Saturday, August 23, 2025

ধর্ম বিদ্বেষের নজির খাস কলকাতায়, মাদ্রাসা শিক্ষকদের ঘর দিল না গেস্ট হাউস কর্তৃপক্ষ

Date:

Share post:

গালে দাড়ি, তাই গেস্ট হাউসে থাকা নিয়ে আপত্তি প্রতিবেশীদের। অমানবিক আচরণের অভিযোগ উঠল সল্টলেকের গেস্ট হাউসের বিরুদ্ধে। ধর্ম বিদ্বেষের সাক্ষী থাকল খাস কলকাতা। মাদ্রাসা শিক্ষকদের অভিযোগ, শুধুমাত্র মুসলিম হওয়ার জন্য সল্টলেকের গেস্ট হাউসে থাকতে দেওয়া হয়নি।

মালদহের বিভিন্ন মাদ্রাসায় পড়ান এই শিক্ষকরা। পেশাগত কারণে মালদহ থেকে বিকাশ ভবনে এসেছিলেন তাঁরা। সোমবার ভোরেই তাঁরা পৌঁছন সল্টলেকের গেস্ট হাউসে। বিশ্রাম নেওয়ার জন্য আগে থেকেই ঘর ‘বুক’ও করা ছিল তাঁদের। অভিযোগ, এরপরই তাঁদের থাকা নিয়ে আপত্তি তোলেন প্রতিবেশীরা।ঘটনায় দু’টি গেস্ট হাউসের নাম উঠে এসেছে। দায় ঝেড়ে ফেলে গেস্ট হাউস কর্তৃপক্ষও। তাদের সাফাই, আশপাশের লোকজনের আপত্তি ছিল বলে এটা ঘটেছে। অচেনা শহরে প্রবল বৃষ্টির মধ্যে কার্যত অসহায় অবস্থায় রাস্তায় দাঁড়িয়ে ভিজতে হয়েছে শিক্ষকদের।

মেহবুব রহমান, জাহাঙ্গীর গনি, ওবায়দুর রহমান-সহ আরও ৭ শিক্ষক মালদহ থেকে এসেছিলেন কলকাতায়। প্রথমে ডি এল ৩৯-এর বাড়িতে তাঁরা যান। সেখানে থাকতে দেওয়া হয়নি। এরপর তাঁরা যান, সি এল ১৬৪-র গেস্ট হাউসে। শিক্ষকদের অভিযোগ, প্রায় ২ ঘণ্টা সেখানে তাঁদের বসিয়ে রাখা হয়। প্রতিবেশীদের আপত্তি আছে বলে চলে যেতে বলা হয় তাঁদের। তাঁদের অভিযোগ, গেস্ট হাউস কর্তৃপক্ষ অমানবিক আচরণ শুধু করেছেন এমনটি নয়, চরম দুর্ব্যবহারও করেছে তারা। স্পষ্টতই, এহেন আচরণে মাদ্রাসা শিক্ষকেরা এতে অবাক ও অপমানিত। শহরের উপকণ্ঠে ঘটা এই ঘটনাকে নজিরবিহীন বলে মন্তব্য করেছেন অনেকেই।

পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষক ঐক্য মুক্ত মঞ্চ এবিষয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছে। একইসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর দফতরেও বিষয়টি জানানো হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। ইতিমধ্যেই সি এল ১৬৪ বাড়ির গেস্ট হাউস থেকে ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তদন্তে নেমে পুলিশ দেখে, ওই গেস্ট হাউসের রেজিস্টারের খাতা থেকে আশ্চর্যজনক ভাবে ২০ ও ২১ সেপ্টেম্বরের তারিখের পাতাগুলি উধাও। এই ঘটনায় আর কে কে জড়িত তার তদন্তও করছে পুলিশ।

এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন রাজনৈতিক নেতা থেকে বুদ্ধিজীবীরা। সিপিআইএম পলিটব্যুরোর সদস্য মহম্মদ সেলিম বলেন, “অত্যন্ত নিন্দনীয় ঘটনা। মেনে নেওয়া যায় না। এই ঘটনা ফ্যাসিবাদের পদধ্বনি।” নাট্যব্যক্তিত্ব কৌশিক সেন জানান, ‘‘সাম্প্রদায়িকতার তাস নিয়ে খেলা হচ্ছে। নাম বা পদবির জন্য এই আচরণ, এটা সত্যি ভয় পাওয়াচ্ছে।’’

আরও পড়ুন-অডিও টেপে জেলা সভাপতির বিস্ফোরক ‘কুকথা’, বেআব্রু বিজেপির অন্দরমহল

spot_img

Related articles

ডেঙ্গি সংক্রমণ রুখতে তৎপর রাজ্য! জেলাগুলিকে একগুচ্ছ কড়া নির্দেশ মুখ্যসচিবের 

রাজ্যে ডেঙ্গি সংক্রমণ ক্রমশ বাড়তে থাকায় শনিবার নবান্নে জেলাশাসক ও স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসেন মুখ্যসচিব...

দায় বেসরকারিকরণ নীতির! মোদিরাজে পাঁচ বছরে চাকরি হারিয়েছেন লক্ষাধিক কর্মী

মোদি সরকারের আমলে বিগত পাঁচ বছরে চাকরি হারিয়েছেন লক্ষাধিক সরকারি কর্মী। সম্প্রতি লোকসভায় এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য দিল কেন্দ্র।...

পুজোর আগে প্রায় দ্বিগুণ দুধ উৎপাদনে বাংলার ডেয়ারি 

কলকাতা এবং সংলগ্ন জেলাগুলিতে প্যাকেটজাত দুধের জোগান বাড়াতে রাজ্য সরকারি ব্র্যান্ড বাংলার ডেয়ারি বড় পদক্ষেপ নিতে চলেছে। পুজোর...

পিছনে দৌড়! স্নাতক স্তরে বৈদিক গণিত আনার চেষ্টা UGC-র

গোটা বিশ্ব গণিতের ক্ষেত্রে যেখানে নতুন উদ্ভাবনী ধারণা নিয়ে আসছে, সেখানে ভারতের শিক্ষা ক্ষেত্রে পিছন দিকে হাঁটা শুরু...