিতে তা কেন্দ্রের সরকারের পরিসংখ্যানেই প্রমাণিত। এবার মেয়েদের নিরপত্তার দায়িত্ব নিতে অস্বীকার...

বন্ডিতে বন্দুকধারীকে খালি হাতে কাবু ফলবিক্রেতা আহমেদের

সিডনির বন্ডি সমুদ্রসৈকতে (Bondi Beach Attack) বন্দুকধারী আততায়ীকে খালি হাতে কাবু করে নজির গড়লেন স্থানীয় ফলবিক্রেতা আহমেদ আল...

মহিলাদের বিয়ে করা শুধু শোয়ার জন্য! কেরালার বাম নেতার নারীবিদ্বেষী মন্তব্যে নিন্দার ঝড়

এই না কি প্রগতিশীল দল! কেরালার (Kerala) মালাপ্পুরমের থেনেলা পঞ্চায়েতে জয়ী বাম নেতা সৈয়দ আলি মজিদ (Syad Ali...
Exit mobile version