একাধিক হাসপাতালে রেফার! রোগীর মৃত্যু ঘিরে অভিযোগ

একের পর এক হাসপাতালে রেফার। বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর অভিযোগ করোনা আক্রান্ত তরুণের। শুক্রবার, সারাদিন সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন হাসপাতালে ঘোরার পর বিকেল পুলিশের উদ্যোগে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করা হয় ইছাপুরের দম্পতির একমাত্র সন্তানকে। কিন্তু তাতেও শেষ রক্ষা হল না। শুক্রবার রাতেই মারা গেলেন ওই তরুণ।

অভিযোগ, ইছাপুরের বাসিন্দা ওই তরুণ বৃহস্পতিবার রাতভর শ্বাসকষ্টে ছটফট করেছেন। শুক্রবার ভোরে তাঁর বাবা-মা তাঁকে কামারহাটি ইএসআই হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে ধরা পড়ে তার হাই ব্লাড সুগার রয়েছে। আইসিসিইউতে রাখতে হবে এই কারণে তাঁকে বেলঘরিয়া মিডল্যান্ড নার্সিংহোমে রেফার করে দেন কামারহাটি ইএসআই হাসপাতালের ডাক্তাররা।
সেখানে ভর্তি করাতে গেলে নার্সিংহোম বলে করোনা পরীক্ষা ছাড়া তারা ভর্তি নিতে নেবে না। অ্যাম্বুল্যান্সেই শুয়ে ছিলেন রোগী। পরিবারের অভিযোগ, ওখানে লালারসের নমুনা নিয়ে পরীক্ষা করে ৫ মিনিটের মধ্যে একটা হাতে লেখা কাগজে রিপোর্ট দেখান করোনা পজেটিভ। “বলা হয়, এটা কোভিড হাসপাতাল নয়। আপনারা অন্য জায়গায় নিয়ে যান”।
ছেলেকে নিয়ে কামারহাটি ইএসআই হাসপাতালে ফিরে যান বাবা-মা। তখন তিনি খুবই কষ্ট পাচ্ছেন।  তবুও চিকিৎসকরা দেখেননি বলে অভিযোগ। সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়।
সাগর দত্তে নিয়ে গেলে বলা হয় বেড নেই।
পাড়ার লোকের পরামর্শে স্বাস্থ্যভবনের হেল্পলাইনে ফোন করেন ওই তরুণের বাবা। সেখান থেকে জানানো হয় কেউ কোভিড আক্রান্ত হয়েছেন বলে বেলঘড়িয়া হাসপাতাল থেকে জানানো হয়নি। শেষপর্যন্ত কলকাতা পুলিশের হেল্পলাইনে ফোন করেন দিশাহারা বাবা-মা। সেখান থেকে বেলঘড়িয়া থানার সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেওয়া হয়। বেলঘড়িয়া থানা থেকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ নিয়ে যেতে বলা হয়।
দুপুর দু’টো নাগাদ ছেলেকে নিয়ে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে যান ওই দম্পতি। কিন্তু অভিযোগ, সেখানেও ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু বাবা-মার অনুরোধ হুমকিতে শেষ পর্যন্ত মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি নেওয়া হয় তরুণকে।
শুক্রবার রাতেই মৃত্যু হয় ওই রোগীর। বাবা-মায়ের অভিযোগ, হাসপাতালে রেফারের গেরোয় পড়েই মৃত্যু হল তাঁদের তরতাজা ছেলের।
বারবার রোগী ফেরানো যাবে না বলে হাসপাতালগুলিকে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হয়রানি এড়াতে চালু হয়েছে ওয়েবসাইট। সেই ওয়েব সাইটে কোন হাসপাতালে কত বেড খালি আছে তাও জানানোর কথা বলা হয়েছে। কিন্তু তাও ইছাপুরের ঘটনায় প্রশ্নের মুখে পরিষেবা।

Previous articleগ্রামবাসীদের বাধায় বাড়িতে ঢুকতে না পেরে শ্মশানে সন্তান নিয়ে রাত কাটালেন মহিলা
Next articleমসজিদে রূপান্তরিত হলো ঐতিহ্যশালী জাদুঘর, সরকারের ভূমিকা ঘিরে বিতর্ক