
একুশের ভোটের আগেই কি রাজ্যের দুই বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূল-বিজেপি’র ‘ওয়ার্ম আপ’ ম্যাচ ?

কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন শুক্রবার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে,বিহার বিধানসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ২৯ নভেম্বরের মধ্যেই৷ কারন, বিহার বিধানসভার মেয়াদ শেষ হচ্ছে ২৯ নভেম্বর। তার আগেই নির্বাচন প্রক্রিয়া শেষ করতে চাইছে কমিশন। আর বিহার ভোটের সঙ্গেই বিভিন্ন রাজ্যে শূন্য থাকা ১টি লোকসভা আসন এবং ৬৪ বিধানসভা আসনের উপনির্বাচনও সেরে ফেলা হবে৷


এর অর্থ পশ্চিমবঙ্গের যে দু’টি বিধানসভা আসন এই মুহুর্তে শূন্য আছে, সেই দুই উপনির্বাচনও আগামী ২৯ নভেম্বরের মধ্যেই অনুষ্ঠিত হতে পারে৷ এই ঘোষণার ফলে পশ্চিমবঙ্গেও কার্যত উপনির্বাচনের দামামা বেজে গিয়েছে। একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগেই হয়তো উপনির্বাচন হতে পারে রাজ্যের ফালাকাটা ও হেমতাবাদ বিধানসভা কেন্দ্রে। তবে অন্য একটি যুক্তি বলছে, নভেম্বরের উপনির্বাচনের ৩-৪ মাসের মধ্যেই তো এ রাজ্যে বিধানসভা ভোট৷ তাহলে মাত্র ৩-৪ মাসের জন্য কি ভোট নেওয়া হবে ?

আরও পড়ুন- মাদকযোগে গ্রেফতার শৌভিক, স্যামুয়েল, এবার কি এনসিবির জালে রিয়াও?


করোনা আবহেও বিহার নিয়ে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন যথেষ্ট দৃঢ়তা দেখিয়েই জানিয়েছে, ঠিক সময়েই ওই রাজ্যে ভোট হবে৷ গত মাসেই নির্বাচন কমিশন মহামারি পরিস্থিতিতে সাধারণ ও উপনির্বাচন পরিচালনার জন্য একটি SOP বা স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর জারি করেছে৷ তাতে বলা হয়েছে, নির্বাচনের সময় ফেস মাস্ক, সামাজিক দূরত্ব এবং মৌলিক স্বাস্থ্য প্রোটোকল অনুসরণ করতে হবে। কমিশন জানিয়েছে, কোয়ারান্টাইনে থাকা ভোটারদের শেষ মুহূর্তে ভোট দিতে দেওয়া হবে। এর অর্থ, পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনও ঠিক সময়েই হতে চলেছে৷ কমিশন তেমন প্রস্তুতিই নিয়েছে৷ তাছাড়া, আগামী বছরের মার্চ-এপ্রিল নাগাদ করোনা পরিস্থিতি আরও নিয়ন্ত্রণে আসার সম্ভাবনাই বেশি৷ ফলে বাংলায় ভোট হতে বাধা থাকবেনা৷ এদিন কমিশন কোন কোন রাজ্যে উপনির্বাচন হবে, তা ঘোষণা করেনি৷ বলা হয়েছে, নির্দিষ্ট সময়েই উপনির্বাচনের নির্ঘণ্ট ঘোষণা করা হবে৷
এক্ষেত্রে একটাই প্রশ্ন, নভেম্বরের মধ্যে বাংলার দু’টি আসনে উপনির্বাচন আদৌ কি হবে ? না’কি, আর ৩-৪ মাস পর একইসঙ্গে ২৯৪ আসনেই হবে নির্বাচন ?

আরও পড়ুন- ক্ষমতায় এলে অনুব্রতকে রোলারে পিষে মারার হুমকি বিজেপি নেতার

রাজ্যের ফালাকাটা বিধানসভা আসন শূন্য আছে দীর্ঘদিন৷ ক্যানসার আক্রান্ত হয়ে ফালাকাটার বিধায়ক অনিল অধিকারির মৃত্যু হয়েছিল গত বছরের ৩১ অক্টোবর। এই কেন্দ্রে উপনির্বাচন হয়ে যাওয়ার কথা ছিলো চলতি বছরের এপ্রিলের মধ্যেই ৷ আর হেমতাবাদ কেন্দ্রের বিধায়ক দেবেন্দ্রনাথ রায়ের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছিল এ বছরের ১৩ জুলাই। এই দুই আসনের মধ্যে ফালাকাটা আসন ছিলো তৃণমূলের৷ হেমতাবাদ আসনে জয়ী হয়ে বাম বিধায়ক যোগ দিয়েছিলেন বিজেপিতে৷ কোনও কেন্দ্রে উপনির্বাচন করতে হলে শূন্য হওয়ার ৬ মাসের মধ্যে তা করাতে হয়। কিন্তু মহামারির কারনে এ রাজ্যের ২ কেন্দ্রের মতোই দেশের একাধিক রাজ্যে ভোট করানো সম্ভব হয়নি। এ বার বিহার বিধানসভার ভোটের সঙ্গেই সেই সব কেন্দ্রে ভোট নিতেও তৈরি হয়েছে নির্বাচন কমিশন।

তবে জানা গিয়েছে, বেশ কয়েকটি রাজ্য ইতিমধ্যেই এখন উপনির্বাচন না করতে অনুরোধ জানিয়েছে কমিশনের কাছে। সে সব নিয়ে এখনও সিদ্ধান্ত নেয়নি কমিশন। কমিশনের এদিনের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘‘কয়েকটি রাজ্য বন্যা ও মহামারির কারণে উপনির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার আর্জি জানিয়েছিল। ওই সব রাজ্যের মুখ্যসচিব ও মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকদের থেকে রিপোর্ট নেওয়া হয়েছে।

কমিশনের ঘোষণার পর বাংলার শূন্য দু’টি কেন্দ্রেও বিহার বিধানসভার ভোটের সময়েই উপনির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা কিন্তু একেবারে উড়িয়ে দিচ্ছে না রাজনৈতিক মহল৷

আর সত্যিই ভোট হলে তৃণমূল ও বিজেপির বহু চর্চিত দ্বৈরথের ট্রেলর চলতি বছরেই দেখা যেতে পারে৷

আরও পড়ুন- মুকুল-কৈলাশ “দোস্তিতে” সভা ছাড়লেন দিলীপ! ফের অশনি সঙ্কেত বঙ্গ বিজেপিতে?
