ভয়ডর উপেক্ষা করেই পর্যটক হাজির দার্জিলিঙে

কিশোর সাহা

ডর কিংবা ভয়, যাই-ই হোক তা উপেক্ষা করেই অনেকে হাজির পাহাড়ে। তাই দেবীপক্ষে বিজয়া দশমীর দিন আশায় বুক বাঁধছে কুইন অব হিলস দার্জিলিং!
শৈলশহরের রাণী দার্জিলিং জেলা সদরের কথাই ধরা যাক। সোমবার সকাল থেকে কখনও আকাশ মেঘলা, কখনও রোদ ঝলমলে। তারই মধ্যে ম্যাল চৌরাস্তায় গুটিগুটি পায়ে ভিড় জমিয়েছেন দেশের নানা প্রান্তের অন্তত শতাধিক পর্যটক। বিহারের কিসানগঞ্জের সন্তোষ চৌধুরী রবিবার মানে মহানবমীর দিন সকালেই পৌঁছেছেন দার্জিলিঙে।

সন্তোষবাবু বিজয়া দশমী দার্জজিলিঙে কাটিয়ে চলে যাবেন কালিম্পঙে। সেখানে একদিন থেকে শিলিগুড়িতে এক রাত থেকে ফিরবেন কিসানগঞ্জে। ম্যালে দাঁড়িয়ে সন্তোষবাবু জানান, সংক্রমণের ভয় থাকলেও বিধি নিষেধ মেনে চললে অনেকটাই নিরাপদ থাকা যায়। সেটা মাথায় রেখেই তাঁরা দুটি পরিবার মিলে নিজেদের গাড়ি করে সোজা দার্জিলিঙে চলে এসেছেন। তবে সিকিমে যাওয়ার ইচ্ছে থাকলেও এ যাত্রায় তাঁরা যাবেন না। কারণ, সেখানে বাইরের গাড়ি নিয়ে ঘোরাঘুরির অনুমতি মেলে না।

কার্শিয়াং ট্যুরিস্ট লজের কয়েকজন কর্মীর কথা শোনা যাক। তাঁরা জানাচ্ছেন, পুজোর মধ্যে হাতে গোনা ট্যুরিস্ট এসেছেন। তবে ধীরে ধীরে ট্যুরিস্ট আসা শুরু হয়েছে বলে তাঁরা আসা করছেন, কালীপুজোর মধ্যে দার্জিলিং জমজমাট হয়ে যেতে পারে।

কালিম্পঙের ছবিটা প্রায় একইরকম। সেখানে ডম্বর চকের হোটেলগুলিতে কিছু পর্যটকের দেখা মিলছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ট্যুরিস্টরা নিজেদের গাড়ি নিয়ে দিনভর থেকে বিকেলে ফিরে যাওয়ার উপরেই জোর দিচ্ছেন। তবে কলকাতা-সহ দূরের পর্যটকদের অনেকেই অবশ্য রাতে হোটেলে, হোম স্টে-তে থাকছেন। কালিম্পঙের ট্যুর অপারেটর প্রেম তামাং জানান, পাহাড়ের পরিষেবা প্রদানকারী ও বাইরের পরিষেবা পেতে ইচ্ছুক পর্যটক, উভয়েরই সংক্রমণের ভয় রয়েছে। তাই এখনও পর্যটন ব্যবসা জমে ওঠেনি। তবে ভয়ডর কাটিয়ে তা যে জমে উঠবে তা নিয়ে প্রেমের মতো অনেকেরই সন্দেহ নেই।
দার্জিলিঙের ম্যালে যেখানে ফি বছর পুজোয় ভিড়ে ঠাসা থাকে, সেখানে এবার অনেকটাই ফাঁকা-ফাঁকা। ট্টাটু ঘোড়া নিয়ে হাজির থাকেন যে জিতু থাপা, পেম্বা লামারা, তাঁরাও এবার পথে নামেননি। সকলেই কিছুটা ছোঁয়া বাঁচিয়ে ঘুরছেন। সকলেই ভ্যাকসিনের অপেক্ষায় দিন গুনছেন।

এতসবের মধ্যেও দার্জিলিংয়ের টান কতটা অপ্রতিরোধ্য তা বোঝা যায় সন্তোষবাবুদের মতো পর্যটকদের আগমনে। সে জন্যই দার্জিলিং আজও কুইন অব হিলস। এবং সে জন্যই দর্জিলিংয়ে ভিড় ক্রমশ যে বাড়বে তা নিয়ে ট্যুর অপারেটরদের অনেকেরই সন্দেহ নেই।

আরও পড়ুন-বাংলার মা, মাটি, মানুষকে বিজয়ার শুভেচ্ছা মুখ্যমন্ত্রীর

Previous articleবাংলার মা, মাটি, মানুষকে বিজয়ার শুভেচ্ছা মুখ্যমন্ত্রীর
Next articleলন্ডন থেকে কলকাতায় নামা যুবক পজিটিভ, পাঠানো হলো হাসপাতালে