Wednesday, August 27, 2025

টলিউড সামলাতে ব্যর্থ, এ কোন অপদার্থরা ডোবাচ্ছে মমতাকে?

Date:

Share post:

টালিগঞ্জে সিরিয়াল আর ফিল্ম, দুটিরই শুটিং শুরু হওয়ার কথা ছিল ১০জুন, অর্থাৎ আজ বুধবার থেকে। কিন্তু মঙ্গলবার, ৯ জুনের বিকেলেই পরিষ্কার হয়ে যায় শুটিং হচ্ছে না।

কেন?
মূলত শুটিং শুরু করতে নারাজ সিনে ভিডিও অ্যান্ড স্টেজ সাপ্লায়ার ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন বা যাকে কেয়ারটেকার সংগঠন বলা হচ্ছে তারা। তাদের বক্তব্য, কোভিড পরিস্থিতির মাঝে শুটিং শুরু করতে যে বৈঠকগুলি করা হয়, তার কোনওটাতেই তাদের ডাকা হয়নি। এবং দ্বিতীয়ত বিমা বা চিকিৎসা সংক্রান্ত বিষয়ে তাদেরকে উপেক্ষা করা হয়েছে।

এখানেই উঠেছে প্রশ্ন। এত কাড়া-নাকাড়া বাজিয়ে মন্ত্রী থেকে নেতৃত্ব, বৈঠক করলেন, বৈঠক চলল দু’দিন কয়েক ঘন্টা ধরে! তবু সার্বিকভাবে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া গেল না? এমন একটা বৈঠক হলো, যেখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশের প্রতিনিধিরা পুরো উপেক্ষিতই রয়ে গেলেন? শিল্পী ফোরামের নেতৃত্ব কি জেগে ঘুমোচ্ছিলেন? এই যে শিল্পীদের সংগঠন, সেটাও নাকি বকলমে নিয়ন্ত্রণ করেন তথাকথিত রাজনৈতিক নেতারা। তাঁরা বুঝতে পারেননি? কেন বৈঠকের পরে তাঁরা মাথাতেই আনতে পারলেন না কোথাও একটা ক্ষোভ জমা হয়েছে? যদি না বুঝে থাকেন, তবে এইসব গাঁয়ে মানে না আপনি মোড়লদের ঘাড় ধরে ইন্ডাস্ট্রি থেকে বের করে দেওয়া উচিত। মিটিংয়ে, মিছিলে, পুজো প্যান্ডেলে কিংবা সরকারি অনুষ্ঠানে মঞ্চ আলো করে ফিল্মি তারকাদের নিয়ে ঘুরলেই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি ডমিনেট করা যায় না। ঘটনাগুলো প্রমাণ করে দিচ্ছে, সরকারে থাকার সুযোগ নিয়েও এদের নূন্যতম সমন্বয় সাধন করার যোগ্যতা নেই। আর এদের জন্য বেইজ্জত হতে হচ্ছে মুখ্যমন্ত্রীকে। তিনি নেতৃত্বকে ভরসা করে ঘোষণা করছেন, আর সেই সিদ্ধান্ত নির্বিঘ্নে লাগু করার ক্ষমতাই নেই নেতৃত্বের! তবু কেন এরা ক্ষমতায়? পরিস্থিতি এমন একটা পর্যায়ে পৌঁছেছে যে আর্টিস্ট ফোরামের কার্যকরী সভাপতি শঙ্কর চক্রবর্তী শুটিং শুরুর নির্ধারিত দিনেই তিতিবিরক্ত হয়ে পদত্যাগ করছেন বলে জানিয়ে দিয়েছেন। বিরক্ত অরিন্দম গঙ্গোপাধ্যায় ফোন ধরছেন না। প্রশ্ন জেগেছে, এই ইন্ডাস্ট্রি থেকে চারজন সাংসদ, চারজন বিধায়ক! সকলেই শাসক দলের। তবু সমস্যা মেটাতে হামাগুড়ি খেতে হয় কেন? কেউ শুনছেন, কেউ ন্যায্য কারণে উপেক্ষা করছেন সিদ্ধান্ত। প্রত্যক্ষভাবে কয়েক হাজার শিল্পী-কলাকুশলী এবং সার্বিকভাবে লক্ষাধিক মানুষের রুজি রোজগার জড়িয়ে এই ইন্ডস্ট্রির সঙ্গে। সেটা নিয়ে ছেলেখেলা চলবে? বাঁদরের হাতে উন্মুক্ত তরবারি দিলে যা হয়, এখানেও ঠিক সেটাই হয়েছে। যে সিদ্ধান্ত নিতে ২০ মিনিটের বেশি লাগার কথা নয়, সেই সিদ্ধান্ত ২০ দিনেও হয় না! লজ্জা থাকলে পথ ছেড়ে দাঁড়ান।

টালিগঞ্জের অন্দরে শোনা যাচ্ছে আর একটি আওয়াজ। শিল্পী কলাকুশলীদের একাংশ বলছেন, সিদ্ধান্ত তো হয়েছে। শুটিং শুরুর নানা শর্তও তৈরি হয়েছে। কিন্তু ফোরাম, প্রযোজক, চ্যানেল কর্তাদের মধ্যে লিখিত চুক্তির বয়ান কোথায়? কাল কোনও একটি ইস্যুতে মামলা হলে উভয় পক্ষের হাতে লিখিত প্রমাণপত্র কোথায়? কিসের ভিত্তিতে তারা লড়াই করবেন? যথার্থ যুক্তি। সেই ফাঁক রেখে দিয়ে সিদ্ধান্ত হলো কেন? এসব বিষয়ে লিখিতভাবে সব পক্ষের বক্তব্য স্বাক্ষরসহ থাকা বাধ্যতামূলক। নেই কেন? মিটিং হওয়ার এক সপ্তাহ পরে কেন এসব বিষয় নিয়ে প্রশ্ন উঠছে? অপদার্থতার একটা সীমা থাকা উচিত।

দেখব না মনে করলেও সমাধানের জন্য নিশ্চিত মুখ্যমন্ত্রীকেই হস্তক্ষেপ করতে হবে। আসলে কিছু লোকের ঝোলা বওয়াই যোগ্যতা। তাদের যোগ্যতার অতিরিক্ত কিছু দিলে তো ছড়াবেন, ছড়াচ্ছেনও!

spot_img

Related articles

তিনিই নিয়োগ করেছিলেন, এবার গৌড়বঙ্গের উপাচার্যকে সরালেন রাজ্যপালই

রাজ্যের তালিকা অগ্রাহ্য করে বাংলার বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপর কার্যত এক নায়কতন্ত্র চালানোয় অভিযুক্ত রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস (C...

ভারতে বসছে দাবা বিশ্বকাপের আসর, কী বললেন প্রধানমন্ত্রী মোদি?

চলতি বছরে ভারতে বসছে দাবা বিশ্বকাপের আসর। ২০০২ সালের পর আবারও দাবা বিশ্বকাপ আয়োজন করতে চলেছে ভারত। ২৩...

একসঙ্গে গণেশ পুজোয়! সুনিতা বললেন ‘আমার গোবিন্দা শুধুই আমার’

বিচ্ছেদের যাবতীয় গুঞ্জন উড়িয়ে এক সঙ্গে গোবিন্দা-সুনিতা (Govinda-Sunita)। বুধবার বাড়ির গণেশ পুজোয় (Ganesh festival) ভেস্তে দিলেন নিন্দুকদের সব...

আমার ইতিহাস জড়িয়ে রয়েছে: মহারাষ্ট্র নিবাসের গণেশপুজোয় মন্তব্য মমতার

১০১ বছরে পড়ল কলকাতার মহারাষ্ট্র নিবাসের গণেশপুজো (Ganesh Pujo)। বুধবার, সেই পুজোর উদ্বোধন করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়...