Wednesday, November 12, 2025

আব্বাস নিয়ে অস্বস্তির মধ্যেই আজ বামেদের ব্রিগেড

Date:

Share post:

দীর্ঘ ৩৪ বছর রাজত্বের পর ২০১১ সালে বাংলার বুকে বামেদের পতন ঘটে। তারপর থেকে ভোটবাক্সে রক্তক্ষরণ অবিরাম। ভোট কমে এখন বামেদের সম্বল ৭ শতাংশ। সামনেই আবার একটি বিধানসভা ভোট। কংগ্রেস ও ফুরফুরা শরীফের পীরজাদা নবগঠিত ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্ট বা ISF-র সঙ্গে জোট বেঁধে লড়াইয়ের বার্তা দিতে চাইছে বাম নেতৃত্বে। নির্বাচনের মুখে রাজ্য রাজনীতিতে নিজেদের প্রাসঙ্গিকতা ফিরে পেতে তৃতীয় শক্তি হিসেবে সাংগঠনিক শক্তির পরীক্ষা দিতে একপ্রকার চ্যালেঞ্জ নিয়েছে উদ্যোক্তারা। পরীক্ষায় পাশ করে গেলে তারা অনেকটা অক্সিজেন পাবে বলে মনে করছে জোট শিবির। শেষ পর্যন্ত নতুন ইতিহাস তৈরি না হলেও বিজেপি ও তৃণমূলের বিরুদ্ধে তৃতীয় বিকল্প হিসেবে যৌথভাবে ব্রিগেডের আয়োজন, নিঃসন্দেহে ‘ঐতিহাসিক’ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

তবে এই ব্রিগেড নিয়ে বেশ অস্বস্তিতে বাম নেতৃত্ব। একদিকে “আত্মত্যাগ” করে আব্বাসের দলের সঙ্গে জোট। তার উপর কল্পতরু হয়ে একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ আসন ছাড়া হয়েছে ফুরফুরা শরীফের পীরজাদাকে। তার প্রভাব ভোটবাক্সে কীভাবে প্রতিফলিত হবে, তা বলবে সময়। কিন্তু ব্রিগেডের রাজনৈতিক সমাবেশে ধর্মগুরুকে সামনের সারিতে এনে মহাসমাবেশ মানুষ কীভাবে নেয়, সেটাই দেখার। ধর্মগুরুকে নিয়ে সিপিএমের এই রাজনৈতিক সভা মেনে নিতে পারছেন না বামপন্থীদের একটা বড় অংশ। স্রেফ ভোটের রাজনীতি করতে গিয়ে নিজেদের নীতি-আদর্শকে আর কত জলাঞ্জলি দেবে সিপিএম? এ প্রশ্ন কিন্তু উঠছে ফ্রন্টের অন্দরেই। ছোট শরিকরা প্রকাশ্যে কিছু না বললেও আব্বাস ইস্যুতে আলিমুদ্দিনের দাদাদের উপর যে বেজায় চটেছেন, সেটা তাদের বডি লাঙ্গুয়েজেই স্পষ্ট।

প্রসঙ্গত, ভোট ঘোষণার ৪৮ ঘন্টার মধ্যে দুই শক্তিশালী প্রতিপক্ষ তৃণমূল ও বিজেপিকে কড়া বার্তা দিতে চায় বাম তথা মহাজোটের শরিকরা। আর সেই বার্তা দিতে গিয়ে দুই শাসক দলের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক, স্বৈরাচারী, দুর্নীতিগ্রস্ত তকমা সেঁটে দিয়ে বক্তব্য রাখবেন বক্তারা। সীতারাম ইয়েচুরি, বিমান বসু, সূর্যকান্ত মিশ্র, ডি রাজা, অধীর চৌধুরী, মহম্মদ সেলিম, ভূপেশ বাঘেল, আব্বাস সিদ্দিকিরা সকলেই কমবেশি এক সুরে আক্রমণ শানাবেন নরেন্দ্র মোদি-মমতার বিরুদ্ধে। সমালোচনার ক্ষেত্রে দেশ ও রাজ্যে শিক্ষার পরিবেশ, বেকারদের কর্মসংস্থান, কৃষি ও কৃষক রক্ষা, শিল্প সংস্থান এবং গণতান্ত্রিক পরিবেশের মতো ইস্যুগুলিকেই এক্ষেত্রে প্রধান হাতিয়ার করবেন বক্তারা।

এদিকে সমাবেশের জন্য ২৪ ঘণ্টা আগে থেকেই উত্তরবঙ্গ-সহ দূরের জেলাগুলি থেকে লোক আসতে শুরু করেছে শহরে। শিয়ালদহ ও হাওড়া স্টেশনে এজন্য ক্যাম্প অফিস খুলেছে প্রধান উদ্যোক্তা সিপিএম। ব্রিগেডের একাংশ জুড়ে তৈরি অস্থায়ী চাঁদোয়ার তলাতেও রাত থেকেই আস্তানা নিয়েছেন কয়েক হাজার মানুষ। আর আজ রবিবাসরীয় সকাল থেকেই ব্রিগেডমুখী বাম জনতা।

এবারও স্বয়ং বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য (Buddhadeb Bhattacharya) ব্রিগেডে (Briged) আসার ইচ্ছে প্রকাশ করেছিলেন। তাই আলিমুদ্দিনের (Alimuddin) কর্তারা নড়েচড়ে বসেছিলেন। কিন্তু মেলেনি চিকিৎকের সবুজ সঙ্কেতের। বামেদের (Left Front) ব্রিগেডে আসছেন না রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। গত কয়েক দশকে বামেদের ব্রিগেড মানেই ‘আইকনিক লিডার’ বুদ্ধদেব। এবার তাঁকে ছাড়াই ভোটের মুখে অস্তিত্বের ও শক্তির পরীক্ষায় আজ নামতে হচ্ছে বামেদের। সঙ্গে দোসর কংগ্রেস (Congress) ও পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকির (Abbas Siddique) ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্ট (ISF).

আরও পড়ুন:বামেদের ব্রিগেডে আসছেন লালু-পুত্র তেজস্বী, তবে মন পড়ে কালীঘাটে দিদির বাড়িতে

Advt

spot_img

Related articles

লক্ষ্য ২০২৭! ২৫ নভেম্বর শুরু ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যানের দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ

ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ শুরু হচ্ছে আগামী ২৫ নভেম্বর থেকে। রাজ্যের সেচ ও জলপথ মন্ত্রী মানস...

রাজ্যের সমবায় ব্যাঙ্কে স্বচ্ছতা আনতে চালু অনলাইন অডিট ব্যবস্থা

রাজ্যের সমবায় ব্যাঙ্কগুলির আর্থিক লেনদেনে স্বচ্ছতা আনতে বড় পদক্ষেপ নিল রাজ্য সরকার। এ বার থেকে সমস্ত সমবায় সমিতি...

সরকারি প্রকল্পে স্বচ্ছতা বাড়াতে চালু হচ্ছে জিও ট্যাগিং ব্যবস্থা! নির্দেশিকা জারি নবান্নের 

সরকারি প্রকল্পের বাস্তবায়ন ও তদারকিতে আরও স্বচ্ছতা আনতে বড় পদক্ষেপ নিল রাজ্য সরকার। নবান্নের নির্দেশে এবার থেকে রাজ্যের...

মুখ্যমন্ত্রীকে কটূক্তি! ‘নারীবিদ্বেষী’ শান্তনু ঠাকুরের ইস্তফার দাবি তৃণমূলের

বিজেপি বাংলাকে সম্মান করে না। এই বিজেপি মহিলাদেরও সম্মান করে না, করতে জানেও না। সেটা আরও একবার প্রমাণ...