বউবাজারের বিপর্যয় দেখতে দিল্লি-বেঙ্গালুরু থেকে আনা হচ্ছে বিশেষজ্ঞদের, আজ থেকেই এলাকায় সহায়তা-শিবির

বউবাজারে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর কাজের পরিস্থিতি দেখতে দিল্লি এবং বেঙ্গালুরু মেট্রোর বিশেষজ্ঞদের আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে

বউবাজারে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর (East West Metro) বিপর্যয় খতিয়ে দেখতে দিল্লি (Delhi) ও বেঙ্গালুরু (Bengaluru) থেকে আনা হচ্ছে বিশেষজ্ঞদের। ‘ক্রস প্যাসেজে’র কাজ আপাতত বন্ধ। বিশেষজ্ঞদের দেখানোর পরে কাজ শুরু করা হতে পারে বলে ভাবনা। শনিবার, বৈঠকেও মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দেন, ভূমিরূপ খতিয়ে দেখেই তবে কাজ করতে হবে। এদিকে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) নির্দেশ মতো, মদন দত্ত লেনের বাসিন্দাদের সহায়তায় রবিবার থেকেই ক্যাম্প চালু গোয়েঙ্কা কলেজে।

বউবাজারে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর কাজের পরিস্থিতি দেখতে দিল্লি এবং বেঙ্গালুরু মেট্রোর বিশেষজ্ঞদের আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাঁরা সুড়ঙ্গ পরীক্ষা করে দেখবেন। সেখানে কাজ অনেকটাই হয়ে গিয়েছে। শুধু শিয়ালদহ থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত ২ কিলোমিটারের মধ্যে ‘ক্রস প্যাসেজ’-র কাজ বাকি। প্রতি ২০০ মিটার অন্তর ‘ক্রস প্যাসেজ’ তৈরি করতে হবে। মোট আটটির মধ্যে তিনটি ‘ক্রস প্যাসেজ’ তৈরি করা হয়ে গিয়েছে। কিন্তু চতুর্থটি তৈরির সময়ই বউবাজারের মদন দত্ত লেনের বিপর্যয় দেখা যায়। এই পরিস্থিতিতে ‘ক্রস প্যাসেজ’ কী ভাবে তৈরি হবে তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। মাটির নীচের জলস্তর থেকে সুড়ঙ্গে বারবার জল ঢুকে পড়ছে বলেই এই বিপত্তি – মত বিশেষজ্ঞদের। এর মধ্যে কী ভাবে এই প্রকল্প বাস্তবায়িত করা হবে সেটা জানতেই ভিন রাজ্য থেকে বিশেষজ্ঞ-দল আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এদিকে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পর বউবাজারে মেট্রো বিপর্যয়ে ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দাদের সাহায্যের জন্য এদিন থেকে গোয়েঙ্কা কলেজে ক্যাম্প খোলা হয়েছে। বিপর্যয়ের জেরে মদন দত্ত লেনের ১২টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দিশাহারা ২৮টি পরিবারের ১৮০ জন সদস্য। তাঁদের সংলগ্ন এলাকার বিভিন্ন হোটেলে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। তাঁদের সহায়তা করতে এলাকায় ক্যাম্প খোলার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই মতো গোয়েঙ্কা কলেজে শিবির তৈরি হয়েছে। বিভিন্ন সময় সেখানে থাকবেন পুলিশ, পুরসভা ও KMRCL-এর প্রতিনিধিরা। ক্ষতিগ্রস্তরা ক্যাম্পে গিয়ে নিজেদের সমস্যার কথা জানাতে পারবেন।

ইস্ট ওয়েস্ট মেট্রোর (East West Metro) কাজের জেরে শুক্রবার কাকভোরে মদন দত্ত লেন এলাকায় বেশ কয়েকটি বাড়িতে ফাটল দেখা যায়। এই বিপর্যয় নিয়ে শনিবার বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ নবান্নে বৈঠক হয়। ছিলেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim) ও মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী (Harikrisna Dwibedi), KMRCL কর্তৃপক্ষ। ভার্চুয়ালি উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই বৈঠকেই মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দেন ঘটনাস্থলে গিয়ে সরেজমিনে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে। কেন বারবার এই ফাটল দেখা যাচ্ছে? প্রশ্ন তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। এরপরেই তিনি বলেন, আলোচনা নয়, ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে। সেই মতো বৈঠক থেকে সরাসারি বউবাজার যান মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, মেয়র। সঙ্গে ছিলেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল। ছিলেন KMRCL-এর আধিকারিকরাও। বৈঠকে ছিলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরাও। ফিরহাদ বলেন, বউবাজারে মাটির প্রকৃতির জন্যই বারবার এই ঘটনা ঘটেছে। সেই কারণে বলা হয়েছে, আগে মাটি পরীক্ষা করে তবেই কাজ হাত দিতে হবে। ফাটল দেখা দেওয়ার পরে বাসিন্দাদের সরানোর থেকে আগেই পুরসভা ও কলকাতা পুলিশকে জানিয়ে কাজ করবে KMRCL। অন্তত ১৫দিন আগে জানাতে হবে। সেই সময়ই বাসিন্দাদের অন্যত্র সরিয়ে, তবে কাজে হাতে দিতে হবে। মদন দত্ত লেন এলাকার বাসিন্দাদের যাতে কোনও সমস্যা না হয়, তার জন্য পুলিশ-প্রশাসন সবসময় পাশে আছে বলে জানান মেয়র।

 

Previous article‘নেতাজি’কে শেষ শ্রদ্ধা সচিনের, স্মরণসভায় অখিলেশের পাশে থাকার বার্তা কংগ্রেস নেতার
Next articleইডির  নিরপেক্ষতা নিয়ে দরাজ সার্টিফিকেট  নির্মলার, পাল্টা তোপ কুণালের