মুখে হারমোনিকা হাতে গিটার, ১৩ বাদ্যযন্ত্রে অনবদ্য ‘ওয়ান ম্যান ব্যান্ড’ গ্ল্যাডসন পিটার

বিষণ্ণতা, অ*বসাদ, শা*রীরিক সম*স্যা কাটিয়ে উঠে আজ তিনি এই প্রজন্মের সঙ্গীত শিল্পীদের কাছে অনুপ্রেরণা।

গানের প্রতি ভালবাসা আছে এমন তরুণ শিল্পীর সংখ্যা দেশে কম নয়। কিন্তু মুখে হারমোনিকা হাতে গিটার, পিঠে ড্রামস আর পায়ের সঙ্গে ড্রামস্টিক সুতা দিয়ে বেঁধে প্রফেশনাল ব্যান্ডের মতো গান গাইতে কাউকে দেখেছেন? তাহলে পরিচয় করে নিন দেশের ‘ওয়ান ম্যান ব্যান্ড’ (One Man Band)গ্ল্যাডসন পিটারের (Gladson Samuel Peter)সঙ্গে। বিরল রোগে আক্রান্ত এই যুবক যে বিরল প্রতিভার অধিকারী তা বুঝি আর বলার অপেক্ষা রাখে না। ফুসফুসের প্রায় ৪০ শতাংশ বিকল কিন্তু একাই বাজাতে পারেন ৪৫ টি বাদ্যযন্ত্র! মায়ানগরীতে তাঁকে সকলেই চেনেন ‘ওয়ান ম্যান ব্যান্ড’ নামে। বিষণ্ণতা, অবসাদ, শারীরিক সমস্যা কাটিয়ে উঠে আজ তিনি এই প্রজন্মের সঙ্গীত শিল্পীদের কাছে অনুপ্রেরণা।

গ্ল্যাডসন পিটার তিন বছর বয়স থেকেই মিউজিকের প্রতি অনুরক্ত। কলেজে পড়ার সময় নিজের শারীরিক সমস্যার কথা জানতে পারেন। চিকিৎসক বলেন মিউজিক্যাল ইন্সট্রুমেন্ট বাজানো বন্ধ করতে হবে। কিন্তু সুরের প্রতি ভালবাসা ততদিনে প্যাশনে পরিণত হয়েছে। জেদ চেপে যায় মনে, তাঁর বিশ্বাস ছিল খারাপ সময় পেরিয়ে ভাল কিছু তাঁর জন্য ঠিক অপেক্ষা করছে। তাই আত্মহননের অবসাদ কাটিয়ে জীবনের সুর বাঁধতে শুরু করেন। কোনদিনই কোনও মিউজিক্যাল ব্যান্ডের সদস্য হতে চাননি। কারণ নিজেই হতে চেয়েছিলেন একটা আস্ত ব্যান্ড। বিটাউন ছাড়িয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ১৩টি বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে নিজের কণ্ঠের জাদুতে মুগ্ধ করেছেন শ্রোতা আর দর্শকদের। যন্ত্রশিল্পী হয়ে ওঠার প্রেরণাও বাড়ির থেকেই পেয়েছিলেন। গিটার আর কীবোর্ডে হাতে খড়ি বাবার কাছেই। বয়স যখন কুড়ির চৌকাঠে তখন প্লিউরাল এফিউসন (Pleural Effusion) ধরা পড়ে। একবছর শয্যাশায়ী অবস্থায় বারবার নিজেকে শেষ করে দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বিধাতা হয়তো তাঁর জন্য অন্য কোনও চিত্রনাট্য লিখে রেখেছিলেন। অবসাদের মেঘ কাটিয়ে সুরের প্রাণশক্তিতেই ফের যেন বেঁচে ওঠেন তিনি। তখন থেকেই হয়ে উঠলেন ‘ওয়ান ম্যান ব্যান্ড’ । পিটারের কথায় ২০০০-এর বেশি অনুষ্ঠান করেছেন তিনি। দেশের পাশাপাশি চিন, সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতেও মানুষকে নিজের প্রতিভা চিনিয়েছেন শিল্পী। ইন্ডিয়া’স গট ট্যালেন্ট- এ অংশ নেন, গিয়েছিলেন কপিল শর্মা্র শোতেও। একসঙ্গে বেশ ড্রাম, স্নেয়ার ড্রাম, হিট হ্যাট সিম্বল, অ্যাকোয়াস্টিক গিটার, হারমোনিকা, মেলোডিকা, স্লাইড হুইশেল, ট্যাম্বরিন নিয়ে অনায়াসে বাজাতে পারেন।