Saturday, August 23, 2025

আমার মাকে গালাগালি দেবে, আর আমি মাংস-ভাত খাওয়াব? বিস্ফোরক চিরঞ্জিৎ

Date:

Share post:

জয়িতা মৌলিক:
“সকালে যে আমার মাকে গালাগালি দিয়েছে, বিকেলে আমি তাকে মাংস ভাত খাওয়াব! এটা আমি কিছুতেই করব না।” নিজের সিনেমায় বিজেপি নেতা মিঠুন চক্রবর্তীকে (Mithun Chakraborty) নেওয়া নিয়ে তৃণমূল (TMC) সাংসদ তথা অভিনেতা দেব ওরফে দীপক অধিকারীর বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন চিরঞ্জিৎ। সম্প্রতি দেবের (Dev) প্রযোজনা সংস্থার ব্যানারে তৈরি ‘প্রজাপতি’ ছবিতে অভিনয় করেছেন মিঠুন। আর এই প্রসঙ্গেই দেবকে ধুয়ে দিয়েছেন তৃণমূল বিধায়ক চিরঞ্জিৎ (Chiranjit) ওরফে দীপক চক্রবর্তী।

আরও পড়ুন:ধর্মশালায় ঠান্ডা-ঠান্ডা, Cool-Cool শোভন-বৈশাখীর ‘জামাইষষ্ঠী’

মিঠুন চক্রবর্তীর সঙ্গে তো এককালে ভালো বন্ধুত্ব ছিল চিরঞ্জিতের! তাহলে এখন গোঁসা কেন?
চিরঞ্জিৎ বলেন, “পুরনো বন্ধুত্বে কোনও চির ধরেনি। এখনও ভালো বন্ধু”। তবে এখন বিষয়টা একেবারেই আলাদা। এখন মিঠুন এবং চিরঞ্জিত দুজনেই দুটো বিপরীত মেরুর রাজনৈতিক দলের নেতা।

তিনি যদি সিনেমা করেন তাহলে কখনোই মিঠুন চক্রবর্তীকে নেবেন না- সাফ জানালেন চিরঞ্জিৎ।
চিরঞ্জিতের মতে, মিঠুনকে কোনও সিনেমায় নেওয়া মানে, মিঠুনের মুখ দিয়ে দেড় লক্ষ পোস্টার পড়ছে। এই যে ‘প্রজাপতি’ করে ওর নাম বেড়ে গেল। তার মানে আমি ওকে আরও পপুলার হতে সাহায্য করছি। আর তার ফায়দা তো বিজেপি নেবে। সেই দল যে দল আমার নেত্রীকে দুবেলা গাল পাড়ে। “নরেন্দ্র মোদি কলকাতায় এসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে উদ্দেশ্য করে, “দিদি, ও দিদি” বলে কদর্য আক্রমণ করলেন, আর এই মিঠুন চক্রবর্তী সেই সময় মোদির পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন। আমি তাঁকে আমার ছবিতে নেব সেটা কখনোই হতে পারে না। আমি ঠিক এটাই বলেছি, দেবের জায়গায় থাকলে মিঠুনকে কখনোই ছবিতে নিতাম না”

পাল্টা চিরঞ্জিতের প্রশ্ন, “ওকে পাবলিসিটিটা আমি কেন দেব? বিজেপিরা বা অনুপম খের ছবি তৈরি করলে নিশ্চয়ই আমাকে নেবে না। দেবকে হিরো করবে না”।

এরপরই তোপ দেগে চিরঞ্জিৎ বলেন, “দেবের একটা কথা খুব গুরুত্বপূর্ণ। ও বলেছে, “সকালেই আমাদের পার্টিকে যা তা কথা বলছে, আর রাতে আমার বাড়ি এসে মাংস-ভাত খাচ্ছে”। আমি এটা কখনই করব না। সকালে আমার মাকে গালাগালি দিয়েছে, আর বিকেলে আমি তাকে মাংস ভাত খাওয়াব! যদি মিঠুন বিজেপি নেতা না হত, বা দেব তৃণমূল সাংসদ না হত- তাহলে এটা নিয়ে কোনও কথাই ছিল না।” এরপরেই তৃণমূল বিধায়ক স্পষ্ট জানান, “আমি ওকে (মিঠুনকে) সিনেমাতেই নেব না যতক্ষণ ও বিজেপির হয়ে কাজ করছে। যখন দুটো মানুষ সক্রিয়ভাবে বিরোধী রাজনীতি করছে তখন এটা হতে পারে না।”

এই বিষয়ে চিরঞ্জিতের স্পষ্ট মত, দুই ভাইও যদি বিপরীত দলের হয়ে ময়দানে খেলতে নামে তাহলে তারা কখনো একে অপরকে ছেড়ে কথা বলবে না। দুজনে দুজনের বিরুদ্ধে গোল দেবেই, আর এটাই নিয়ম। যতক্ষণ ময়দানে আছো, ততক্ষণ তুমি তোমার দলের হয়ে লড়বে। সেখানে উল্টোদিকে তোমার ভাই থাকলেও তোমাকে গোল করতে হবে। এ বিষয়ে চিরঞ্জিত চক্রবর্তী স্পষ্ট করে দেন, যদি দক্ষিণ ভারতের কোনও রাজনৈতিক দলের নেতা অভিনতা হন, তাহলে তাঁকে বাংলা সিনেমায় নেওয়া যেতে পারে। কারণ তিনি সরাসরি তৃণমূলের বিরোধী নন। কিন্তু যারা দুবেলা দলকে আক্রমণ করে, তৃণমূলের সক্রিয় সদস্য হিসেবে তাঁকে নিজের ছবিতে নেওয়া যায় না।

মিঠুন চক্রবর্তীর বারবার এই জার্সি বদলই কি তাঁর উপর চিরঞ্জিতের এত ক্ষুব্ধ হওয়ার কারণ?
দীপক চক্রবর্তীর মতে, “যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, মিঠুন চক্রবর্তীকে বিরাট জায়গা দিয়েছিলেন, তাঁকেই ছেড়ে চলে গিয়েছে মিঠুন। তাঁকে আমি কখনোই হাওয়া দেব না।” তবে তৃণমূল বিধায়কের মতে, বাধ্যবাধকতা থেকেই বিজেপিতে গিয়েছেন মিঠুন। পরোক্ষভাবে ‘বিজেপির ওয়াশিং মেশিন’ তত্ত্বের দিকেই আঙুল তুলেছেন চিরঞ্জিৎ।

 

spot_img

Related articles

প্রাপ্য চায় বাংলা, উপহার না: মোদিকে জবাব তৃণমূলের

বাংলার মানুষ উপহার চায় না, প্রাপ্য চায়। উপহার দিয়ে বাংলার মানুষকে অপমান করবেন না। বাংলায় বরাদ্দ নিয়ে শুক্রবার...

অনুপ্রবেশ ঠেকাতে ব্যর্থ শাহ, শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা মোদির: কটাক্ষ তৃণমূলের

অনুপ্রবেশ ইস্যুকে বার বার জাগিয়ে তুলে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার আদতে নিজেদের ভুল নিজেরাই চোখ আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়।...

রাজ্যে শুরু SIR প্রস্তুতি: একাধিক পদক্ষেপ নির্বাচন কমিশনের

গোটা দেশেই এসআইআর লাগু হবে ঘোষণা করে দিয়েছিলেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার (Gyanesh Kumar)। বিহারে ৬৫ হাজার...

আস্থা কোথায়? প্রধানমন্ত্রীর সভার দিন বুঝিয়ে দিলেন দিলীপ, কটাক্ষ তৃণমূলের

দৃশ্য এক, বিজেপির নক্ষত্রখচিত মঞ্চ। মালা, উত্তরীয়তে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে (Narendra Modi) বরণ করছেন একের পর এক বঙ্গবিজেপির...