“কেন দালাল বলব না?” যুক্তি দিয়ে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়কে তোপ কুণালের

সুপ্রিম স্থগিতাদেশের পরও সিবিআইয়ের(CBI) তরফে নোটিশ পাঠানো হয়েছে তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে(Abhisekh Banerjee)। এই ইস্যুতেই সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে(Abhijit Gunguly) বেলাগাম আক্রমণ শানালেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ(Kunal Ghosh)। যুক্তিসহ প্রশ্ন তুললেন, “কেন তাঁকে(অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে) বিজেপি, সিপিএম, কংগ্রেসের দালাল বলব না?”

এদিন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নাম নিয়ে কুণাল ঘোষ বলেন, “মাননীয় মিস্টার গাঙ্গুলি, বিচারব্যবস্থার উপর আমাদের পূর্ণ আস্থা আছে। আমরা মানি আদালত আছে বলে সমাজ দাঁড়িয়ে আছে। এতজন বিচারপতি নীরবে কাজ করে যাচ্ছেন। কিন্তু একজন চেয়ারকে অপব্যবহার করছেন, ব্যক্তিগত প্রচারের স্বার্থে রাজনৈতিক বার্তা দিচ্ছেন।” এরপরই সুর চড়িয়ে কুণাল বলেন, “অভিষেক কোনও বক্তৃতা করেছেন তার পরদিন কোনও অভিযুক্ত কোনও বক্তব্য রেখেছেন তার ভিত্তিতে মাননীয় বিচারপতি দুটোর মধ্যে আঁতাত দেখছেন। এবার আমি বলছি। কংগ্রেস-সিপিএম-বিজেপি বলছে মাথাকে ধরতে হবে। বিচারপতিও তাই বলছেন। ওই দুই বক্তব্যে মিল থাকলে এই দুই বক্তব্যেও মিল রয়েছে। তাহলে কেন ওনাকে কংগ্রেস-সিপিএম-বিজেপির দালাল বলব না? বিচারপতি গাঙ্গুলি আপনার ভূমিকা নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা দরকার। কংগ্রেস-সিপিএম-বিজেপির সঙ্গে আপনার কথা কীভাবে মিলে যাচ্ছে? যদি আপনি অন্যের পরীক্ষা নিতে চান তাহলে আগে নিজে অগ্নিপরীক্ষা দিন। আপনার কথাটা বিকাশবাবু বলছেন না কি আপনাকে আপনার আইনের গুরুদেব বিকাশবাবুই এগুলো শিখিয়ে দিচ্ছেন? অন্যের বেলায় তদন্তের দরকার, আর আপনার বেলায় সেটা আদালত অবমাননা!”

এরপর সরাসরি অভিযোগ তুলে কুণাল আরও বলেন, “অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের একের পর এক মন্তব্য তদন্তকে প্রভাবিত করছে। প্রথমে উনি বললেন, তদন্ত সিবিআই করবেন। এরপর ওনার তদন্ত পছন্দ হল না সুতরাং অফিসার বদল করো। তারপর বললেন সিবিআইয়ের হয়ে উকিল কে দাঁড়ায়! অর্থাৎ ওনার পছন্দ মতো তদন্তকারী এজেন্সি হবে। তদন্তকারী অফিসার হবে এবং আইনজীবীও হবে। এটা হচ্ছেটা কী? চাকরি দুর্নীতিতে অভিযুক্ত প্রসন্ন রায়ের বাড়ি দিলীপ ঘোষের দলিল পাওয়া গেল কেন বিচারপতি নির্দেশ দিচ্ছেন না দিলীপ ঘোষকে গ্রেফতারের? ওনার ‘উইশলিস্ট’ অভিষেক। বিজেপির টার্গেট অভিষেক, এজেন্সির টার্গেট অভিষেক, আদালতের টার্গেট অভিষেক, কংগ্রেস-সিপিএমের টার্গেট অভিষেক। আর সেটা নিয়ে বলতে গেলে আদালত অবমাননা! এর মানে কী?”

উল্লেখ্য, গত ২৯ মার্চ শহিদ মিনারের সভা থেকে অভিষেক দাবি করেছিলেন, সারদা মামলায় হেফাজতে থাকার সময় মদন মিত্র এবং কুণাল ঘোষকে তাঁর নাম নিতে বলেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। ঘটনাচক্রে, কুন্তলও তার পরে একই অভিযোগ করেন। এর প্রেক্ষিতেই হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণ, ওই সভায় অভিষেকের মন্তব্যের সঙ্গে কুন্তলের চিঠির কোথায় সাযুজ্য রয়েছে, সেই বিষয়টি খতিয়ে দেখতে হবে। সেই প্রসঙ্গেই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদ করার কথা বলেন। যদিও হাইকোর্টের সেই নির্দেশের উপর এদিন স্থগিদেশ দেয় শীর্ষ আদালত। তারপরও অভিষেককে সমন পাঠায় সিবিআই। এই ঘটনায় আদালত অবমাননার অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল।

Previous article১০৯ দিন পরে জামিন মঞ্জুর সাকেত গোখলের
Next articleজনস্বার্থ মামলা, কাটল না মানিকতলা বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন জট