Tuesday, November 11, 2025

Hooghly: ঘোষাল বাড়ির ঐতিহ্যবাহী পুজো ঘিরে শেষ মুহূর্তের ব্যস্ততা

Date:

Share post:

করোনা (Corona) থাবা বসিয়েছিল উৎসবের আনন্দে। কিন্তু এই বছর সব বাধা অতিক্রম করে নতুন রূপে সেজে উঠেছে বাঙালি। শারদীয়ার আগমনের প্রাক্কালে তাই চূড়ান্ত ব্যস্ততা প্রতিটি বাঙালি বাড়িতে। ব্যতিক্রমী নয় কোন্নগরের (Konnagar) ঘোষাল বাড়ি (Ghoshal Family)। ৫৬৭ তম বর্ষে পদার্পণ করতে চলেছে এই সাবেকি পুজো(Traditional Puja)।

বারোয়ারি বনাম বাড়ির পুজোর লড়াইটা বাঙালির চিরন্তন। হুগলির কোন্নগরের ঘোষাল বাড়ির পুজো অবশ্য কোনও প্রতিযোগিতায় নামে না। মায়ের সাবেকি রূপের আরাধনায় মেতে ওঠেন বাড়ির লোকজন। পুজোর দিনকে আনন্দমুখর করে তুলতে নানা সংস্কৃতি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেই মতো মহড়াও শুরু হয়েছে ঠাকুরদালানে। এ পুজোর সঙ্গে জড়িয়ে আছে উত্তরপাড়ার প্রাক্তন তৃনমূল বিধায়ক প্রবীর ঘোষালের নাম। মৃৎশিল্পীর সঙ্গে তুলির টান দিচ্ছেন তিনিও, কারণ এটা তাঁর বাড়ির পুজো। একদিকে চলছে মূর্তি তৈরির কাজ, অপরদিকে চলছে মহিষাসুরমর্দিনীর মহড়া। কথিত আছে ঘোষালরা জমিদারভুক্ত হওয়ার পর হাওড়া ও হুগলির বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রজারা দলে দলে উৎসবের দিনের আনন্দে সামিল হতে এই বাড়িতে আসতেন। পুজোর চার দিনে এই ঘোষাল বাড়িতে ভোজের পাত পড়ত। প্রজারা যে সব কাঁচা আনাজ, মাছ, নারকেল ইত্যাদি নিয়ে আসতেন তা সবই পূজোর জন্য নিবেদন করা হত। ব্রিটিশ পিরিয়ডে সাড়ে ৭০০ টাকা পুজোর খরচ হিসেবে বরাদ্দ করা হত। শুধু তাই নয়, এ বাড়ির পুজোর রীতি অনুসারে গঙ্গা থেকে ধরে আনা জেলেদের ইলিশ মাছ দিয়ে দশমীর দিন বাড়ির বিবাহিত মহিলারা পান্তা ভাত ও ইলিশ মাছ ভাজা খেতেন । তারপর মায়ের গঙ্গাবক্ষে বিসর্জন হত। পরিবারসূত্রে জানা যায় সম্রাট আকবরের সময়কালে এই পরিবার ভুক্ত হয়। পাপড়ি দুর্গা পুজোর প্রচলন শুরু। সেই থেকে আন্তরিকতা ভালোবাসা আর ঐতিহ্য মেনে বাড়ির প্রজন্মের পথ প্রজন্ম এভাবেই পুজো করে আসছেন। এই বছর ৫৬৭ তম বর্ষে পদার্পণ করছে পুজো।

প্রতিটি সাবেকি পুজোর মতো এই বাড়ির পুজোতেও বিশেষ কিছু নিয়ম আছে। এই ঘোষাল বাড়ির পুজোতে বাইরের কেনা মিষ্টি দিয়ে ভোগ নিবেদন হয় না। পঞ্চমীর দিন বাড়িতে তৈরি হয় নারকেল নাড়ু। যা দিয়ে পুজোর নৈবেদ্য এবং দশমীর দিন মিষ্টি মুখ করানো সবটাই হয়। উল্টোরথের দিন কাঠামো পুজো দিয়ে শুরু হয় মূর্তি তৈরির কাজ। প্রতিপদ থেকে শুরু হয় চন্ডীপাঠ। ঘোষাল বাড়ির পুজোয় ঢাকের বদলে ঢোল ও কাঁসর বাজানো হয়। জানা যায় বড় গুলাম আলী, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের মত শিল্পীরা এই বাড়ির পুজোতে অনুষ্ঠান করে গেছেন। রীতি অনুযায়ী দশমীর দিন সকালে ঘোষাল বাড়ির প্রতিমা সবার আগে বিসর্জন হয় তারপর একে একে এলাকার বাকি প্রতিমা নিরঞ্জন হয়।

 

spot_img

Related articles

ধর্মেন্দ্রর অবস্থার অবনতি, রাতেই হাসপাতালে ছুটলেন শাহরুখ-সলমন

বর্ষীয়ান বলিউড অভিনেতা ধর্মেন্দ্রর (Dharmendra) শারীরিক অবস্থার অবনতি। রাতেই ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে গেলেন শাহরুখ-সলমানরা (Shahrukh Khan - Salman...

সলমনই হামলার মাস্টারমাইন্ড? দিল্লি বিস্ফোরণে গ্রেফতার ব্যবহৃত গাড়ির মালিক

সাদা রঙের একটি হুন্ডাই আই–২০ গাড়ি ধীরে ধীরে এসে ট্রাফিক সিগন্যালের সামনে থামতেই মুহূর্তের মধ্যে ঘটে বিস্ফোরণ। সোমবার...

দিল্লি বিস্ফোরণের জের: কলকাতার সব থানাকে সতর্ক করেছে লালবাজার, গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে চলছে নাকা চেকিং

দিল্লির লালকেল্লার কাছে মেট্রো স্টেশনের এক নম্বর গেটের সামনে ভয়াবহ বিস্ফোরণের জেরে দেশের রাজধানীর পাশাপাশি হাই অ্যালার্ট (High...

দিল্লির বিস্ফোরণের ঘটনায় শোকপ্রকাশ প্রধানমন্ত্রীর! ঘটনাস্থলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, গ্রেফতার গাড়ির মালিক

দিল্লির বিস্ফোরণের ঘটনায় গ্রেফতার ১। বিষ্ফোরণ হওয়া গাড়ির মালিককে গ্রেফতার করল পুলিশ। প্রসঙ্গত, শনিবার সন্ধ্যায় লালকেল্লা মেট্রো স্টেশনের...