কলকাতা হাই কোর্টের জুভেনাইল জাস্টিস কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী বছরের শুরু থেকেই রাজ্যের মেয়েদের স্কুলে বিশেষ স্বাস্থ্য সচেতনতা শিবির আয়োজন করা হচ্ছে। প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দফতর এবং স্কুল শিক্ষা দফতর যৌথভাবে এই কর্মসূচি বাস্তবায়ন করবে। নবান্নের নির্দেশে আগামী ৭ জানুয়ারি থেকে ধাপে ধাপে রাজ্যের ১,৬৫৮টি সরকারি ও সরকার-পোষিত মেয়েদের স্কুলে এই শিবিরের আয়োজন করতে বলা হয়েছে জেলা প্রশাসনকে।

এই কর্মসূচির আওতায় রাজ্যের সমস্ত জেলার মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের মেয়েদের স্কুলগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী, ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণির সমস্ত ছাত্রীদের পাশাপাশি তাঁদের অভিভাবকরাও এই শিবিরে অংশ নেবেন। শিবিরগুলিতে মূলত পুষ্টি, সাধারণ স্বাস্থ্য এবং পরিবার কল্যাণ সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির উপর গুরুত্ব দেওয়া হবে।

প্রতিটি স্কুলের জন্য এক হাজার টাকা করে বরাদ্দ করা হয়েছে। সেই হিসেবে গোটা কর্মসূচির জন্য মোট ১৬ লক্ষ ৫৮ হাজার টাকা অনুমোদন করা হয়েছে বলে প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে। এই অর্থ ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গ সমগ্র শিক্ষা মিশনের মাধ্যমে জেলা শিক্ষা দফতরের কাছে পাঠানো হয়েছে।
জেলা ভিত্তিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সবচেয়ে বেশি স্কুল এই কর্মসূচির আওতায় রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা জেলায়। সেখানে ২২০টি মেয়েদের স্কুলে স্বাস্থ্য শিবির আয়োজন করা হবে। এর পরেই রয়েছে কলকাতা, যেখানে ২১২টি স্কুলে শিবির হবে। হুগলিতে ১৪৮টি, হাওড়ায় ১৩৯টি, পূর্ব মেদিনীপুরে ১৩৪টি এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ১২৩টি স্কুলে এই কর্মসূচি বাস্তবায়িত হবে। অন্যান্য জেলাগুলিতেও নির্ধারিত সংখ্যক স্কুলে একইভাবে শিবির আয়োজন করা হবে।

নির্দেশিকায় স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, শিবির আয়োজনের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট স্কুলগুলিকে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে সমন্বয় রেখে কাজ করতে হবে। অনুমোদিত তথ্য, শিক্ষা ও যোগাযোগ সংক্রান্ত উপকরণ শিবির চলাকালীন প্রদর্শন করাও বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। পাশাপাশি প্রতিটি শিবিরের বিস্তারিত নথিভুক্তকরণ এবং ছবি-সহ রিপোর্ট তৈরি করে সংশ্লিষ্ট দফতরের মাধ্যমে জুভেনাইল জাস্টিস কমিটির কাছে জমা দিতে হবে।

প্রশাসনিক মহলের মতে, গত নভেম্বর মাসে কলকাতা হাই কোর্টের জুভেনাইল জাস্টিস কমিটির বৈঠকেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। চলতি মাসে একের পর এক সরকারি নির্দেশিকা জারি করে রাজ্য জুড়ে এই কর্মসূচিকে কার্যকর করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। কিশোরী ছাত্রীদের স্বাস্থ্য ও পুষ্টি সংক্রান্ত সচেতনতা বাড়াতে এই উদ্যোগ রাজ্যের স্কুল শিক্ষা ব্যবস্থায় একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলেই মনে করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন – নতুন বছরেই শুরু সংস্কারের কাজ, ইস্ট-মোহনের যুবভারতীতে আইএসএল খেলা নিয়ে সংশয়

_

_

_
_


