রেখা পাত্র হারতেই দিনভর সবুজ আবিরে উল্লাস সন্দেশখালির মহিলাদের

নারীনির্যাতন নিয়ে সন্দেশখালিতে যে মহিলারা রেখা পাত্রের সঙ্গে আন্দোলনে নেমেছিলেন, বসিরহাটে তৃণমূলের বিপুল জয়ের পর তাঁরাই আনন্দে মেতে উঠলেন। খেললেন সবুজ আবিরও। সকলেই চাইছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত এখন সন্দেশখালির উন্নয়নে শামিল হতে।

 

লোকসভা নির্বাচনের কয়েক মাস আগে থেকেই সন্দেশখালি ইস্যুকে সামনে রেখে আন্দোলন গড়ে তুলেছিল বিজেপি। সন্দেশখালিকে জাতীয় ইস্যুকে করতে যা যা করার সবই করেছিল পদ্ম শিবির। নরেন্দ্র মোদি থেকে অমিত শাহ, বিজেপির তাবড় নেতারা প্রচারে সন্দেশখালি ইস্যুকে সবচেয়ে বড় করে দেখিয়েছিল। শুধু তাই নয়, সন্দেশখালির “প্রতিবাদী” মুখ রেখা পাত্রকে লোকসভায় প্রার্থী করে চমক দিয়েছিল গেরুয়া শিবির। খোদ প্রধানমন্ত্রী রেখাকে ফোন করে আশীর্বাদ করেছিলেন। কিন্তু নিট ফল জিরো।

নারী নির্যাতন নিয়ে প্রথম অভিযোগ এনেছিলেন বিজেপির প্রার্থী রেখা পাত্র। অভিযোগ ওঠে, শাহজাহানের বাহিনী রাতে ডেকে নিয়ে গিয়ে মহিলাদের যৌননিগ্রহ করতেন। এরপর রেখা সন্দেশখালি থানায় গণধর্ষণের অভিযোগও জানান। কিন্তু স্টিং অপারেশনের ভিডিও সামনে আসতেই, ভুল ভাঙে বাসিন্দাদের। তাঁরা বুঝে যান, গোটাটাই বিজেপির ‘সাজানো চিত্রনাট্য’। ভুয়ো অভিযোগ জানানোর জন্য বিপুল পরিমাণ টাকা দেওয়া হয়েছে মহিলাদের। এরপরই রণে ভঙ্গ দেন স্থানীয় নারীদেরই একটা বড় অংশ। তাঁরা বুঝে যান, তাঁদের ভুল পথে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ভোটের একমাস আগে থেকেই শাসক দলের দিকে ঝুঁকতে শুরু করেন তাঁরা। রেখা পাত্রের থেকে দূরত্ব বৃদ্ধি শুরু হয় তাঁদের। ভেঙে যায় আন্দোলন।

অন্যদিকে, তৃণমূলের সভা-সমাবেশে মহিলাদের সংখ্যা ক্রমেই বাড়তে থাকে। স্বভাবতই স্বস্তি পায় শাসক শিবির।মঙ্গলবার ভোটের ফল বেরনোর পরই পাত্রপাড়ায় মহিলারা আবির খেলেন। তৃণমূল নেতা-কর্মীদের সঙ্গে মিছিলেও শামিল হয়েছেন তাঁরা। এমনকী, রেখার বাড়ির এলাকাতেও সবুজ আবিরে মেতে উঠেছেন তাঁরা। রেখার বাড়ির সামনে দিয়ে দুপুর থেকেই গিয়েছে তৃণমূলের মিছিল। সন্দেশখালির ২ ব্লকের সমস্ত গ্রামেই তৃণমূলের জয়ের পর আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী মহিলাদের উৎসাহ দেখে শাসক দলের ব্যাখ্যা, তাঁদের ভুল বোঝানো হয়েছিল। জেলিয়াখালি, তুষখালি, বেড়মজুর ১ ও ২-তে আন্দোলনে অংশ নেওয়া মহিলা বাহিনী তৃণমূলের জয়ে আনন্দে মেতেছেন দুপুর থেকেই।

এদিকে হালে পানি না পেয়ে বিজেপি অভিযোগ তুলেছে, ভোটের ফল বেরতেই সন্দেশখালির আজগরা, রামপুর ভাটিদহসহ বিভিন্ন এলাকায় সন্ত্রাস শুরু করেছে তৃণমূল। মারধর করে তাদের তিন-চারজন কর্মীর মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়েছে। শুরু হয়েছে বিভিন্ন গ্রামে হুমকি দেওয়া। ভয়ে অনেকেই গ্রাম ছাড়তে শুরু করেছেন। পুলিসে জানিয়েও কোও লাভ হচ্ছে না। যদিও অভিযোগ উড়িয়ে তৃণমূলের দাবি, ভোটে হেরে গিয়েই বিজেপি এই সমস্ত মিথ্যা অভিযোগ আনছে।

 

 

 

Previous articleদক্ষিণবঙ্গে বাড়ছে ভ্যাপসা গরম, কোথায় আটকে বর্ষা
Next articleপাহাড়ে পথ দুর্ঘটনা! খাদে গাড়ি উল্টে মৃত ১০ মাসের শিশুসহ দুই