বাংলা পক্ষর আয়োজনে কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলা প্রাঙ্গণের এস বি আই অডিটোরিয়ামে মঙ্গলবার ‘বাঙালি জাতীয়তাবাদ ও বাঙালির পুঁজি’ শিরোনামে একটি আলোচনাসভা ও একটি বই প্রকাশ অনুষ্ঠান হল।
এই আলোচনা সভায় বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন লেখক ও বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারী, প্রখ্যাত সাহিত্যিক অমর মিত্র, চলচ্চিত্র প্রযোজক রাণা সরকার, চন্দ্র কেমিক্যাল (ডেনড্রাইট) -এর কর্ণধার, শিল্পপতি অভিষেক আঢ্য এবং বাংলা পক্ষর সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক(ড:) গর্গ চট্টোপাধ্যায়। আলোচনা সভার পর বাংলা পক্ষর নিজস্ব বই “যা বাংলার, তা বাঙালির” প্রকাশ করা হয়।

বাঙালি জাতীয়তাবাদের সাথে বাঙালি পুঁজির সম্পর্ক, পুঁজির সাথে বই কেনার, বাঙালি প্রকাশনা বড় হওয়ার সম্পর্ক, বাঙালির স্বদেশী, বাঙালির ব্যবসার ভবিষ্যত ইত্যাদি বিষয় প্রতিটা বক্তার বক্তব্যে উঠে আসে।
বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারী বারবার ছোটো ব্যবসায় বাঙালি পুঁজির কথা বলেন৷ নিম্নবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত বাঙালি যাতে ফুটপাত থেকে সমস্ত ছোটো ব্যবসা শুরু করেন, সে বিষয়ে আগ্রহী হতে অনুরোধ জানান। বহিরাগতরা শহরাঞ্চল গুলোর ফুটপাত দখল করে নিয়েছে। সেটা পুনরুদ্ধারের কথা বলেন।

চলচ্চিত্র প্রযোজক রানা সরকার একটি গুরুত্বপূর্ণ আঙ্গিক তুলে ধরেন। ব্যবসায়ীরা বাঙালি সমাজে কম সম্মান পায়, কবি-সাহিত্যিক-শিল্পী- শিক্ষকরা সম্মান পেলেও পুঁজিকে সারাক্ষণ নেগেটিভ চরিত্র হিসাবে তুলে ধরা হয়৷ এই চেতনার পরিবর্তন জরুরী বলে তিনি সোচ্চার হোন।

স্বনামধন্য সাহিত্যিক অমর মিত্র বলেন বাঙালির নতুন প্রজন্ম বই ব্যবসায় এগিয়ে আসছে, এটা খুবই শুভ লক্ষণ। করোনা পরবর্তীকালে বাঙালি প্রকাশনা সংস্থা অনেক বেড়েছে, এবার বইমেলায় প্রচুর নতুন বই প্রকাশন সংস্থাও আছে৷ বাংলায় বইয়ের জগতে এখনও বাঙালির আধিপত্য আছে।

শিল্পপতি অভিষেক আঢ্য বাঙালিকে ব্যবসা করতে এগিয়ে আসত আহ্বান জানান৷ বাঙালি এক হলে কিভাবে বাঙালি ব্যবসায় বড় হবে, সে জিনিস সুন্দর ভাবে তিনি তুলে ধরেন।
বাংলা পক্ষর সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক গর্গ চট্টোপাধ্যায় বাঙালি জাতীয়তাবাদের সাথে বাঙালি পুঁজির সম্পর্ক খুব সুন্দর ভাবে উপস্থাপনা করেন৷ বাংলা পক্ষ বাঙালি ব্যবসায়ীদের নিজস্ব নেটওয়ার্ক তৈরির লক্ষ্যে কাজ করছে বলে তিনি জানান। যাতে টেন্ডার বাঙালি পায়, পুঁজি বাঙালির হয়-সেই কথা তুলে ধরেন। বাংলায় যতক্ষণ না বাঙালি পুঁজির আধিপত্য স্থাপিত হয়, বাঙালি ততক্ষণ দাস হয়ে থাকবে। আচার্য্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়ের পথ বাঙালিকে ধরতেই হবে, ব্যবসা করতেই হবে৷ তার জন্য সব দলকে সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে।

আলোচনার শেষে বাংলা পক্ষর নিজস্ব বই “যা বাংলার, তা বাঙালির” বইটি প্রকাশিত হয়৷ বইটিতে বাঙালির বঞ্চনা, বাঙালির উপর আক্রমণ, বাঙালি জাতীয়তাবাদ, হিন্দি সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে বাংলা পক্ষর লড়াই নিয়ে লেখা এই বইটি।

আরও পড়ুন- Mid Day Meal : স্কুলে কিচেন গার্ডেন, সফরে রাজ্যের ভূমিকায় সন্তুষ্ট কেন্দ্রীয় দল
