করোনা রোগীকে হাসপাতালে পৌঁছে দিতেন তিনিই, পথ দুর্ঘটনায় তাঁকে বাঁচাতে এগিয়ে এলেন না কেউ!

নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এলাকায় কারও করোনা হলে হাসপাতালে পৌঁছে দিতেন একমাত্র তিনিই। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কর্তব্য পালনে ছিলেন অবিচল। কিন্তু তাঁকে বাঁচাতে এগিয়ে এলেন না কেউ। তিনি গোপীনাথ কোলে৷ পেশায় অ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভার।

আজ, রবিবার সকালে দুই করোনা রোগীকে হাসপাতালে পৌঁছে দিতে গিয়ে মর্মান্তিক দুর্ঘটনার কবলে পড়েন গোপীনাথ কোলে। ঘটনাটি ঘটেছে এনএইচ-৬ জাতীয় সড়কে কোলিশ্বরে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান অনুসারে, কোলাঘাট এলাকায় তিনজনের কোভিড-১৯ পজিটিভ ধরা পড়ে৷ এরপর রবিবার সকালে কোলাঘাটের গোপালনগর থেকে দুই করোনা আক্রান্ত রোগীকে পাঁশকুড়া হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছিলেন গোপীনাথ। সেই সময় দ্রুত গতিতে যাওয়া তাঁর অ্যাম্বুলেন্স সজোরে ধাক্কা মারে একটি বড় ট্রাকের পিছনে। দুর্ঘটনার ভয়াবহতা এতটাই বেশি ছিল যে, বেশ কিছুক্ষণ কাতরাতে কাতরাতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় চালক গোপীনাথ কোলের।

অন্যদিকে, অ্যাম্বুলেন্স-এ থাকা দুই করোনা আক্রান্ত রোগী গুরুতর জখম হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান পাঁশকুড়া করোনা হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মীরা৷ তাঁরাই দুই করোনা আক্রান্ত রোগীকে গুরুতর আহত অবস্থায় পাঁশকুড়া করোনা হাসপাসাতে নিয়ে যান৷ সেখানে আরও একজনের মৃত্যু হয়৷ অন্য করোনা রোগী আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন।

জানা গিয়েছে, রবিবার সকালে এই দুর্ঘটনার সময় আশেপাশে অনেক মানুষ হাজির ছিলেন। কিন্তু কেন কেউ এমন দুর্ঘটনার পর সাহায্যের জন্য এগিয়ে এলেন না? তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে!

এলাকায় কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে, একমাত্র গোপীনাথ কোলে ওই অঞ্চলের করোনা আক্রান্ত রোগীদের অ্যাম্বুলেন্সে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করাতে যান৷ এটা স্থানীয়রা সকলেই জানতেন। গোপীনাথের অ্যাম্বুলেন্সটি মূলত করোনা করোনা রোগীদের জন্যই ব্যবহৃত হতো, সেটাও নাকি এলাকাবাসীরা জানতেন। তাই এই দুর্ঘটনার পর অ্যাম্বুলেন্সে করোনা আক্রান্ত রোগী আছেন, এটা ভেবেই ভয় ও আশঙ্কা থেকেই কেউ সাহায্যে এগিয়ে আসেননি বলে মনে করা হচ্ছে৷ ফলে দুর্ঘটনার পর পাঁশকুড়া করোনা হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মীরা সেখানে না আসা পর্যন্ত ওই অবস্থায় পড়ে ছিলেন গোপীনাথ কোলে ও দুই করোনা রোগী, এমনটাও জানা যাচ্ছে।

Previous articleমর্মান্তিক! রাস্তার ধারে শ্বাসকষ্টে ভুগে মৃত্যু ব্যক্তির
Next article১৮ দিন ভেন্টিলেশনে লড়াই, করোনাকে হারিয়ে সুস্থ ৪ মাসের শিশু !