Sunday, August 24, 2025

দেবাঞ্জনকে জেরায় চাঞ্চল্যকর তথ্য: বাবা-মায়ের পরিচয় গোপন, অফিসে নকলের আড়ত

Date:

Share post:

তদন্তকারী আধিকারিকদের বিভ্রান্ত করছেন ভুয়ো আইএএস দেবাঞ্জন দেব। বাবা-মায়ের সম্পর্কেও ভুল তথ্য দিল সে! তাঁর দাবি, কসবার ভ্যাক্সিনেশন ক্যাম্প থেকে টিকা নিয়েছিলেন তাঁর বাবা-মা-মাসি। কিন্তু দেবাঞ্জনের মা অন্য কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, তিনি, তাঁর স্বামী মনোরঞ্জন দেব ও দেবাঞ্জনের বোন বেসরকারি হাসপাতাল থেকে ভ্যাকসিন নিয়েছেন। রুবির কাছে একটি বেসরকারি হাসপাতাল থেকে তাঁরা টিকা নিয়েছেন। দেবাঞ্জনের বাবা মনোরঞ্জন দেবের ইতিমধ্যেই ভ্যাকসিনের দুটি ডোজ নেওয়া হয়ে গিয়েছে। মা ও বোন একটি করে ডোজ নিয়েছেন। এমনকি দেবাঞ্জন দেব নিজেও বেসরকারি হাসপাতাল থেকেই ভ্যাকসিন নিয়েছিলেন।

সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই দেবাঞ্জনের অফিসের কম্পিউটারে পাওয়া গিয়েছে নকল কোভিশিল্ড-এর লেবেল তৈরির গ্রাফিক্স। দেবাঞ্জনের অফিসের কম্পিউটার হার্ডডিস্ক বাজেয়াপ্ত করেছেন তদন্তকারী আধিকারিকরা। সেখান থেকে আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিলতে পারে বলে মনে করছেন তাঁরা।

জানা গিয়েছে, শিয়ালদহ টাকি হাউজের ছাত্র ছিলেন দেবাঞ্জন দেব। চারুচন্দ্র কলেজ থেকে জুওলজিতে স্নাতক হন। এরপর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে জেনেটিক্সের একটি কোর্সে ভর্তি হয়েছিলেন, কিন্তু শেষ করতে পারেননি। এরপর বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিসট্যান্স এডুকেশন প্রোগামের একটি কোর্সে ভর্তি হলেও শেষ করেননি দেবাঞ্জন। সূত্রের খবর, গত বছর করোনা পরিস্থিতিতে দেবাঞ্জন স্যানিটাউজারের ব্যবসা শুরু করেন। সে সময় তিনি বাগড়ি মার্কেট থেকে মাস্ক, স্যানিটাউজার, পিপিই কিট কিনে এনে বিক্রি করতে শুরু করেন। তদন্তে জানা যায়, সেই স্যানিটাইজারও নকল।

আরও পড়ুন-‘সেই কালো দিন ভোলার নয়’, এমার্জেন্সির ৪৬ তম বর্ষে মোদি-শাহের নিশানায় কংগ্রেস

পুলিশ সূত্রে খবর, দেবাঞ্জনের বাবা ভাল সরকারি চাকরি করতেন। বোনও মেধাবী ছাত্রী। কিন্তু দেবাঞ্জন লেখাপড়া করে তেমন কিছু করতে পারেননি বলে দাবি তাঁর। এরপরই নাকি তিনি পরিকল্পনা করেন, এমন কিছু করার যা তাঁকে সহজে জনপ্রিয়তা এনে দিতে পারে। তা থেকেই ‘ভুয়ো’ আইএএস। পুলিশ সূত্রে খবর, জেরার মুখে দেবাঞ্জন জানিয়েছেন, তিনি আইএএস-এর ছদ্মবেশ ধরার আগে একটি ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিতে কাজ করতেন। সমাজসেবামূলক কাজকর্ম করার নামে বিভিন্ন জায়গা থেকে মোটা অঙ্কের টাকা তুলতেন। সেই টাকাতেই চলত অফিসের ভাড়া মেটানো, গাড়ির ভাড়া মেটানো, গাড়ির চালকের বেতন দেওয়া, নিজের নিরাপত্তা রক্ষী ও অফিসের কর্মীদের মাসিক বেতন দেওয়া।

জানা গিয়েছে, ২০০৭ সালে মাদুরদহে আসে দেবাঞ্জনের পরিবার। প্রতিবেশীদের তাঁর বাবা মনোরঞ্জন জানিয়েছিলেন, ছেলে (দেবাঞ্জন) ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ার সময় ভালো ইংরেজিতে অনুচ্ছেদ লিখেছিল। তাতে রাষ্ট্রপতি পুরস্কারও এনেছিল ঘরে। ছেলের আইএএস হওয়ার কথাও নাকি তাঁর বাবাই সকলকে জানিয়েছিলেন বলে পুলিশ সূত্রে খবর

 

spot_img

Related articles

‘নিখুঁত ভুলগুলি’, উৎপল সিনহার কলম

একটা দুঃখের কথা পথে ও বিপথে ঘুরে প্রত্যাখ্যাত হতে হতে গান হয়ে ওঠে ...একটি দুঃখের কথা পথে ও বিপথে ঘুরে প্রত্যাখ্যাত হতে হতে গান...

ষোলতেই ১৩০ কেজি! ছেলের খাবার জোগাতেই নাজেহাল বাবা-মা

মুর্শিদাবাদ জেলার সাগরদিঘি থানার কাবিলপুর পঞ্চায়েতের মথুরাপুর গ্রাম। এখানেই থাকেন দিনমজুর মুনশাদ আলি। তাঁর ছোট ছেলে জিশান আলি...

কবে থেকে শুরু জয়েন্টের কাউন্সেলিং? দিনক্ষণ জানিয়ে দিল বোর্ড

ফলপ্রকাশের পর এবার ১৫ দিনের মধ্যেই কাউন্সেলিং প্রক্রিয়া তথা ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ করবে জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ড। এবার কাউন্সেলিং...

ফলতা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ইলিশ উৎসব, পড়ুয়াদের জন্য পাতে ভাপা–ভাজা ইলিশ

বাজারে ইলিশের যা আগুন ছোঁয়া দাম তাতে উচ্চবিত্তদেরই পাতে ইলিশ জোটাতে হিমশিম খাওয়ার জোগাড়। কিন্তু সেই  দুর্মূল্যের বাজারেই...