লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় (এলএসি) গত চার মাস ধরে যাবতীয় অশান্তির দায় পুরোপুরি চিনের। তারাই সমস্যা জিইয়ে রাখতে চাইছে এবং শান্তি আলোচনার পরিপন্থী কাজ করছে। লাদাখের সর্বশেষ পরিস্থিতি প্রসঙ্গে একথা জানাল ভারতের বিদেশমন্ত্রক। বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, একতরফাভাবে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার অবস্থানের বদল ঘটাতে চাইছে চিন। তাদের কাজকর্মের ফলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠছে। এলএসি-র স্থিতাবস্থা নষ্ট করে দেওয়ার কোনও চেষ্টা মানবে না ভারত।

প্রসঙ্গত, মে মাসের গোড়ায় পূর্ব লাদাখের বিভিন্ন এলাকায় এলএসি পেরিয়ে চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ) ভারতীয় এলাকায় ঢুকে পড়েছিল। ১৫ জুন গালওয়ানে রক্তাক্ত সেনা সংঘর্ষের পরেও সেনাস্তরে ও কূটনৈতিক স্তরে আলোচনা অব্যাহত থাকে। উত্তেজনা প্রশমনে তৈরি হয় বাফার জোন। কিন্তু ২৯ অগস্ট রাতে ফের প্যাংগং হ্রদের দক্ষিণে চিনা সেনার অনুপ্রবেশের চেষ্টা এবং ভারতীয় সেনার সঙ্গে তাদের সংঘর্ষের জেরে পরিস্থিতি জটিল হয়েছে। বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র বলেন, আমরা গত চার মাস ধরে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে বুঝতে পারছি, পরিস্থিতির অবনতিতে চিনের প্রত্যক্ষ ভূমিকা রয়েছে। এলএসি-তে উত্তেজনা কমাতে হলে চিনেরই আরও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করা উচিত।

এদিকে ভারতীয় সেনা পূর্ব লাদাখে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ ও অধিক উচ্চতাবিশিষ্ট অংশগুলিতে ঘাঁটি গাড়ায় প্রবল অস্বস্তিতে পড়েছে চিন। তাদের সেই ক্ষোভের প্রতিফলন দেখা গিয়েছে সরকারি সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল টাইমসের প্রতিবেদনে। সেখানে বলা হয়েছে, তাইওয়ান ও দক্ষিণ চিন সাগরের পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে ভারত যদি ভাবে যে তারা পূর্ব লাদাখে ইচ্ছামত সেনা অনুপ্রবেশ ঘটাবে, তাহলে তারা ভুল ভাবছে। চিন যেকোনও সংঘর্ষের জন্য তৈরি। ভারত যদি সংযত না হয় তাহলে তারা তার মূল্য দেবার জন্য তৈরি থাকুক। বেজিংকে চাপে রাখতে ভারতও যে পিছিয়ে নেই, তা আজ স্পষ্ট করে বলা হয়েছে । গ্লোবাল টাইমসের এই প্রতিবেদন বেজিংয়ের হতাশার প্রকাশ বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। ১৫ জুন গালওয়ান উপত্যকার সংঘর্ষ ও ২৯ অগাস্ট প্যাংগং সো-র দক্ষিণে আগ্রাসী মনোভাব নেওয়া চিনের গলায় এই সুর প্রমাণ করছে গত কয়েকদিন কিছুটা সুবিধাজনক অবস্থায় রয়েছে ভারত।
