Friday, November 7, 2025

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কারণেই এ রাজ্যে মিম খাপ খুলতে পারবে না, অভিজিৎ ঘোষের কলম

Date:

Share post:

অভিজিৎ ঘোষ

বিহারে মিম(এআইএমআইএম) কিঞ্চিৎ সাফল্য পাওয়ায় প্রশ্ন উঠেছে বাংলায় তাদের ভবিষ্যৎ কী?

প্রশ্ন, বাংলার ভোটে কতখানি ভাগ বসাতে পারবে মিম?

যারা বিহারের ভোট আর বাংলার ভোটকে এক পঙ্কক্তিতে ফেলছেন, তাঁরা শুরুতেই ভুল করছেন।

কেন?

দেশের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ এমন একটি রাজ্য, যেখানে এখনও ধর্মের ভিত্তিতে ভোট হয় না। এটা বাংলার ঐতিহ্য। এই ঐতিহ্যের উত্তরাধিকারী রাজ্যের তৃণমূল সরকার। ধর্মের ভিত্তিতে ভোট ভাগের চেষ্টা যে বিজেপির তরফ থেকে রয়েছে, তা বলছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরাই। কোনও ধরণের সুযোগ পেলে তাকে উস্কে দিয়ে তিল থেকে তাল করার প্রবণতা মাঝে মধ্যেই দেখা গিয়েছে। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দৃঢ়তায় তা কোনোভাবেই পাখা মেলতে পারেনি। রাজ্য সরকারের একটার পর একটা সামাজিক প্রকল্পে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলেই উপকৃত হয়েছেন। নিশ্চিতভাবে কিছু মান-অভিমান না পাওয়ার অভিজ্ঞতা রয়েছে। কিন্তু বুঝতে হবে, দীর্ঘ ৩৪ বছরের না পাওয়ার পর্ব মিটিয়ে তাকে ইতিবাচক স্রোতে ফিরিয়ে আনা সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। সীমিত সাধ্যের মধ্যে তার চেষ্টার ত্রুটি রাখেনি সরকার।

আরও পড়ুন : বিজয়বর্গীয়’ই এ রাজ্যের পর্যবেক্ষক, সঙ্গে আইটি সেলের অমিত মালব্য, ঘোষণা বিজেপি’র

মিম কোথায় ভোটের ঝাঁপি ফেলতে চাইছে?

মূলত সীমান্ত এলাকাগুলিতে। নদিয়া, মালদহ, মুর্শিদাবাদ, দক্ষিণ ও উত্তর ২৪ পরগণার সীমান্তে। উত্তরবঙ্গের কয়েকটি জায়গা রয়েছে। অন্য রাজ্য, বিশেষত বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির অভিজ্ঞতা দেখে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সেখানে মেরুকরণের রাজনীতি প্রবল। সংখ্যালঘুরা সেখানে কতখানি সুরক্ষিত তাঁরা তা জীবন দিয়ে অনুভব করেছেন, দেখছেন। এই বাংলার মানুষ সেটা বোঝেন। কী খাবে, কী পড়বে, কোন পোশাক দেখলেই বোঝা যায় তারা কোন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত, লাভ জিহাদের পিছনে আসল উদ্দেশ্য কী… এসব বাংলার মানুষকে প্রত্যক্ষ করতে হয়নি, হয় না। আর তার কৃতিত্ব নিশ্চিতভাবে বাংলার সরকারের।

আরও পড়ুন : ‘বিচক্ষণ ও অনমনীয়’ তেজস্বী বনাম হঠাৎ ‘দার্শনিক’ নীতীশ, বিহার-যুদ্ধ এখনও জারি

এটা ভাল মতোই বোঝে মিম। তাই তৃণমূলের সঙ্গে হাত মেলানোর ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছে। আসল টার্গেট সংখ্যালঘু ভোট ব্যাঙ্ক থেকে নিজের ভোট ব্যাঙ্ক তৈরি করা। ভবিষ্যতে যাতে ফোঁস করে আলদা লড়ার জমি তৈরি করে রাখা যায়। ভোট কাটাকুটির অঙ্ক কষছে ওয়েসির দল। এককভাবে লড়াইয়ে নামলে অধিকাংশ জেলায় জমানত বাজেয়াপ্ত হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে নিশ্চিতভাবে। এক শতাংশের কাছাকাছি ভোট পাওয়ার সম্ভাবনাও কম। বিজেপি অবশ্য মনেপ্রাণে চাইবে ভোট ভাগ হোক, তা সে যত নগণ্যই হোক।

ভোটের বাকি আরও মাস চারেক। সব ধরণের সম্ভাবনার সলতে উসকে দিতে চাইবে বিজেপি। কিন্তু তাতে যে ভবি ভোলার নয়, তা মে মাসেই প্রমাণ করবেন বাংলার মানুষ।

spot_img

Related articles

দুর্যোগ পরিস্থিতি পর্যালোচনা: আগামী সপ্তাহেই উত্তরবঙ্গে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী

ভয়াবহ দুর্যোগ পেরিয়ে মাথা তুলে দাঁড়ানোর পর্যায়ে উত্তরবঙ্গ। রাজ্য প্রশাসন ও স্থানীয় প্রশাসনের লাগাতার পরিষেবা ও পদক্ষেপে যোগাযোগ...

তালিকায় নাম নেই! কেউ স্ত্রীর জন্য, কেউবা বিএলও-র সামনেই প্রাণ দিলেন

রাজ্যের হাজার হাজার মানুষের নাম নেই ২০০২ সালের ভোটার তালিকায়। ইতিমধ্যেই রাজ্যের একাধিক জেলায় আতঙ্কে কেউ আত্মঘাতী, কেউবা...

শিলিগুড়িতে উৎসবের মেজাজেই সোনার মেয়েকে বরণ, নিজের অনুভূতির কথা জানালেন আপ্লুত রিচা

বিগত কয়েক বছর ধরেই পুরুষ এবং মহিলা ক্রিকেটের মধ্যে ব্যবধান একটু একটু কমছে। আইসিসি বিশ্বকাপ জিতে ভারতীয় ক্রিকেটেই...

পথশ্রী প্রকল্প বেনিয়ম বরদাস্ত নয়: স্পষ্ট নির্দেশ মুখ্যসচিবের

পথশ্রী প্রকল্পের অধীনে গ্রামীণ রাস্তাগুলির মান বজায় রাখতে জেলা প্রশাসনকে কড়া নির্দেশ দিলেন মুখ্য সচিব মনোজ পন্থ। শুক্রবার...