বিশ্বের উষ্ণতম(Global Warming) বছরগুলির মধ্যে অন্যতম ছিল 2022 সাল। রেকর্ড অনুযায়ী যা পৃথিবীর পঞ্চম উষ্ণতম বছর। আর এই বছর বিশ্বের গড় তাপমাত্রা বেড়েছিল ১.১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ‘ওয়ার্ল্ড আর্থ ডে’-এর(World Earth day) ঠিক আগে ৫৫ পাতার এমনই রিপোর্ট প্রকাশে আনলো ওয়ার্ল্ড মেটেরোলজি অর্গানাইজেশন(world meteorology organisation)।


রাষ্ট্রসঙ্ঘের এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বজুড়ে প্রাণঘাতী বন্যা খরা তাপপ্রবাহের কারণে বহু অর্থ ব্যয় করা হয়েছে। কিন্তু ক্রমাগত পৃথিবীর তাপমাত্রা বেড়ে চলায় কোন কিছুতেই তা প্রতিহত করা যায়নি। আন্টার্টিকার সমুদ্রের বরফ ও ইউরোপীয় আল্পস হিমবাহ দ্রুত গলছে। যা অত্যন্ত আশঙ্কার বিষয়। রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০২২ সালে পূর্ব আফ্রিকায় ক্রমাহত খরা, পাকিস্তানের ভয়ঙ্কর বন্যা আর চিন ও ইউরোপের দেশগুলিতে তাপমাত্রার বৃদ্ধি কয়েক কোটি মানুষের জীবনে প্রভাব ফেলেছে। তথ্য অনুযায়ী ২০২২ সালে রেকর্ড প্রবাহ ছিল চিনে। তার জেরে চিনের গড় তাপমাত্রাও বেড়েছে ০.০৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পাশাপাশি আফ্রিকার খরা সোমালিয়া ও ইথিওপিয়াতে ১.৭ মিলিয়নেরও বেশি মানুষকে গৃহচ্যুত করেছে। পাকিস্তানের বিধ্বংসী বন্যা দেশের এক তৃতীয়াংশ এলাকায় ভাসিয়ে দিয়েছে। যার জেরে ৪ মিলিয়ন মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, এমনটা যদি চলতে থাকে তাহলে প্রাকৃতিক তাণ্ডব আগামী ২০৬০ সাল পর্যন্ত চলতে থাকবে। দুষণের ফলে তাপমাত্রা বাড়বে। তবে রিপোর্টে সতর্ক করে বলা হয়েছে, ইতিমধ্যেই তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে বিশ্বের বড়বড় হিমবাহগুলি গলতে শুরু করেছে। যা সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়িয়ে দিয়েছে। এটা অত্যন্ত খারাপ লক্ষণ বলেও রিপোর্টে সতর্ক করাহ য়েছে।

রাষ্ট্রসঙ্ঘের এই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, অ্যান্টার্কটিকায় বরফ গত জুন ও জুলাই মাসে অনেকটাই গলে গেছে। যা সমুদ্রের উষ্ণতা বাড়িয়ে দিয়েছে। পাশাপাশি সমুদ্রপৃষ্ঠ ৫৮ শতাংশ সামুদ্রিক তাপপ্রবারের সম্মুখীন হয়েছিল। এছাড়াও রিপোর্ট বলছে এই বিশ্ব উষ্ণায়নের জেরে হিমবাহের মাত্রা গত এক বছরে ১.৩ মিটার কমে গিয়েছে। বিশ্বের ইতিহাসে যা প্রথমবার। হিমবাহ গলে যাওয়ায় সমুদ্রের তাপমাত্রা রেকর্ড বেড়েছে। রিপোর্ট বলছে, ২০১৩ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত সমুদ্রের জলস্তরের উচ্চতা বেড়েছে ৪.৬২ মিলি মিটার। পরিস্থিতি যেভাবে চলতে থাকলে আগামী দিনে ভয়াবহ বন্যা দেখবে একাধিক দেশ। রিপোর্টে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, গুরুতর এই পরিস্থিতি সামাল দিতে উপায় একটাই তা হল বিশ্বের তাপমাত্রা কমিয়ে আনা। এর জন্য কার্বন নিঃসরণ কমাতে হবে। তবে পৃথিবীর অধিকাংশ দেশ এখনো এ বিষয়ে কোনো রকম উদ্যোগ নেয়নি।














