আদালতের নির্দেশ, হিংসা-বিধ্বস্ত নূহতে থেমে গেল বুলডোজারের চাকা

ধর্মীয় মিছিলকে কেন্দ্র করে হিংসায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে হরিয়ানার নূহ জেলা। এরই পরপরই রাজ্যের জায়গায় জায়গায় বুলডোজার অভিযান শুরু করে ডবল ইঞ্জিনের হরিয়ানার খট্টর সরকার। এই উচ্ছেদ অভিযান এবার বনধ করার নির্দেশ দিল পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্ট। সোমবার এই নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

৩১ জুলাই ধর্মীয় মিছিলে অশান্তি ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে হরিয়ানা(Haryana)। নুহ সংঘর্ষস্থল হলেও হিংসার আগুন ছড়িয়ে পড়ে গুরুগ্রামেও। মৃত্যু হয় ছ’জনের। তারপরই দুই এলাকায় বুলডোজার দিয়ে উচ্ছেদ অভিযান শুরু করে প্রশাসন। রবিবার টানা চতুর্থ দিন “অবৈধ” নির্মাণের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে নূহ জেলা প্রশাসন একটি তিন তলা হোটেল বুলডোজার দিয়ে ভেঙে দেয়। অভিযোগ এই হোটেলের ছাদ থেকে পাথর ছোড়া হয়েছিল। শনিবার নূহ শহরে প্রায় দুই ডজন মেডিকেল স্টোর ও অন্যান্য দোকান গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় নূহের শহিদ হাসান খান মেওয়াতী সরকারী মেডিকেল কলেজ, নালহারে, বিশাল পুলিশ বাহিনী সঙ্গে নিয়ে অভিযান চালানো হয়। নুহ থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে তাউরু এলাকায় গত বৃহস্পতিবার রাতেই বুলডোজার গুঁড়িয়ে দেয় আড়াইশোরও বেশি ঝুপড়ি। সেগুলি ছিল ভিনরাজ‌্য থেকে কাজ করতে যাওয়া পরিযায়ী শ্রমিকদের। প্রশাসনের দাবি, যারা অশান্তি বাঁধিয়েছিল, তাদেরই বাড়ি ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, ঘর ভেঙেছে পরিযায়ীদেরই, যাঁদের মধ্যে একটা বড় অংশ বাংলার মানুষ। মুখ‌্যমন্ত্রী মনোহরলাল খট্টরের নির্দেশেই ওই বুলডোজার চালানো হয়।

সরকারের তরফে চালানো এই বুলডোজার অভিযান নিয়ে বিতর্ক চরম আকার নিলে বিচারপতি জিএস সান্ধাওয়ালিয়ার নেতৃত্বে একটি বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে মামলাটি গ্রহণ করে। এরপর সোমবার এই উচ্ছেদ অভিযানের উপর স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়। নূহর ডেপুটি কমিশনার ধীরেন্দ্র খাদগাতা বলেন, “আদালতের নির্দেশে আমরা উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ রেখেছি।” বিরোধীদের অভিযোগ, সরকারি জমি দখলমুক্ত করার নামে সংখ্যালঘুদের নিশানা করছে খট্টর সরকার। নূহ পুলিশ সুপার জানিয়েছেন যে সাম্প্রদায়িক হিংসার বিষয়ে মোট ৫৬ টি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে, যার ফলে এখনও পর্যন্ত ১৪৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।