বাংলায় বাম জমানার শেষ দিকটি ছিল সিপিএম (CPIM) হার্মাদদের স্বর্গরাজ্য। রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে খুন, ধর্ষণ লেগেই থাকতো। যার মধ্যে সিংহভাগ ঘটনার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত থাকতেন সিপিএমের তাবড় নেতা, মন্ত্রী, বিধায়ক, সাংসদরা। সেরকমই একটি নৃশংস রাজনৈতিক খুনের ঘটনা ঘটেছিল বাঁকুড়ার (Bankura) তালডাংরায়। প্রায় একযুগ পেরিয়ে যাওয়া সেই মামলায় এবার শাস্তি হল অপরাধীদের, বিচার পেল অসহায় পরিবার।

তালডাংরায় তৃণমূল কংগ্রেস (TMC) কর্মী খুনের অপরাধে প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক মনোরঞ্জন পাত্র সহ ৩ জনকে আমৃত্যু সশ্রম কারাদণ্ডের সাজা দিল আদালত। আজ, বৃহস্পতিবার সল্টলেকের এমপি-এমএলএ কোর্টের বিচারক এই সাজা ঘোষণা করেন। সিপিএম নেতা মনোরঞ্জন পাত্র ছাড়াও জিতেন পাত্র ও রমজান খানকে দোষীসাব্যস্ত করল বিধাননগর এমপি এমএলএ কোর্ট। ২০১০ সালের ২৯ জুন বাঁকুড়া জেলার তালডাংরার রাজপুর গ্রামে তৃণমূল কর্মী মদন খানকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল। ১২ বছর পর সেই মামলায় সাজা ঘোষণা করল আদালত।

এই মামলায় ২২ জনের নামে অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। তথ্য ও প্রমাণের ওপর ভিত্তি করে গতকাল, বুধবারই তিনজনতে দোষীসাব্যস্ত করা হয়। সেইমতো সাজা ঘোষণা হল বৃহস্পতিবার। অভিযোগ ছিল, মদন খানকে বারবার সিপিএমে যোগ দেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছিল। তিনি তা না মানায় খুন করা হয় বলেই অভিযোগ ওঠে।

ঘটনাটি ঘটেছিল ২০১০ সালের ২৯ জুন। বিকেল ৫ টা নাগাদ ওই তৃণমূল নেতার বাড়ির ভিতরে ঢুকে গুলি চালানোর অভিযোগ উঠেছিল। পরিবারের অভিযোগ ছিল, সিপিএম আশ্রিত দুষ্কৃতীরা বন্দুক, পিস্তল, বোমা, ভোজালি নিয়ে এসে তৃণমূলকর্মী মদন খানকে আকস্মিক আক্রমণ করে। তৃণমূল কর্মীকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হলে, রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন মদন খান। এরপরই ওই বাড়িতে বোমাবাজি চালানোর অভিযোগ ওঠে দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। তারপর এলাকা ছেড়ে পালায় তারা। অভিযোগের ভিত্তিতেই মামলা হয়। সেই সময় ওই এলাকায় সিপিএমের বিধায়ক ছিলেন মনোরঞ্জন পাত্র।

মদন খানের ছেলে ইসমাইল খানের অভিযোগ ছিল, সিপিএমের যোগ দিতে চাপ দেওয়া হলেও সেই সময় তা মানতে রাজি হননি মদন। ঘটনার দিনও বাড়িতে এসে সেই একই চাপ দেওয়া হয়েছিল বলে দাবি করেন ছেলে। বৃহস্পতিবার এই মামলায় সাজা ঘোষণা করে আদালত।
