তাঁর আবেদনে চাকরি গিয়েছিল রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পরেশ অধিকারীর কন্যা অঙ্কিতা অধিকারীর। কিন্তু ভুল তথ্য দিয়ে অঙ্কিতার জায়গায় চাকরি পেয়েছিলেন ববিতা সরকার। এ বার কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে চাকরি হারালেন সেই ববিতা।ববিতার ভুল তথ্য দেওয়ার ঘটনাকে ‘দুর্ভাগ্যজনক’ বলে মন্তব্য করেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। মধ্যশিক্ষা পর্ষদকে ববিতার চাকরি বাতিল করার নির্দেশ দেন তিনি। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ ববিতার চাকরি পাবেন অনামিকা রায়। স্কুল সার্ভিস কমিশনকে (এসএসসি) অনামিকাকে চাকরির সুপারিশপত্র দিতে হবে বলেও জানিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। নির্দেশ, অনামিকাকে বাড়ির কাছে কোনও স্কুলে চাকরির সুপারিশ দিতে হবে। তিন সপ্তাহের মধ্যে এই নির্দেশ কার্যকর করার নির্দেশও দিয়েছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।

আরও পড়ুন:ববিতার চাকরি কি থাকবে? মঙ্গলবারের রায়ের দিকে নজর সবার
এদিন বিচারপতি বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন,‘ববিতা সরকারকে চাকরিতে বহাল রাখা উচিত নয়। কারণ তিনি স্কুল সার্ভিস কমিশনের কাছে তাঁর প্রাপ্ত নম্বর সম্পর্কে সঠিক তথ্য দেননি।অঙ্কিতা অধিকারীর চাকরি বাতিলের সময় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছিলেন, চাকরিকাল যাবৎ অঙ্কিতা যে বেতন পেয়েছেন সেটা ফেরত দিতে হবে। সেই টাকা পাবেন ববিতা । কিন্তু যখন ববিতার চাকরির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে, তখন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দেন, ববিতাকে প্রাপ্য টাকা হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে জমা রাখতে হবে।
শিলিগুড়ির ববিতার চাকরি বাতিলের দাবিতে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন আর এক এসএসসি পরীক্ষার্থী অনামিকা রায়। অভিযোগ, স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)-এর কাছে আবেদন করার সময় ববিতার স্নাতকস্তরের শতকরা নম্বর বাড়িয়ে দেখানো হয়েছে। যার ফলে তাঁর ‘অ্যাকাডেমিক স্কোর’ বেড়ে গিয়েছে। সেখান থেকেই তৈরি হয়েছে যাবতীয় জটিলতা। ববিতার আবেদনপত্র অনুযায়ী, স্নাতক স্তরে ৮০০ নম্বরের মধ্যে ৪৪০ নম্বর পেয়েছিলেন ববিতা। অর্থাৎ, শতকরা হিসাবে ৫৫ শতাংশ। অথচ,স্নাতক স্তরের প্রাপ্ত নম্বরের শতকরা হিসাব ৬০ শতাংশ বা তার বেশি উল্লেখ করা হয়েছে আবেদনপত্রে। অর্থাৎ,‘ভুল’ সেখানেই! যে কারণে ববিতার ‘অ্যাকাডেমিক স্কোর’গণনায় ভুল হয়েছে। নিয়োগের দাবিতে আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত থাকা চাকরিপ্রার্থীদের একাংশের দাবি ছিল,এই অভিযোগ যদি সত্যি হয়, সে ক্ষেত্রে ববিতার ‘অ্যাকাডেমিক স্কোর’ ৩৩-এর বদলে কমে ৩১ হবে।

আগামী ৬ জুনের মধ্যে ববিতাকে ১৫ লক্ষ টাকা হাই কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। আগামী বুধবারের মধ্যে তাঁকে ১১ লক্ষ টাকা দিতে হবে। তবে এত দিনে চাকরির জন্য যে বেতন পেয়েছেন ববিতা, সেই টাকা তাঁকে ফেরত দিতে হবে না। অঙ্কিতার চাকরি যাওয়ার পর তাঁর টাকা বিভিন্ন কিস্তিতে ববিতাকে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। সেই নির্দেশ মতো যে টাকা পেয়েছিলেন ববিতা, সেই টাকা ফেরত দিতে মঙ্গলবার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। ববিতাকে মোট ১৫ লক্ষ ৯২ হাজার ৮৪৩ টাকা ফেরত দিতে হবে।






 
 
 
 





