অডিও টেপে জেলা সভাপতির বিস্ফোরক ‘কুকথা’, বেআব্রু বিজেপির অন্দরমহল

ভয়ঙ্কর! মারাত্মক! বিজেপির অন্দরে চলছে মারাত্মক চোরাস্রোত। ‘এখন বিশ্ববাংলা সংবাদ’-এর হাতে এসেছে একটি অডিও টেপ। পাঠিয়েছেন বিজেপিরই এক নেতা। কী রয়েছে সেই অডিও টেপে? সাংসদ এবং বিজেপির যুব মোর্চার রাজ্য সভাপতি সৌমিত্র খাঁকে বিজেপি বলেই মানতে নারাজ দলের জেলা সভাপতি। শুধু তাই নয়, দলের জেলা সভাপতির সাফ কথা, তাঁর পছন্দের লোককেই জেলা যুবর মাথায় বসাতে হবে। কোনও সৌমিত্র খানকে তিনি চেনেন না, তার কথায় কাজও হবে না। আর এর অন্যথা হলে? কাজ করতেই দেবেন না। মুখ খারাপ করে বিজেপি জেলা সভাপতি বলেছেন, ‘কেউ… ছিঁড়ে নিতে পারবে না। যদিও এই অডিও টেপের সত্যতা যাচাই করেনি ‘এখন বিশ্ববাংলা সংবাদ’।

ঘটনার সূত্রপাত দলের যুব মোর্চার নতুন কমিটি নিয়ে। বাঁকুড়া জেলার বিজেপি সভাপতি বিবেকানন্দ পাত্রর সঙ্গে এ নিয়ে দলেরই এক শিক্ষক নেতা মণ্ডল ব্লক প্রেসিডেন্ট সিদ্ধেশ্বর কুণ্ডুর সঙ্গে ফোনে কথা বলছিলেন। আর সেখানেই একের পর এক বিস্ফোরক মন্তব্য বিবেকানন্দ পাত্রর। নামে যেমন, বচনেও তিনি ‘বিবেকানন্দ’কে ঠারে ঠারে মনে করিয়ে দিয়েছে।

কী বলছেন বিবেকানন্দ?

সৌগত পাত্র এবং পার্থ কুণ্ডুকে দলের যুব ফ্রন্ট থেকে বাঁকুড়ায় কাজ করার নির্দেশ দেন সভাপতি সৌমিত্র খাঁ। আর সেটাই সেই শিক্ষক নেতা সিদ্ধেশ্বরের কাছে শুনে বিবেকানন্দ বলেন, সৌগত পাত্রকে আমি বাঁকুড়া জেলায় কাজ করতে দেব না। যাকে খুশি গিয়ে বলুন। সৌমিত্র খাঁ আমার কনসেন্ট নিয়ে সৌগতকে করেনি।

এরপর আরও খোলামেলা ভাষায় সৌমিত্রকে আক্রমণ করেছেন বিবেকানন্দ। বলেছেন, ‘সৌমিত্র খাঁ এমপি বলে আমি ওর চামচা নই। উনি আমার জেলার কেউ নন। টিএমসির এখনও গন্ধ যায়নি।’ এরপর সৌমিত্রর বিরুদ্ধে আরও মারাত্মক অভিযোগ জেলা সভাপতির। বিজেপি নেতা হলেও বিজেপির নীতি মানেন কী সৌমিত্র? বিবেকানন্দর প্রশ্ন, বিজেপির কোন নীতি মেনে উনি কাজ করেন? আমার জেলায় অস্থিরতা তৈরি করবে!

উল্টো দিক থেকে সেই শিক্ষক সিদ্ধেশ্বর কুণ্ডুর ঠাণ্ডা জবাবে আরও চটে যান বিবেকানন্দ। এবার গলার স্বর চড়িয়ে বিবেকানন্দ বলেন, ‘আমি ওই কমিটি অ্যাপ্রুভাল করব না। তাতে যাকে খুশি বলুন।’ কথা শুনে মনে হতে বাধ্য রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ নন, বিবেকানন্দ পাত্র! তিনি বলছেন, ‘যাকে সেক্রেটারি করতে বলব তাকে করবেন। যদি তাতে আপনার থাকতে ইচ্ছা হয় থাকবেন, নইলে রিজাইন লেটার দেবেন! বাঁকুড়া জেলার পার্টিটা ইয়ার্কি মারা হচ্ছে? সৌগত পাত্র, পার্থ কুণ্ডুরা যাচ্ছে পতাকা ধরাতে? আপনারা তাদের বড় নেতা ভাবতে পারেন। আমি তাদের শা… আমার লো…র যোগ্য মনে করি না!

 

পারস্পরিক কথোপকথন আরও দীর্ঘ। কিন্তু যে কথা সামনে এসেছে তা রীতিমতো মারাত্মক। বিজেপির অন্দরে যে মারাত্মক অন্তর্দ্বন্দ্ব বাসা বেঁধেছে, তা এই ঘটনাতেই পরিষ্কার। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, লোকসভায় ১৮টি আসন এবং কিছু ভোট বৃদ্ধিতেই যদি এই পরিণতি হয়, তাহলে ক্ষমতায় (!!) এলে!!

আরও পড়ুন : শাস্তি না হলে ভুল বার্তা যেত- আট সাংসদের সাসপেনশনের পক্ষে মত দিলীপের

Previous articleরাজ্যপালকে অল্প শিক্ষিত, থার্ড গ্রেডের গভর্নর বললেন কল্যাণ
Next articleপ্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শরদ যাদব ভেন্টিলেটরে, অবস্থা আশঙ্কাজনক