Sunday, August 24, 2025

পথের জীবন ছেড়ে এবার খড়দহের বাড়িতে ফিরতে চান অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা ইরা বসু

Date:

Share post:

তিনি অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা। নাম ইরা বসু।ইদানিং থাকতেন ডানলপের ফুটপাথে।তাঁর আরও একটি পরিচয় সামনে আসতেই শোরগোল পড়ে যায়।রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের শ্যালিকা।এরপরই তাঁর নতুন ঠিকানা হয়েছিল লুম্বিনি মানসিক হাসপাতাল। খবর পাওয়া মাত্র তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তার ঘনিষ্ঠজনদের হাসপাতালে পাঠান ইরা বসুর বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখার জন্য । একজন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকাকে তার ঘরে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য সব রকমের সাহায্যের আশ্বাস দেন । শেষে নিজের ইচ্ছেতে সেই ঠিকানাও বদলে নিলেন ইরা বসু । সেখানে থাকতে গিয়েই খড়দহে ফেরার ইচ্ছেপ্রকাশ করেন তিনি।সেই সূত্রেই পানিহাটি পুরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিআইএম কাউন্সিলর সুদীপ রায়ের বাড়িতে আপাতত আশ্রয় হয়েছে তাঁর।

আরও পড়ুন- “বাচ্চা মেয়ে, প্রচারে আসার জন্য লাফালাফি করছে”, প্রিয়াঙ্কাকে কটাক্ষ ববির

কাগজে ইংরেজি স্বাক্ষর করে নতুন ঠিকানায় নিজের জীবন নতুন করে শুরু করতে চান খড়দহ প্রিয়নাথ বালিকা বিদ্যালয়ের জীবনবিজ্ঞানের প্রাক্তন শিক্ষিকা। বোনের পরিচয় নিয়ে মুখ খুলেছিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর স্ত্রী মীরা ভট্টাচার্য। বোনের কথা অস্বীকার তো করেনইনি, বরং জানিয়েছিলেন, পরিবারের সকলের অমতেই এমন জীবনযাত্রা স্বেচ্ছায় নিজে বেছে নিয়েছেন ইরা। তাঁর মন পরিবর্তন করতে তিনিও অপারগ।

ইরা বসু নিজে জানিয়েছেন, তাকে হুমকি দেওয়ার পরেই তিনি সল্টলেকের বাড়ি ছাড়েন। নিরাপত্তাজনিত কারনেই আর ফিরতে চাননা সল্টলেকের বাড়িতে। থাকতে চান খড়দহে।কে তাকে হুমকি দিয়েছে, কেন হুমকি দিয়েছে কোনও বিষয়েই মুখ খুলতে চাননি তিনি। বরং বলেছেন প্রয়োজনে ফের রাস্তায় থাকবেন।

ইরাদেবীকে যাঁরা কাছ থেকে ইদানীং দেখছেন, তাঁরা বলছেন, এবার কিছুটা স্বাভাবিকভাবেই খড়দহ ফিরতে চেয়েছেন ইরা। বেশ কয়েকজন এগিয়েও এসেছেন তাঁকে সাহায্য করতে। তবে, নিজের গচ্ছিত টাকায় বাকি জীবন কাটাতে চান প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের শ্যালিকা ইরাদেবী। চান না সরকারি সাহায্যও। তবু তিনি আপ্লুত তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যবহারে। শিক্ষিকা জানিয়েছেন, হাসপাতালে অভিষেক যাদের পাঠিয়েছিলেন তারা তাঁর সব কথা শুনে কথা দিয়েছেন, যত দ্রুত তার পেনশনের ব্যবস্থা তারা করবেন। এবং তিনি ভরসা রাখছেন তাদের কথায়।

দীর্ঘদিন তিনি ডানলপের রাস্তাতেই দিন রাত কাটিয়েছেন। ২০০৯ সাল পর্যন্ত প্রিয়নাথ বালিকা বিদ্যালয় জীবন বিজ্ঞানের শিক্ষিকা ছিলেন।তবে, আজ তাঁকে দেখলে বোঝা যাবে না কয়েকদিন আগেও ছেঁড়া পোশাকে পথে-ঘাটে ঘুরে বেড়াতেন তিনি। নিজেই দাবি করেছেন, স্বাভাবিক জীবনেই ফিরতে চান। ইরাদেবীর বর্তমান আচরণ অনেকটাই স্বাভাবিক বলে করেছেন সংশ্লিষ্ট সিপিআইএম কাউন্সিলরও।জানা গিয়েছে, চাকরি থেকে অবসরের পর প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের অভাবেই পেনশন পাননি তিনি। তবে, সুদীপবাবু জানিয়েছেন, সমস্ত কাগজপত্র জোগাড় করে ইরাদেবীকে পেনশন পাওয়ার ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে। তারপরে তিনি যেখানে খুশি থাকতে পারেন। ইরাদেবী নিজেও চান না, এক জায়গায় বদ্ধ হয়ে থাকতে।

একইসঙ্গে নিজের জীবন যে তিনি নিজের শর্তেই বাঁচবেন, তা আরও একবার স্পষ্ট করে বলেন, ‘আমাকে আপনারা যদি বলেন, আমি খুব একগুঁয়ে। তবে বলব, আমার নিজস্ব একটা মত আছে। আমি কোনও খারাপ কাজ করব না। আমার আত্মীয়, স্বজন, দিদি-দাদারাও সেটা জানে।’

 

advt 19

 

 

spot_img

Related articles

পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য ‘শ্রমশ্রী’ প্রকল্পে নাম নথিভুক্তি শুরু

পরিযায়ী শ্রমিকদের সুবিধার্থে এবার আরও এক পদক্ষেপ রাজ্য সরকারের। ‘আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান’ কর্মসূচির আওতায় দুয়ারে সরকার শিবিরেও...

‘নিখুঁত ভুলগুলি’, উৎপল সিনহার কলম

একটা দুঃখের কথা পথে ও বিপথে ঘুরে প্রত্যাখ্যাত হতে হতে গান হয়ে ওঠে ...একটি দুঃখের কথা পথে ও বিপথে ঘুরে প্রত্যাখ্যাত হতে হতে গান...

ষোলতেই ১৩০ কেজি! ছেলের খাবার জোগাতেই নাজেহাল বাবা-মা

মুর্শিদাবাদ জেলার সাগরদিঘি থানার কাবিলপুর পঞ্চায়েতের মথুরাপুর গ্রাম। এখানেই থাকেন দিনমজুর মুনশাদ আলি। তাঁর ছোট ছেলে জিশান আলি...

কবে থেকে শুরু জয়েন্টের কাউন্সেলিং? দিনক্ষণ জানিয়ে দিল বোর্ড

ফলপ্রকাশের পর এবার ১৫ দিনের মধ্যেই কাউন্সেলিং প্রক্রিয়া তথা ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ করবে জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ড। এবার কাউন্সেলিং...