Tuesday, May 13, 2025

‘সিবিআইয়ের রিপোর্টে টাকা লেনদেনের কথা নেই, তাহলে চাকরি বাতিল কেন?’সুপ্রিম কোর্টে প্রশ্ন আইনজীবীর

Date:

Share post:

প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গত ৩ মে সুপ্রিম কোর্টে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিয়েছে সিবিআই। নিয়োগে অনিয়ম উল্লেখ করে সেখানে ২৭০ জনের একটি তালিকা রয়েছে। কিন্তু সেখানে তাঁদের নাম নেই। তাই কলকাতা হাইকোর্ট কেন তাঁদের চাকরি বাতিল করল, আইনজীবী মারফৎ সেই সওয়াল এদিন খাড়া করলেন চাকরি হারানো ২৬৯ জন প্রাথমিক শিক্ষক। চাকরি ফিরে পেতে সিবিআইয়ের ২৮ পাতার তদন্ত রিপোর্টকেই হাতিয়ার করলেন প্রাথমিক শিক্ষকরা। যার বিরোধিতা করতে পারল না কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাও।

আরও পড়ুন:২০১১ থেকে প্রাথমিক নিয়োগ সংক্রান্ত রিপোর্ট তলব শিক্ষা পর্ষদের

২০১৪ সালের টেটে (টিচার এলিজিবিলিটি টেস্ট) ২০১৭ সালের নিয়োগ নিয়ে এদিন সওয়াল তোলেন আইনজীবী।প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি অনিরুদ্ধ বসু এবং বিচারপতি সুধাংশু ধুলিয়ার বেঞ্চে শুনানি চলছে। আজও চলবে। বুধবার শুনানিতে চাকরিহারা শিক্ষকদের আইনজীবী পি এস পাটওয়ালি এবং মীনাক্ষি অরোরা বলেন, ‘ঘুষ দিয়ে চাকরি মিলেছে, এমন রিপোর্ট তো দেয়নি সিবিআই। কোথাও কোনও টাকার লেনদেনের কথা বলা নেই। তাহলে চাকরি যাবে কেন? তাছাড়া যে ওএমআর (ওপটিক্যাল ম্যাগনেটিক রিডার)  শিটের ভিত্তিতে ২৬৯ জনের চাকরি বাতিল করেছে হাইকোর্ট, সেই একই ডিজিটাল ওএমআর শিট দেখে কী করে ১৮৬ জন নতুনকে নিয়োগ নির্দেশ দেওয়া হল?’

যা শুনে কিছুটা বিস্মিত হন বিচারপতি সুধাংশু ধুলিয়া। শুনানির পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেন, ‘একজন ৬ নম্বর পেয়ে ৯০-এ পৌঁছলে সেটা যোগ্য মনে করছেন হাইকোর্টের সিঙ্গল জাজ। অথচ একজন ১ নম্বর পেয়ে ৯০ পেলে অযোগ্য বলা হচ্ছে কোন যুক্তিতে?’ সিবিআই এ ব্যাপারে কী করছে, জানতে চায় সুপ্রিম কোর্ট। এর উত্তরে কোনও যুক্তিগ্রাহ্য ব্যাখ্যা দিতে পারেননি সিবিআইয়ের আইনজীবী এস ভি রাজু । তিনি বলেন, ‘আমরা মাইক্রো বা ম্যাক্রো নয়, ন্যানো লেভেলে তদন্ত করছি।’


আইনজীবী পি এস পাটওয়ালিয়া এবং জয়দীপ মজুমদার বলেন, ‘১৫০ নম্বরের পরীক্ষায় ৯০ পেলে পাশ। আমার মক্কেলরা পেয়েছিল ৮৯। প্রশ্নপত্রে ভুল থাকায় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ পরে ১ নম্বর অতিরিক্ত দেয়। ফলে যোগ্য হতেই মিলেছে চাকরি। তা সত্ত্বেও হাইকোর্ট ২৬৯ জনের চাকরি বাতিল করেছে।’ এ ব্যাপারে চাকরিহারাদের পাশে দাঁড়ান পর্ষদের আইনজীবী জয়দীপ গুপ্ত এবং কুণাল চট্টোপাধ্যায়। বলেন, ‘পর্ষদের সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য ২০২২ সালের অক্টোবর থেকে জেলে। তাঁর বিরুদ্ধে সিবিআ‌ই তদন্ত করছে, করুক। কিন্তু তার কুপ্রভাব চাকরির ওঁদের উপর পড়বে কেন?’ যদিও সিবিআ‌ই রিপোর্টে উল্লেখ, দু’‌জনের চাকরির ক্ষেত্রে অনিয়ম হয়েছে বলেই মেনে নিয়েছে পর্ষদ। পর্ষদের আইনজীবী বলেন, ‘উর্দু মাধ্যমে পরীক্ষা দিয়ে ফেল করেছিলেন ওই দুজন। কিন্তু বাংলায় প্রশ্ন ভুলের ফলে যারা অতিরিক্ত ১ নম্বর পেয়েছেন, সেই সুবিধা পেয়ে গিয়েছেন ওই দুজনও। চাকরিও পেয়েছেন। ওটা সামান্য ভুল হয়ে গিয়েছে।’ যা শুনে শীর্ষ আদালতের মন্তব্য, ‘এটা মোটেই সামান্য ভুল নয়। এ তো চাকরি না পাওয়া যেসব যোগ্য প্রার্থী মামলা করেছেন, তাঁদের অভিযোগই মজবুত হচ্ছে।’

 

 

spot_img

Related articles

রেকর্ড রূপান্তরকামীদের! সিবিএসই দশম-দ্বাদশের ফল প্রকাশ, এগিয়ে মেয়েরাই 

একইসঙ্গে প্রকাশিত হল সিবিএসই দশম ও দ্বাদশের ফল। পরীক্ষা শেষ হওয়ার ৩৯ দিনের মাথায় প্রকাশিত হল সেন্ট্রাল বোর্ড...

ঐতিহাসিক ১৩ মে! ১৪ বছরে মা-মাটি-মানুষের সরকার

১৩ মে। ইতিহাস গড়ার সেই অবিস্মরণীয় দিনের ১৪ বছর পূর্ণ হল। ২০১১ সালের এই দিনেই বাংলার রাজনীতিতে এক...

বাংলাদেশে নিষিদ্ধ আওয়ামী লিগ: গণতন্ত্রে কোপ, দাবি ভারতের বিদেশমন্ত্রকের

অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে একাধিক স্বৈরাচারী পদক্ষেপ দেখেছে বাংলাদেশ। তাতে সর্বশেষ সংযোজন সাম্প্রতিক অতীতের সবথেকে বড় রাজনৈতিক দলের রেজিস্ট্রেশন...

দিন পনেরো আগেই কথা হয়েছে ছেলের সঙ্গে: শোকস্তব্ধ প্রীতমের বাবা রাজা দাশগুপ্ত

একজন দিলীপ ঘোষ। যিনি রিঙ্কু মজুমদারকে বিয়ে করার পরে আপন করে নিয়েছিলেন তাঁর পুত্র সৃঞ্জয় দাশগুপ্ত ওরফে প্রীতমকে...