১৪৭ দিন ধরে লাগাতার অশান্তির আগুনে দগ্ধ হচ্ছে উত্তর-পূর্বের রাজ্য মণিপুর। সম্প্রতি ২ পড়ুয়ার মৃত্যুতে তা আরও ভয়াবহ আকার নিয়েছে। এই ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভরত পড়ুয়াদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষে ইম্ফলে প্রায় ৫০ জন পড়ুয়া জখম হয়েছেন। এমন পরিস্থিতির মাঝেই বুধবার মণিপুরের পাহাড়ি এলাকাগুলিতে অফস্পার মেয়াদ ৬ মাস বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্র। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর কাছে অশান্ত মণিপুরের ‘অযোগ্য’ মুখ্যমন্ত্রী এন বিরেন সিংকে সরানোর দাবিতে তুললেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে(Mallikarjun Kharge)।

মণিপুরে সম্প্রতি ইন্টারনেট পরিষেবা চালু করেছে সরকার। এরপরই দুটি ছবি ভাইরাল হতে দেখা যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়। যেখানে দুই সশস্ত্র আততায়ীর সঙ্গে বসে রয়েছে দুই পড়ুয়া। অন্য একটি ছবিতে দেখা গিয়েছে, তাদের দেহ পড়ে রয়েছে। এনডিটিভি সূত্রে খবর, ওই দুই পড়ুয়াকে শেষ বার দেখা গিয়েছিল বিষ্ণুপুর জেলায়। অভিযোগ, ওই দুই পড়ুয়াকে অপহরণ করে খুন করা হয়েছে। দুই পড়ুয়ার বয়স ১৭ ও ২০ বছর। এরপরই নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে মণিপুর। ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে মণিপুরের পড়ুয়ারা। যা এদিন হিংসাত্মক রূপ নেয়। নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধে আহত হয়েছেন ৫০ জন। এদিকে মণিপুরের বর্তমান পরিস্থিতি বিচার করে এই রাজ্যে অফস্পার মেয়াদ ৬ মাস বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। মূলত মণিপুরের পার্বত্য অঞ্চলে সেনাবাহিনীর এই বিশেষ ক্ষমতা অফস্পা জারি থাকবে। রাজ্যের ১৯ টি থানা এলাকা বাদ দিয়ে গোটা মণিপুরে লাগু করা হয়েছে আফস্পা। আগামী ১ অক্টোবর থেকে এটি কার্যকর হবে। মণিপুরের পাশাপাশি অরুণাচল প্রদেশ এবং নাগাল্যান্ডের বেশ কিছু এলাকায় ছমাসের জন্য বাড়ানো হয়েছে আফস্পা।
পাশাপাশি মণিপুরে লাগাতার হিংসার ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে মণিপুরের অযোগ্য মুখ্যমন্ত্রী এন বিরেন সিংকে বরখাস্ত করার দাবি জানালেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে। এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লিখলেন, “১৪৭ দিন ধরে মণিপুরের মানুষ ভুগছেন কিন্তু প্রধানমন্ত্রী একবারও সেরাজ্যে যাওয়ার সময় পেলেন না। মণিপুরের পরিস্থিতি কতটা ভয়াবহ, সদ্য প্রকাশ্যে আসে একটা ছবি দেখেই সেটা বোঝা যাচ্ছে। অগ্নিগর্ভ রাজ্যটিতে মহিলা ও শিশুদের প্রতি নির্যাতনের ঘটনাকেও হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছে।” খাড়গে আরও বলেন, “মণিপুরের মতো সুন্দর রাজ্য আজ যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। তার জন্য দায়ী বিজেপি। প্রধানমন্ত্রীর উচিত এই পরিস্থিতি সামাল দিতে মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রীকে বরখাস্ত করা। আগামী দিনে মণিপুরে অশান্তি এড়ানোর জন্য এটাই প্রথম পদক্ষেপ হওয়া উচিত।”
