Sunday, August 24, 2025

বাদ, বদল, অপসারণ, অপ্রাসঙ্গিক সিপিএম সহ শরিক দলে ব্যাপক রদবদলের উদ্যোগ

Date:

Share post:

লোকসভায় শূন্য, বিধানসভায় শূন্য। রাজ্যে সিপিএম এবং বামফ্রন্ট এখন শূন্যতার গহ্বরে বিলীন হওয়ার জোগাড়। গণতান্ত্রিক কেন্দ্রীকতার নামে দলের মধ্যে অপরিণামদর্শী সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া নিয়ে প্রকাশ্যে ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন একের পর এক নেতা। শুধু সিদ্ধান্ত ভুল ছিল বলে আর পার পাওয়া মুশকিল বাম নেতৃত্বের। সর্বস্তরে চাপ বাড়ছে। ফলে কিছুদিনের মধ্যেই পদত্যাগ বা সরিয়ে দেওয়ার পর্ব শুরু হতে চলেছে সিপিএমের অন্দরে।

সিপিএমের পরিবর্তনবাদীদের অভিযোগ মূলত চারটি।

এক. আব্বাস সিদ্দিকির সঙ্গে জোট করা বাস্তবে হারিকিরি হয়েছে। মানুষ অবাক হয়েছেন, সিপিএমের মতো দল কী করে একটা সাম্প্রদায়িক দলের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধল।

দুই. মূল শত্রু কে, তা নির্ধারণে ব্যর্থ হওয়া। বিজেপিও শত্রু, আবার তৃণমূল কংগ্রেসও শত্রু। এই দ্বিচারিতা মানুষ নিতে পারেননি। দলেই যুক্তি ছিল, যে অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে তোলা হচ্ছে, সেই একই অভিযোগ তো এই ক’বছর আগে কংগ্রেসের বিরুদ্ধেও তোলা হতো। তাহলে কংগ্রেস কোন গঙ্গা জলে ধুয়ে শুদ্ধ হয়ে গেল!

তিন. এখনও সেই আশির দশকের প্রচারের সিস্টেমে আটকে রয়েছে দল। আধুনিকতা মানে শুধু নতুন বা তরুণ মুখ নয়, চিন্তা-চেতনা ও বাস্তবায়নে আধুনিকতা দরকার। তুমুল সমালোচনা সত্ত্বেও যা তৃণমূল কংগ্রেস করেছে। পিকের মতো পেশাদার পলিটিক্যাল স্ট্র‍্যাটেজিস্টকে দিয়ে দলের খোল নলচে বদলাতে পেরেছে। তাতে পোড় খাওয়া রাজনীতিবিদরা অসন্তুষ্ট হলেও সিদ্ধান্ত থেকে সরেনি শাসক দল।

আরও পড়ুন-সাংসদ পদে ইস্তফা দিলে জেতা অসম্ভব, দিল্লির চাপে বিধায়ক- শপথ নিলেন না নিশীথ-জগন্নাথ

চার. কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করা আর এক ভুল। কারণ, ১৯৭৭ সাল অবধি কংগ্রেস রাজ্যে কী করেছে, তা বয়স্করা জানেন। আবার সিপিএম ৩৪ বছরে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে যা করেছে, সেটাও মানুষ দেখেছেন। ফলে দুই দলের ভোটারদের অনেকেই বিরক্ত হয়ে হয় বিজেপি অথবা তৃণমূলকে ভোট দিয়েছেন। যাঁরা বিজেপির ধর্মীয় রাজনীতি পছন্দ করেননি, তাঁরা তৃণমূলকে ভোট দিয়েছেন। আবার যারা শাসক দলের মধ্যে সংখ্যালঘুপ্রীতি দেখেছেন, তাঁরা বিজেপিকে ভোট দিয়েছেন। ফলে বামেরা ২.৫%-এর নিচে, কংগ্রেসের ভোট আরও তলানিতে এসে ঠেকেছে। দরকার পড়ছে দূরবীনের।

এই পরিস্থিতিতে সিপিএমে এখন বদলের হাওয়া প্রবল। বিমান বসু দলের অন্দরে পদত্যাগ করতে চেয়েছেন। আর কিছুতেই দায়িত্বে থাকতে চান না। রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র এখনই নতুন প্রজন্মের হাতে দলের দায়িত্ব দিতে চান। প্রশ্ন হচ্ছে সূর্যকান্ত সরে গেলে কে রাজ্য সিপিএমের দায়িত্ব নেবেন? উঠে আসছে সুজন চক্রবর্তীর নাম। বয়স ৬১ হলেও সুজনকেই সামনে রাখার পরিকল্পনা। ফ্রন্ট চেয়ারম্যান হিসাবে আপাতত নাম নিয়ে নানা গুঞ্জন রয়েছে। পার্টি থেকে ছাত্র-যুবর দায়িত্বে থাকা রাজ্য কমিটির সদস্যদের সরানো হচ্ছে। আভাস, সৃজন, সায়নদীপ, ঐশী, ফুয়াদ হালিমদের সামনে রাখার চেষ্টা। সব মিলিয়ে খোল নলচে বদলে দেওয়ার চেষ্টা।

ইতিমধ্যে দলের ভোট স্ট্র‍্যাটেজি নিয়ে প্রকাশ্যে সরব হয়েছেন তন্ময় ভট্টাচার্য, কান্তি গাঙ্গুলী, অশোক ভট্টাচার্য, মানস মুখার্জি সহ একাধিক নেতৃত্ব। দল তাদের কাছে জবাব চাইলেও বহিষ্কার বা সাসপেনশনের পথে হাঁটতে চাইছে না সিপিএম।

সিপিএমের তিন শরিক দলও একই প্রক্রিয়ায় দল ঢেলে সাজাতে ব্যস্ত। দেখার বিষয় তাতে বাম আদৌ প্রাসঙ্গিক হয় কিনা!

Advt

spot_img

Related articles

বিহারে এত পাক নাগরিক! জানেই না প্রশাসন

বাংলার অরক্ষিত সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশের নাগরিকদের অনুপ্রবেশ নিয়ে চিৎকার করছেন অমিত শাহ। এবার সীমান্তে অমিত শাহের (Amit Shah)...

চলন্ত ট্রেনের ওপর ছিঁড়ে পড়ল বিদ্যুতের তার, আতঙ্কিত যাত্রীরা

বড়সড় ট্রেন দূর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা। সঠিক সময়ে ট্রেন দাঁড় না করালে রবিবার সকালেই ঘটে যেত এক ভয়ঙ্কর...

দরিদ্রতম মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, দেশে সবচেয়ে ধনী মুখ্যমন্ত্রী কে? রইল তালিকা

দেশে কোটিপতি মুখ্যমন্ত্রীদের ভিড়ে ব্যতিক্রম শুধু একজন। তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। বর্তমানে দেশে সবথেকে গরিব মুখ্যমন্ত্রী তিনি।...

ধর্ষিত মূক- বধির-বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন কিশোরীর পাশে নেই যোগী সরকার!

যোগীরাজ্যে(Yogi Adityanath) মূক ও বধির বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন কিশোরীর(Disabled Girl) নৃশংস ধর্ষণ (Brutal Rape)। পাশে দাঁড়ায়নি সরকার। ফলে মেয়েকে...