মাত্র কয়েকদিন আগেই তাঁর বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন নদিয়া জেলার তৃণমূলের নেতৃত্ব। এবার ভিডিও বার্তায় কোনও দলের নাম না করে পঞ্চায়েত নিয়ে সুর চড়ালেন সেই তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। নিজের ফেসবুক পেজে পোস্ট করা ওই বার্তায় কৃষ্ণনগরের সাংসদ অভিযোগ করেন, বেশিরভাগ পঞ্চায়েত পাঁচ লক্ষ টাকার বেশি কোনও প্রকল্পের কাজ করে না। কারণ, নিয়ম অনুযায়ী তাহলেই টেন্ডার ডাকতে হবে। ২০১৪ সালে রাজ্য সরকার ৫ লক্ষের বেশি মূল্যের কাজের জন্য ই টেন্ডার চালুর কথা বললেও অনেক পঞ্চায়েত এখনও তার পরিকাঠামো তৈরি করেনি। পঞ্চায়েতগুলি সাড়ে ৩ লক্ষ টাকার নীচে কাজ করতে চায়, যেহেতু সেটা আইএসজিপি ও ব্লক রিভিউয়ের ঊর্ধ্বে। বিরোধীরা এতদিন অভিযোগ করেছে, টেন্ডার ছাড়া প্রকল্পের মাধ্যমে টাকা লুঠছে শাসকদলের পঞ্চায়েত প্রধানরা। মহুয়ার এই কথা পরে তাদের দাবি, তৃণমূলের সাংসদই এই অভিযোগকে মান্যতা দিচ্ছেন।

মহুয়া মৈত্র ভিডিও বার্তায় বলেন, চতুর্দশ অর্থ কমিশন, কাজ ভিত্তিক অনুদান মিলিয়ে বছরে গড়ে ন্যূনতম ১কোটি ২০ লক্ষ টাকা পায় একটি গ্রাম পঞ্চায়েত। ২০১৯-২০ সালে চতুর্দশ অর্থ কমিশনের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় শীঘ্রই পঞ্চদশ কমিশনের টাকা ঢুকবে। কিন্তু এখনও বহু পঞ্চায়েত পুরনো টাকা খরচ করতে পারেনি। অথচ প্রতি বছর ডিসেম্বর মাসে কমপক্ষে ৬০% টাকা খরচ করার নিয়ম।
এই বিপুল অর্থ ঠিক মতো খরচ করলে গ্রামে কোন কাঁচা রাস্তা থাকার কথা নয়, কিন্তু এখনও অনেক পঞ্চায়েতেই অনেক রাস্তা কাঁচা।
যদিও ওই ভিডিও বার্তায় কৃষ্ণনগরের সাংসদ বলেন, তিনি এটা কোনও দলকে বলছেন না, বা বিরোধী ও মিডিয়ার খোরাকের জন্য বলছেন না। তিনি বলছেন মানুষকে সতর্ক করতে।
তৃণমূল সাংসদের এই অভিযোগের বিষয়ে রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, তিনি ফেসবুক করেন না। তাই সেখানে কে কী বলেছেন তার জবাব দেওয়া উচিত নয়।
মহুয়া বলেন, পঞ্চায়েতের কাজ মানে শঙ্কর সিংয়ের বাড়ি পর্যন্ত ৬০ মিটার রাস্তা বা শঙ্কর সিংয়ের বাড়ি থেকে রুকবানুর রহমানের বাড়ি পর্যন্ত ৬০ মিটার রাস্তা করা নয়। বড় রাস্তা করতে হবে। নিকাশি, সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট, বাজার এলাকায় মহিলাদের শৌচালয় তৈরি, স্যানিটারি ন্যাপকিন তৈরির ইউনিট গড়ার কাজের মতো বড় প্রকল্প নিতে হবে। রিভিউ হবে বলেই অনেক পঞ্চায়েত সাড়ে তিন লক্ষ টাকার বেশি কাজে হাতই দেয় না বলে অভিযোগ সাংসদের।
