মারাঠাভূমের রাজনীতি নিয়ে দেশজুড়ে বিরামহীন চর্চা চলছেই। সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েও সরকার গড়তে না পারার জন্য বিজেপি শিবসেনাকে দায়ী করেছে। এই অভিযোগ হেলায় উড়িয়ে শিবসেনার পাল্টা দাবি, সরকার ৫০.৫০ ভাগের প্রতিশ্রুতি দিলেও বিজেপি তা মানতেই পারছেনা। বিশ্বাসঘাতকতা করেছে বিজেপি-ই। দীর্ঘ তিন দশকের এই সখ্য এক মুহূর্তেই শেষ হয়ে গিয়েছে।

মহারাষ্ট্রকে বিজেপির অন্যতম বড় গড় হিসেবেই ধরা হত। সেখানে কংগ্রেসের সঙ্গে শিবসেনার জোটে সত্যিই অ-বিজেপি সরকার গঠন হলে, মোদি-শাহের কপালের ভাঁজ বাড়বেই। কারন এসব দেখে অন্য রাজ্যের শরিকরাও এবার যদি সেনার মতো ‘গোঁ’ ধরে তাহলে হুড়মুড় করে ভেঙে পড়তে পারে ‘গেরুয়া-সাম্রাজ্য’। ঝাড়খণ্ডে ইতিমধ্যেই যার সূচনা হয়েছে।

সোমবার সরকার গঠনের জন্য NCP-র সঙ্গে জোট গড়ে আদিত্য ঠাকরে ও শিবসেনা বিধায়করা রাজভবনে পৌঁছনোর পরেও শেষ হয়নি সরকার গঠনের নাটক৷

সময় শেষের এক মুহূর্ত আগে কংগ্রেসের চিঠি পৌঁছে গেলেও সেই চিঠিতে শিবসেনাকে সমর্থনের ব্যাপারে পরিষ্কার করা হয়নি৷ কংগ্রেসের বক্তব্য ছিল, এ ব্যাপারে সিদ্ধান্তের জন্য তারা NCP-র সঙ্গে আলোচনা করতে চায়৷ সেই প্রেক্ষিতেই আজ, মঙ্গলবার, দিল্লিতে বৈঠকে বসেছেন সোনিয়া গান্ধী-শরদ পাওয়াররা।

অন্যদিকে, রাতেই রাজ্যপালের কাছে গিয়ে সরকার গঠনের জন্য আরও 48 ঘন্টা চেয়েছিল শিবসেনা৷ তাঁদের দাবি শোনেননি মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল৷ তিনি আর সময় দিতে নারাজ৷ এই প্রেক্ষিতে এখন রাষ্ট্রপতি শাসনের খাঁড়া ঝুলছে মহারাষ্ট্রের ভাগ্যে।

গরিষ্ঠতা প্রমাণের জন্য শরদ পওয়ারের দল NCP-কে সময় দেওয়া হয়েছে মঙ্গলবার অর্থাৎ আজ রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত। আজ কংগ্রেসের সঙ্গে NCP-র যে বৈঠক হচ্ছে,তার দিকে তাকিয়ে গোটা মহারাষ্ট্র। সর্বাধিক চিন্তায় শিবসেনা।30 বছরের বন্ধুত্ব ছিন্ন করে বিজেপির হাত ছেড়েছে সেনা-রা। কারন হিসেবে বলেছে, লোকসভা ভোটের পরেও প্রতিশ্রুতি মাফিক তাদের কথা রাখেনি বিজেপি। এই অভিযোগ নিয়েই টানাপোড়েন মারাঠাভূমে।

তবে আজ রাতেই একটা হেস্তনেস্ত যে হতে চলেছে তা প্রায় নিশ্চিত। কোনও দলই সরকার গড়তে না পারলে আজই মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল মারাঠাভূমের দায়িত্ব রাষ্ট্রপতির হাতে তুলে দেওয়ার সুপারিশ করবেন।

প্রসঙ্গত, মহারাষ্ট্র বিধানসভার ম্যাজিক ফিগার 145 ৷ বিজেপির হাতে রয়েছে 105টি আসন৷ অপরদিকে শিবসেনা ৫৬, এনসিপি ৫৪ এবং কংগ্রেসের দখলে রয়েছে ৪৪টি আসন ৷ এই তিন শক্তি হাত মেলালে বিজেপি-বিরোধী জোটের আসন দাঁড়াবে ১৫৪টি। এখনও কংগ্রেসের প্রত্যক্ষ সমর্থন না পাওয়ায় শিবসৈনিকদের ভাগ্য উজ্জ্বল বলে মনে হচ্ছে না।
