উত্তপ্ত মণিপুর!বন্ধ ইন্টারনেট পরিষেবা! মোদির কাছে সাহায্যের আর্জি মেরি কমের

দফায় দফায় পুলিশ এবং আদিবাসীদের সংঘর্ষে উত্তপ্ত মণিপুর। বুধবার এই অশান্তির মাত্রা চরমে পৌঁছয়। দিনভর অশান্তির জেরে প্রশাসনের তরফে মণিপুরের আটটি জেলায় কার্ফু জারি করা হয়। গোটা রাজ্যেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবা। আগামী পাঁচদিন এই ইন্টারনেট বন্ধ থাকবে বলে রাজ্য সরকারের তরফে খবর।

আরও পড়ুন:একসঙ্গে মালদহ-মুর্শিদাবাদের প্রশাসনিক সভা করছেন মুখ্যমন্ত্রী, মূল ইস্যু ভাঙন

বিগত কয়েক সপ্তাহ ধরেই চলছিল অশান্তি।মেইটেই জাতিকে উপজাতি সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত করার প্রতিবাদে বুধবার মণিপুরের অল ট্রাইবাল স্টুডেন্ট ইউনিয়নের তরফে চুরাচন্দ্রপুরের তোরাবাঙ্গ এলাকায় আদিবাসী ঐক্য মিছিলের ডাক দেওয়া হয়েছিল।এই মিছিলকে কেন্দ্র করে নতুন করে ছড়িয়ে পড়ে হিংসা। বহু এলাকায় হাতাহাতি, মারধর, দোকানপাট ভাঙচুর, গাড়িতে আগুন লাগানোর মতো ঘটনা ঘটে। তোরবাঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভকারীদের টায়ার ও অন্যান্য জিনিস পুড়িয়ে প্রতিবাদ করতে দেখা যায়। অন্যদিকে,ইম্ফল থেকে ৫৮ কিলেমিটার দূরে নাগা অধ্যুষিত সেনাপতি শহরেও জোর করে বাজারপাট ও গণপরিবহন বন্ধ  করে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে।

পরিস্থিতি এতটাই উদ্বেগজনক যে মেরি কমের মতো আন্তর্জাতিক মানের অ্যাথলিটদেরও অসহায় হয়ে কেন্দ্র সরকারের কাছে হস্তক্ষেপের আবেদন জানাতে হচ্ছে। মেরি কম এদিন প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে টুইটে লিখেছেন, “আমার রাজ্য মণিপুর জ্বলছে। দয়া করে সাহায্য করুন।” নিজের টুইটে তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংকে ট্যাগ করেন।

এদিকে, বৃহস্পতিবার সকালে মণিপুর সরকারের তরফে একটি বিবৃতি জারি করে জানানো হয়, মেইটেই বা মেইটেই জাতিকে উপজাতি সম্প্রদায়েক অন্তর্ভুক্ত করা ঘিরে অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন মণিপুরের তরফে যে মিছিলের আয়োজন করা হয়েছিল, সেই মিছিলে সামিল যুবকদের মধ্যে সংঘর্ষের জেরে আগামী পাঁচদিনের জন্য ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হল। বেশ কিছু জেলায় অনির্দিষ্টকালের জন্য কার্ফু জারি করা হয়েছে। ডিরেক্টর জেনারেল অব পুলিশ সি ডউঙ্গেল জানান, বিষ্ণুপুর ও চুরাচন্দ্রপুরে পরিস্থিতি অত্যন্ত জটিল ও উত্তপ্ত।

প্রসঙ্গত, মণিপুরে অশান্তির মূল কারণ মেটেই জনজাতির সঙ্গে আদিবাসীদের সংঘাত। মণিপুরের মেইটেই জনজাতিকে তফসিলি উপজাতির তকমা দেওয়ার দাবি দীর্ঘদিনের। মণিপুরের বিজেপি সরকার সেই দাবি মেনে নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে। তাতেই ক্ষুব্ধ কুকি-সহ অধিকাংশ আদিবাসী সংগঠন। তাদের বক্তব্য, মেইটেইরাও যদি তফসিলি উপজাতির স্বীকৃতি পেয়ে যায়, তাহলে আদিবাসীদের অধিকার ক্ষুণ্ণ হবে। তাছাড়া, মণিপুরের বিজেপি সরকার স্থানীয় বনাঞ্চলগুলিতে সমীক্ষা চালাচ্ছে। আদিবাসীদের আশঙ্কা, সরকার এবার বনভুমি ধ্বংস করতে চলেছে। তার চেয়েও তাৎপর্যপূর্ণভাবে গত কয়েক মাসে সেরাজ্যে অন্তত তিনটি গির্জা ভেঙেছে প্রশাসন। সরকারের দাবি, ওই গির্জাগুলি ছিল বেআইনি। সরকারের এই পদক্ষেপে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে আদিবাসী খ্রিস্টানরা।